দলে দলে নাগর্নো-কারাবাখ ছাড়ছেন আর্মেনীয়রা

আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধ শুরুর পর শনিবার থেকে শত শত জাতিগত আর্মেনীয় নাগর্নো-কারাবাখ ত্যাগ করতে শুরু করেন৷ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ‘গণহারে’ নাগর্নো-কারাবাখ ত্যাগ করছেন সেখানকার আর্মেনীয়রা৷

নাগর্নো-কারাবাখের এই বাসিন্দাদের ভয়, তাদের উপর ‘নির্যাতন এবং জাতিগত নিধন’ চালাতে পারে আজারবাইজান৷ রাজনৈতিক নেতারা বলছেন, এই অঞ্চলটির এক লাখ ২০ হাজার বাসিন্দা আজারবাইজানের অংশ হয়ে থাকতে চায় না৷

এভাবেই গাড়িতে করে নাগর্নো-কারাবাখ ত্যাগ করছেন আর্মেনীয় আদিবাসীরা৷ আর্মেনিয়ার সরকার জানায়, রোবার রাত দশটা পর্যন্ত এক হাজার ৫০ জন শরণার্থী আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছেন৷

নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এই আর্মেনীয় গোষ্ঠী গত মঙ্গলবার সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এলাকা ছাড়তে শুরু করে৷ নিরাপত্তার বিষয়ে তারা এতোটাই উদ্বিগ্ন যে, পরিবার-পরিজন নিয়ে রাতের মধ্যেই নাগার্নো-কারাবাখ ত্যাগ করতে শুরু করে৷

নাগর্নো-কারাবাখ থেকে পালিয়ে আসা বাসিন্দারা এভেবেই চেকপোস্ট অতিক্রম করছেন৷ বিভিন্ন চেকপোস্টে নিরাপত্তারক্ষীদেরও দেখা গেছে৷ নাগার্নো-কারাবাখের আর্মেনিয়ার নেতারা জানিয়েছেন, যারা এলাকা ছেড়ে যেতে চান, তাদের আশ্রয় দেবে আর্মেনিয়া সরকার৷

নিজের এলাকা ছেড়ে আর্মেনিয়ায় শরণার্থী হয়ে প্রবেশের চেষ্টায় শত শত জাতিগত আর্মেনীয়৷ আর্মেনিয়ার সীমান্তে অবস্থিত কর্নিদজোর গ্রামের একটি চেকপোস্টে দলবেঁধে এভাবেই হাজির হন শরণার্থীরা৷

পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সীমান্তে উপস্থিত আন্তর্জাতিক সংগঠনের পর্যবেক্ষকেরা৷ ছবিতে সীমান্তে অবস্থিত কর্নিদজোর গ্রামে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের দেখা যাচ্ছে৷ আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটার সদস্যদেরও শরণার্থীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে দেখা গেছে৷

আজারবাইজানের সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে নাগর্নো-কারাবাখের ‘বিচ্ছিন্নতবাদী সংগঠনের’ অনেকে নিহত হয়েছেন৷ নিহতের এক কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন স্থানীয়রা৷

গত মঙ্গলবার আজারবাইজান নাগর্নো-কারাবাখে সামরিক অভিযান শুরু করে৷ একদিনের মধ্যে তারা এলাকার দখল নেয়৷ বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ করে৷আর্মেনিয়ার সরকারি সূত্র জানায়, আজারবাইজানের আক্রমণের ফলে দুইশ জন মারা গেছেন, চারশ জন আহত হয়েছেন৷ আজারবাইজান জানিয়েছে, আহতদের আর্মেনিয়াতে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা দেয়া হবে না৷

প্রায় তিন দশক ধরে চলমান আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার বিরোধের মূলে রয়েছে নাগর্নো-কারাবাখ অঞ্চল৷ সম্প্রতি এই অঞ্চলে সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে৷ নাগর্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের অংশ৷ তবে জাতিগতভাবে আর্মেনিয়ান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাসিন্দারাই তিন দশক ধরে অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে৷