1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজআফগানিস্তান

তালেবানের নিষেধাজ্ঞা এড়াতে গোপনে ব্যবসা করছেন আফগান নারীরা

২০ আগস্ট ২০২৩

২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় যাওয়ার পর নারীরা চাকরি হারান৷ তাদের অনেকে গোপনে ব্যবসা শুরু করেছেন৷ তারা নিজেদের বাড়িতে জিম, বিউটি সেলুন, স্কুল পরিচালনা করছেন৷

https://p.dw.com/p/4VMIQ
কাবুলে একটি বিউটি সেলুন বন্ধের তার সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকজন নারী কর্মী
জুলাইতে তালেবান দেশের সব বিউটি সেলুন বন্ধের নির্দেশ দেয়ছবি: ALI KHARA/REUTERS

এদের একজন ৪৪ বছর বয়সি লায়লা হায়দারি৷ কাবুলে তার একটি রেস্টুরেন্ট ছিল৷ সেখানে সন্ধ্যায় সংগীত ও কবিতা পাঠের আসর বসতো৷ বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক ও বিদেশিদের কাছে রেস্টুরেন্টটি জনপ্রিয় ছিল৷ ব্যবসার আয়ের একটি অংশ দিয়ে মাদক পুনর্বাসন কেন্দ্রও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি৷

তবে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর সেটি ভেঙে ফেলেন তাদের সমর্থকেরা৷ ঐ ঘটনার পাঁচ মাস পর গোপনে একটি হ্যান্ডিক্রাফট সেন্টার খোলেন হায়দারি৷ সেখানে পোশাক তৈরি ও অলংকার বানিয়ে টাকা আয় করছেন প্রায় ৫০ জন নারী৷ তারা মাসে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা আয় করেন৷ হায়দারি বলেন, ‘‘যে নারীদের কাজ খুব দরকার তাদের জন্য আমি এই প্রতিষ্ঠানটা শুরু করেছি৷''

হ্যান্ডিক্রাফট ব্যবসার কিছু অংশ দিয়ে মেয়েদের একটি গোপন স্কুলে অর্থ সহায়তা দিচ্ছেন হায়দারি৷ সেখানে প্রায় ২০০ মেয়ে গণিত, বিজ্ঞান ও ইংরেজি শিখছে৷ কিছু মেয়ে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করছে৷ বাকিরা অনলাইনে পড়ছে৷

নারীদের জন্য বেশিরভাগ চাকরি নিষিদ্ধ করেছে তালেবান৷ মেয়েরা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে না৷ মেয়েদের চলাফেরার উপরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷

তবে হাজার হাজার নারী তাদের বাড়িতে ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন৷ এতে সাধারণত বাধা দিচ্ছে না তালেবান৷ পাশাপাশি হায়দারির মতো গোপন প্রতিষ্ঠানও কাজ করে যাচ্ছে৷

২৫ বছর বয়সি দর্জি ওয়াজিহা শেখাওয়াত আগে একা পাকিস্তান ও ইরানে গিয়ে কাপড় কিনে আনতেন৷ তালেবানের নিয়ম অনুযায়ী, এখন তিনি একা ভ্রমণ করতে পারেন না৷ কিন্তু সঙ্গে একজনকে নিয়ে যাওয়া তার পক্ষে আর্থিক কারণে সম্ভব নয়৷ এই অবস্থায় তিনি তার পরিবারের এক পুরুষ সদস্যকে কাপড় কিনতে পাঠিয়েছিলেন৷ কিন্তু তিনি ভুল কাপড় কিনে আনেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি আগে নিয়মিত বিদেশে ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে যেতাম, কিন্তু এখন কফি পান করতেও বাইরে যেতে পারি না৷ দম বন্ধ লাগে৷ মাঝেমধ্যে আমি ঘর বন্ধ করে চিৎকার করি৷''

এদিকে পার্টি ড্রেস ও চাকরিজীবী মেয়েদের পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ায় ওয়াজিহার মাসিক আয় ৬০০ ডলার থেকে কমে ২০০ ডলার হয়েছে৷

আফগানিস্তানে বিধবা, বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া ও একা থাকা নারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ৷ তাদের অনেকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী৷ আবার অনেকের মাহরাম (সঙ্গে যাওয়ার মতো পুরুষসঙ্গী) কেউ নেই৷

২০১৫ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর সাদাফ (ছদ্মনাম) কাবুলে বিউটি সেলুন চালিয়ে পাঁচ সন্তান লালনপালন করতেন৷ এখন তালেবান তার সেলুন বন্ধ করে দেয়ায় তিনি ঘরে ব্যবসা শুরু করেছেন৷ কিন্তু তার অনেক ক্রেতা চাকরি হারানোয় সেলুনে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন৷ তাই সাদাফের মাসিক আয় ৬০০ ডলার থেকে কমে ২০০ ডলার হয়েছে৷

গত মাসে তালেবান দেশের সব বিউটি সেলুন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে৷ ফলে ৬০ হাজারের বেশি নারী চাকরি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

সাদাফ আশঙ্কা করছেন, ঘরে ব্যবসা করায় তালেবান তার পেছনে লাগতে পারে৷

জেডএইচ/এফএস (রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান