1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দাদাব শিবিরে খরাক্লিষ্ট মানুষের আহাজারি

২২ জুলাই ২০১১

হর্ন অফ আফ্রিকায় খরা বিপর্যয়ের ভয়াবহতার ছবিটা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে৷ সোমালিয়া, ইথিওপিয়া আর কেনিয়ার খরাপীড়িত অঞ্চল থেকে তিন লক্ষ আশি হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম উদ্বাস্তু শিবির দাদাবে৷

https://p.dw.com/p/121MY
ARCHIV - Somalische Flüchtlinge am 08.07.2011 im Camp Dagahaley im kenianischen Dadaab in Afrika. Sie werden vom Welternährungsprogramm (WFP) mit Lebensmitteln und vom UNHCR mit Gegenständen des täglichen Bedarfs versorgt. Die Vereinten Nationen haben die kenianische Regierung dringend dazu aufgerufen, ein weiteres Flüchtlingscamp für die von der Dürre am Horn von Afrika betroffenen Menschen zu eröffnen. Foto: WFP/Rose Ogola (zu dpa0153 vom 12.07.2011 - ACHTUNG: Nur zur redaktionellen Verwendung bei vollständiger Quelle «WFP/Rose Ogola») +++(c) dpa - Bildfunk+++ pixel
ছবি: Picture-Alliance/dpa

দাদাব পর্যন্ত যারা এসে পৌঁছতে পেরেছে, তারা আপাতত বেঁচে গেল৷ এখানকার রেজিস্ট্রেশনের জায়গায় প্রতিদিন প্রায় হাজার দুয়েক শরণার্থী আসছে সোমালিয়া থেকে৷ বহু মানুষ দিনের পর দিন পায়ে হেঁটে শেষ শক্তিটুকু সম্বল করে কেনিয়ার সীমান্ত দিয়ে দাদাব পর্যন্ত আসতে পেরেছে৷

ফাতিমা নুর এই শিবিরেই আশ্রয় পেয়েছে৷ তিন শিশু সন্তান জাপটে ধরে আছে তাকে৷ নিজের দুর্ভাগ্যের কথা জানালো সে: ‘‘বাড়িতে আমাদের গবাদি পশু ছিল৷ একটুখানি জমিও ছিল৷ সব উট, গরু আর ছাগল মরে গেছে৷ জমি শুকিয়ে একেবারে কাঠ৷ বাজারেও কিছু কেনার উপায় নেই৷ খাবারদাবার তো একেবারে অগ্নিমূল্য''

দাদাব শিবিরে ফাতিমা পেয়েছে ফুড কার্ড৷ অনেক দিন পর বাচ্চাদের মুখে তুলে দিতে পারছে ঠিকঠাক খাবার৷

হর্ন অফ আফ্রিকা অঞ্চল অনেকদিন ধরেই ভয়াবহতম খরার হানায় ক্লিষ্ট৷ একের পর এক বর্ষার মরশুম বৃষ্টিহীন৷ গবাদি পশু মরে গেছে৷ ক্ষেতে আর কিছুই জন্মাচ্ছেনা৷ বিশেষ করে সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চল এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবচেয়ে বেশি৷ বহু দশক ধরে এখানকার মানুষ যুদ্ধ আর সংঘর্ষের মুখে ক্লিষ্ট হয়েছে৷ এখানে জঙ্গি ইসলামি গ্রুপ আল-শাবাব তাদের নিয়ন্ত্রণ বিস্তার করে রেখেছে৷ তাদের সন্ত্রাসের শিকার সাধারণ মানুষ৷ অল্প কিছুকাল আগেও তারা এই অঞ্চলে কোন ত্রাণসামগ্রী ঢুকতে দেয় নি৷

epa02786740 (20/33) A young Somali boy peeks through a sheet covering a makeshift shelter in the area that is not officially cleared for settlement on the outskirts of the Dagahaley camp, one of three camps that make up sprawling Dadaab refugee camp in Dadaab, northeastern Kenya, 15 June 2011. The Dadaab refugee camp, the largest refugee complex in the world set up at the start of Somalia's civil war in 1991 with a capacity to accommodate 90,000 refugees, is now overpopulated with ever increasing influx of new arrivals from Somalia who fled their embattled homeland to seek refuge in neighboring Kenya. World Refugee Day is celebrated on 20 June each year. EPA/DAI KUROKAWA ***PLEASE REFER TO THE ADVISORY NOTICE (epa02786721) FOR COMPLETE FEATURE TEXT***
ছবি: EPA/Dai Kurokawa/picture alliance/dpa

ফাতিমা খলিল সদ্য এসেছে দাদাব শিবিরে৷ তার কাছে জঙ্গি ইসলামি গ্রুপ আল-শাবাব আর খরা একই রকম নিষ্ঠুর৷ আল-শাবাব নিরপরাধ মানুষদের হত্যা করেছে৷ এবার মানুষ মারছে খরা৷ আর তাই পালিয়ে এসেছে তারা কেনিয়ায়, জানাল ফাতিমা৷

ইতিমধ্যে এই মিলিশিয়া বাহিনী অবশ্য নিজেরাই সাহায্য চেয়েছে৷ এমনকি ত্রাণসামগ্রী বন্টনে সাহায্য দিতে চেয়েছে৷ কিন্তু সাহায্য সংস্থাগুলো তাদের কথায় বিশ্বাস করতে ভয় পায়৷ ফলে দক্ষিণ সোমালিয়ার মানুষ সাহায্য পাচ্ছেনা৷ জার্মান সাহায্যকর্মী ইয়েন্স ওপারমান মনে করেন, এই খরা বিপর্যয় এমন এক মাত্রা নিচ্ছে যে এটাকে সেই আশির দশকের ইথিওপিয়ার দুর্ভিক্ষাবস্থার সাথে তুলনা করা যেতে পারে৷ মানুষের অবস্থাটা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে মানবিক সংস্থার কর্মীদের জন্য তা সামনে থেকে দেখা দুরূহ হয়ে উঠেছে৷

যারা দাবাবে এসে পৌছচ্ছে ভয়াবহ সব কথা শোনা যাচ্ছে তাদের মুখ থেকে৷ কেউ কেউ নিজের নিজের জীবন বাঁচাতে শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া আপনজনদের ফেলে আসতে বাধ্য হয়েছে৷ মায়েরা বলছেন, যাত্রাপথে তাদের সন্তান ক্ষুধাতেষ্টায় প্রাণ হারিয়েছে৷

জাতিসংঘ শরণার্থী সাহায্য সংস্থার খাদ্য উপদেষ্টা অ্যালিসন ওমান দাদাব শিবিরের চিকিৎসা কেন্দ্রে কাজ করেন৷ প্রায় সারা দিন রাত কাজ করতে হয় তাঁকে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও ত্রাণকর্মী ও ডাক্তারদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা সবার চিকিৎসা করা৷ দাদাব শিবির ক্ষুধার্ত উদ্বাস্তু মানুষদের ভিড়ে ঠাসা৷ এমুহূর্তে সবার মুখে খাবার দেয়া সম্ভব হচ্ছে৷ কিন্তু আর কয়েক সপ্তাহ পর খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে বলে আশঙ্কা করছে শরণার্থী সাহায্য সংস্থা৷

প্রতিবেদন: আন্টিয়ে ডিকহান্স/আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন