থমথমে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত
সারি সারি ট্রাক দাঁড়িয়ে, বন্ধ রেল, বাসও যাচ্ছে না। থমথমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ছবি ডয়চে ভেলের ক্য়ামেরায়।
চিন্তিত যাত্রীরা
ভারতের দিকে পেট্রাপোল সীমান্তে এসে পৌঁছেছেন এই যাত্রীরা। পায়ে হেঁটে সীমান্ত পার করে তারা বাংলাদেশে ঢুকবেন। ভারত থেকে কোনো বাস এখন সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ঢুকছে না। বাংলাদেশ সীমান্তে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করার কথা ভেবেছেন এই যাত্রীরা।
বাড়ছে উদ্বেগ
সীমান্ত পার করে ভারতে আসছেন এই ব্য়ক্তিরা। বাংলাদেশে তারা কাজে গেছিলেন। কার্ফিউ শুরু হওয়ার পর একটি গাড়ি ভাড়া করে তারা সীমান্তে এসে পৌঁছান। দুই দিন আগেই তাদের ভারতে আসার কথা ছিল। বস্তুত, ভারতীয় এবং নেপালি ছাত্রদের সীমান্ত পার করানোর জন্য় শনিবার সারা রাত সীমান্ত খোলা রেখে ছিল বিএসএফ। একদল ছাত্রকে ভোরবেলা সীমান্ত পার করানো হয়।
চলছে না বাস
দু’দেশের পর্যটকেরা বিপাকে পড়েছেন। বাড়ি ফেরা নিয়ে বেড়েছে উদ্বেগ। সীমান্ত পার করে বাস চলাচল বন্ধ। সীমান্তে দাঁড়িয়ে তেমনই একটি বাস। রবিবার সীমান্তে বিটিং রিট্রিট বন্ধ রাখা হয়। সোমবারও তা বন্ধ থাকতে পারে।
খালি পেট্রাপোল বাজার
পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক সীমান্তে এই বাজার গমগম করে। বাংলাদেশে আন্দোলন এবং তার জেরে কার্ফিউ শুরু হওয়ার পর এই বাজারও থমথম করছে। বেশি মানুষ পারাপার করছেন না, তা-ই বাজারেও লোক নেই।
বন্ধ ট্রেন পরিষেবা
বন্ধ রয়েছে বন্ধন, মৈত্রী এবং মিতালি এক্সপ্রেস।আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেস। রেলট্র্যাক বন্ধ থাকার কারণে লাল কাপড় নিশান হিসেবে বেঁধে রাখা হয়েছে।
অনলাইন চালান বন্ধ
অনলাইনে চালান বন্ধ। পণ্যবোঝাই গাড়ি পেট্রাপোল সীমান্তে দাঁড়িয়ে। ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যে। ভারত থেকে বহু জিনিস বাংলাদেশে যায়। সেই ট্রাকগুলি সীমান্তে দাঁড়িয়ে। কারণ সীমান্ত পার করার চালান মিলছে না।
বন্ধ রপ্তানি
শনিবার থেকে সমস্ত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে গেছে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে।
পচছে মাছ, সবজি
পেট্রাপোলের ব্য়বসায়ী কার্তিক চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''সাড়ে আটশ থেকে নয়শ ট্রাক সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে।'' এই ট্রাকগুলির ভিতর ওড়িশার মাছ আছে, সবজি আছে। এছাড়াও আছে ওষুধ। কাঁচা সবজি এবং মাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
বাংলাদেশ সীমান্তেও দাঁড়িয়ে ট্রাক
বাংলাদেশ সীমান্তের দিকেও একই ছবি। সেখানেও চালান মিলছে না বলে দাঁড়িয়ে বহু ভারতীয় ট্রাক। বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ বলে চালান পাওয়া যাচ্ছে না।
চিন্তিত ব্য়বসায়ীরা
পাঞ্জাব থেকে আসা এই ব্যক্তি দুই দিন ধরে পেট্রাপোল সীমান্তে ট্রাক নিয়ে অপেক্ষায়। বাংলাদেশে পণ্য পৌঁছে কবে তিনি বাড়ি ফিরতে পারবেন, জানেন না। আদৌ যেতে পারবেন কি না, তা-ও বুঝতে পারছেন না। বহু টাকার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন ব্য়বসায়ীরা।
চলছে কার্ফিউ
গত দুই দিন বাণিজ্য সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। রোববার আদালতের রায়ের পর সোমবার থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। কোভিডের সময়েও পরিস্থিতি এমন হয়নি বলে জানালেন পেট্রাপোলের ক্লিয়ারিং এজেন্ট।
অশান্তির বাতাবরণ
অশান্তির বাতাবরণে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সঙ্গে কথা বলে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট। যতক্ষণ পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে, ততক্ষণ রপ্তানি বন্ধ থাকবে। ভারতীয় ট্রাক সীমান্ত পার করে যাতে যথেষ্ট নিরাপত্তা পায়, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ।
মুদ্রা বিনিময়ে প্রভাব
পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী দুই দেশে যাতায়াত করেন। এখন তা কমে যাওয়ায় প্রভাব পড়েছে মুদ্রা বিনিময় ব্য়বস্থায়। কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে এই দোকানগুলি।