আশা জাগানোর অভিনব উদ্যোগ
১৪ ডিসেম্বর ২০১৭প্রথম শো-র আগে শেষ মহড়া চলছে৷ এই মিউজিক্যালের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীরা শুধু গায়ক ও অভিনেতা হয়ে উঠছে না, অচেনা মানুষও বন্ধু হয়ে উঠছে৷ যেমন সিরিয়ার শরণার্থী মাহের৷ সে বলে, ‘‘আমার অনেক নতুন বন্ধু হয়েছে৷ খুব ভালো হয়েছে৷ কাউকেই চিনতাম না৷ সপ্তাহে একবার রিহার্সাল হয়৷ এখানে এলে সবকিছু ভুলে যাই৷ শুধু বন্ধুদের সঙ্গে থাকি৷''
মাহের ও সিনা-র বয়স যথাক্রমে ১৮ ও ১৭৷ দু'বছর আগে মাহের একাই সিরিয়া থেকে জার্মানি আসে৷ এখন সে ক্লাস টেনে পড়ে৷ সিনা জার্মান নাগরিক, আট বছর ধরে বার্লিনে থাকে৷ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝে এই মিউজিক্যাল তাকে আনন্দ দেয়৷
মাস ছয়েক ধরে এই তরুণ-তরুণীরা রিহার্সাল করছেন৷ নিজেদের মাথা থেকেই এই মিউজিক্যাল-এর আইডিয়া এসেছে৷ গল্পের মূলে রয়েছে এক শান্তিপূর্ণ জাতি, যাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে৷ মানুষকে অপহরণ করা হয়েছে৷ তবে সেই অ্যাডভেঞ্চার ভালোভাবে শেষ হয়েছে৷
প্লুলারআর্টস ইন্টারন্যাশানাল সংস্থার টড জনাথন ফ্লেচার সব আইডিয়া সংগ্রহ করে চিত্রনাট্য লিখেছেন, গানে সুর দিয়েছেন৷ ৩০ বছর ধরে তিনি তরুণ-তরুণীদের নিয়ে কাজ করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘তারা সমাজে অবদান রাখতে চায়, সেটাই তাদের উদ্দেশ্য৷ শুধু ঘোরাঘুরি করতে চায় না তারা৷ তাদের মনে আত্মবিশ্বাস আনাই আমার মূল দায়িত্ব৷ কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সব সম্ভব৷ তারা একবার নিজেদের ক্ষমতার স্বাদ পেলে শুধু নাটক ও সংগীত নয়, হয়ত অংক ও বায়োলজির ক্ষেত্রেও ভালো ফল করবে৷ আত্মবিশ্বাসে আরও ভরপূর হয়ে তারা চেষ্টা করবে৷''
সিনা বলেন, ‘‘এর আগে আমি কখনো শরণার্থীদের সঙ্গে কিছু করিনি৷ তাদের একটা অন্য দিক সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলাম৷ নিজে ব্যক্তিগতভাবে জানতে চেয়েছিলাম, তারা কেমন মানুষ৷ এর আগেও আমি অনেক গ্রুপের নাটকে অভিনয় করেছি৷ তাই এখানে নতুন করে অনেক কিছু শিখলাম৷''
এবার দ্রুত কুশিলবদের পোশাক-পরিচ্ছদ পরে দেখার পালা৷ সেগুলিও তরুণ-তরুণীরা নিজেরাই সেলাই করেছেন৷
টড ফ্লেচার চান, তরুণ-তরুণীরা এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যাতে আরও এগিয়ে যায়৷ স্কুল, বন্ধুবান্ধব, পরিবারের মধ্যেও তারা যেন এই সাফল্যের প্রতিফলন ঘটাতে পারে৷
প্রতিবেদন: লেয়া আলব্রেশট/এসবি