1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘দমনের রাজনীতি করে কেউ টিকে থাকতে পারেনি’

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

বাংলাদেশে দমনের রাজনীতি কবে থেকে শুরু বা কোন সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে? এ নিয়ে বিতর্ক আছে৷ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম মনে করেন, সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছেন আওয়ামী লীগের কর্মীরাই৷

https://p.dw.com/p/3VNoL
ছবি: Reuters/M. Ponir Hossain

ডয়চে ভেলে : ডাকসু ভিপি নুর তো প্রায়ই মার খাচ্ছে? কেন বারবার তার উপর হামলা?

মোহাম্মদ নাসিম: সে তো ডাকসুর মতো একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত ভিপি৷ এই হামলা খুবই দুঃখজনক৷ আজকেও দেখলাম তার উপর যারা হামলা করেছে তাদের দুইজন গ্রেপ্তার হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনের মধ্যে এত বেশি অছাত্র, এত বেশি অনুপ্রবেশকারী, যে কারণে প্রায়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে৷ এটা খুবই দুঃখজনক৷ এখানে আমার মতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার৷ যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে৷

বাংলাদেশে দমন পীড়নের রাজনীতি কবে থেকে শুরু?

সত্যি কথা বলতে গেলে বলতে হবে, এটা জিয়াউর রহমানের সময় শুরু হয়েছে৷ জিয়াউর রহমানের সময় সামরিক আইন জারি করে বিরাজনীতিকরণের কাজটা উনিই তো করে গেছেন৷ ওই সময় সামরিক আইনের ফলে সন্ত্রাস, ছাত্রদের দিয়ে গুণ্ডামি করানো শুরু হয়৷ যা এরশাদের সময়েও অব্যাহত ছিল৷

এরশাদ শাসনামলে এই ধরনের ঘটনা কেমন ছিল?

সব আমলেই এটা বেশি ছিল৷ এটার ভুক্তভোগী আমরা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা৷ তখন যে পরিমাণ দমন পীড়ন হয়েছে সেটা কল্পনা করা যায় না৷ রাজনীতিকদের দমন করার জন্য এরশাদ-খালেদা জিয়া সব ধরনের পদক্ষেপই নিয়েছেন৷ বলতে গেলে এখনো সেটার ছিটেফোঁটা রয়ে গেছে৷

বর্তমান সরকারের সময় দমন পীড়ন বেড়ে গেছে বলে বলা হচ্ছে?

মোহাম্মদ নাসিম

এখন কিন্তু এমন ঘটনা ঘটলে সেটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ যে ঘটনাগুলো ঘটে সেটা অনাকাঙ্খিত৷ সরকার যখনই জানতে পারে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ অনেকে গ্রেপ্তার হচ্ছে, অনেককে বহিষ্কার করা হচ্ছে৷ আমাদের সরকারই কোনো ঘটনা ঘটলে দলীয় চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে৷

বিরোধী মতাদর্শের মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন?

এটা ঠিক না৷ বরং আমরা বেশি নির্যাতিত হয়েছি৷ আমাদের নেত্রী কারারুদ্ধ হয়েছেন৷ খালেদা জিয়ার সময় নির্যাতনের সকল মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল৷ অনেক নেতা, এমপি খুন হয়েছেন৷ প্রত্যেক নেতাই নির্যাতিত হয়েছেন৷ আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাখা হতো৷ রাজনৈতিকভাবে কাউকে দমন করছি, এটা কেউ বলতে পারবে না৷

আপনার দৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি দমনের রাজনীতি হয়েছে কোন আমলে?

বলতে হলে, সবচেয়ে বেশি দমনের রাজনীতি হয়েছে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলে৷ এরশাদের আমলে হয়েছে, কিন্তু সবচেয়ে বেশি হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে৷ তখন তো আমাদের নেত্রীসহ সব নেতাকে মারার জন্য গ্রেনেড হামলা হয়েছে৷ তখন তো আওয়ামী লীগের কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি৷

দমনের রাজনীতির শেষ পরিণতি কি?

দমনের রাজনীতি করে কেউ টিকে থাকতে পারেনি৷ এখন গণতন্ত্র আছে, সংসদ আছে৷ কথা বলার অধিকার পরিপূর্ণভাবে আছে৷ মিডিয়ার স্বাধীনতা আছে৷ এখন ইচ্ছেমতো লেখা যায়৷ আমরা প্রত্যেকটা ঘটনার নিন্দা জানাই৷ পাশাপাশি ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে৷

কেউই তো নিপীড়ন করে টিকে থাকতে পারেনি৷ তারপরও কেন এই নিপীড়ন?

ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই ক্ষমতাকে ব্যবহার করতে চায়৷ তারা তো প্রশ্রয় পাচ্ছে না৷ দেখেছেন, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ ক্ষমতাকে ব্যবহার করে বাড়াবাড়ি অনেকেই করতে চায়৷ এটা তো অসম্ভব কিছু না৷ এখনে অনেক বেশি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ কি?

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অব্যাহত রাখতে হবে৷ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা যত বেশি শক্তিশালী হবে ততই উত্তরণ ঘটবে৷ অন্য দেশেও এটা হয়৷ এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে সবসময়ই পদক্ষেপ নিতে হবে৷ আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি৷

বর্তমান সরকারের সময়ে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, তার সবগুলোতেই কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

সবগুলোতেই নেওয়া হয়েছে৷ বুয়েটের ঘটনা দেখেন৷ নুরের উপর হামলার ঘটনা দেখেন৷ বিলম্ব হতে পারে কিন্তু সব ঘটনাতেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷

এত ব্যবস্থা নেওয়ার পর কেন ছাত্রনেতাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?

এটা আমাদের জন্যও দুশ্চিন্তার বিষয়৷ এত ব্যবস্থা নেওয়ার পরও কেন হচ্ছে? তবে উপর পর্যায়ে এখন আর নেই, নিচের দিকে হয়ত আছে৷ আমার মনে হয় ধীরে ধীরে এটা কমে যাবে৷ যারা এটা করছে তারা ছাত্রলীগের নামধারী৷ তারা ছাত্রলীগ করে কিনা সন্দেহ আছে৷

আরো বেশি মনিটরিং দরকার কি-না?

মনিটরিং না হলে ব্যবস্থা নিচ্ছি কিভাবে৷ সরকার প্রধানের এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা আছে৷ আশা করি কমে যাবে৷ না কমলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য