দলের প্রতি অবহেলা দেখাচ্ছেন ম্যার্কেল, ক্ষোভ চার সিডিইউ নেতার
১০ জানুয়ারি ২০১০ফ্রাঙ্কফুর্টের নামজাদা সংবাদপত্র ফ্রাঙ্কফুর্টার আলগেমাইনে জোনটাগসাইটুং-এর রোববারের সংস্করণে সম্পাদকীয় স্তম্ভে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে৷ যে প্রতিবেদনে জার্মানির প্রথম মহিলা চ্যান্সেলর তথা খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল বা সিডিইউ-র শীর্ষনেত্রী আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খোলাখুলি সমালোচনা করেছেন তাঁর দলের চারজন শীর্ষ নেতা৷ থুরিঙ্গা, হেসে, ব্রান্ডেনবুর্গ এবং স্যাক্সনি এই চারটি জার্মান প্রদেশের সংসদীয় চার নেতার একই বক্তব্য৷ বক্তব্য, ম্যার্কেল নাকি শেষবারের সংসদীয় নির্বাচন ‘ভাগ্যবশত' জিতেছেন৷ আর তার আগে থেকেই দলের রক্ষণশীল ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুন্ন করছেন তিনি৷ আরও অভিযোগ, দলের প্রতি এবং দলীয় প্রয়োজনীয়তার প্রতি অবহেলা দেখাচ্ছেন চ্যান্সেলর৷ এক ধরণের ‘রাষ্ট্রপতিসুলভ' গা-ছাড়া ভঙ্গি প্রদর্শন করছেন তিনি৷ বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের প্রচার পর্বের সময় থেকেই চ্যান্সেলর ঠিক যেন সিডিইউ-র দলীয় প্রধান হিসেবে নয়, আচরণ করেছেন জার্মানির গ্র্যান্ড কোয়ালিশন বা মহাজোটের চ্যান্সেলর হিসেবে৷ যা কিনা সিডিইউ-র রক্ষণশীল ভাবমূর্তির পরিপন্থী৷
থুরিঙ্গা প্রদেশে ক্ষমতাসীন সিডিইউ-র সংসদীয় দলনেতা মাইক মোহরিং বেশ সোচ্চারে তাঁর দলের শীর্ষনেত্রী চ্যান্সেলরের সমালোচনায় বলেছেন, আমরা সংবাদপত্রে যে চিঠিটি লিখেছি, তাতে প্রথম এবং প্রধান বক্তব্য হচ্ছে দলের ভাবমূর্তি স্পষ্ট করে মেনে চলতে হবে৷ যার প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে আমাদের খ্রিষ্টীয় সামাজিক শিকড়কে মর্যাদা দেওয়া৷ পাশাপাশি আমাদের উদারপন্থী কিন্তু রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গীকে ভুলে গেলে চলবে না৷
মোহরিং সহ সিডিইউ-র এই চার নেতার অভিযোগের জবাবে ম্যার্কেল নিজে এখনও পর্যন্ত কোন কথা না বললেও তাঁর দল সিডিইউ-র ডেপুটি চেয়ারপার্সন অ্যানেটে স্কাভান একটি দলীয় স্তরের জবাব দিয়েছেন৷ জার্মান টিভি চ্যানেল জেডডেএফ-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে স্কাভান বলেন, আমাদের দল জনসাধারণের দল৷ সেই দল ততক্ষণ জনপ্রিয় যতদিন চ্যান্সেলর তাঁর কাজে সাফল্য পাচ্ছেন৷ শুধু বিগত বছরগুলির সাফল্যই নয়, বর্তমান সমস্যাগুলির সমাধানে সঠিক নীতি নির্দ্ধারণটাও জরুরি৷ যে বা যারা সে বিষয়ে দায়িত্বশীল, তাঁদের নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে হবে প্রয়োজনীয়ভাবে৷
বস্তুত, গত নির্বাচনের পর চ্যান্সেলর ম্যার্কেল তাঁর পূর্বতন সামাজিক গণতন্ত্রী জোটসঙ্গীদের ত্যাগ করে মুক্ত গণতন্ত্রী বা এফডিপি-র সঙ্গে জোট সরকার গড়ে তুলেছেন৷ তারপর থেকেই সরকার এবং প্রশাসনে নীতিগত কিছু পরিবর্তন তাঁর নিজের দলের কিছু নেতাকে ক্ষিপ্ত করে তুলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
প্রতিবেদন- সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা - হোসাইন আব্দুল হাই