তরুণ পাকিস্তানিরা সন্ত্রাসবাদ ভুলতে সংগীতের আশ্রয় নিচ্ছে
২৪ আগস্ট ২০১১সন্ত্রাসী হামলা, বোমা বিস্ফোরণ, রাজপথে গোলাগুলি – দিনের পর দিন ধরে হিংসা ও হত্যালীলার এই চক্রের মধ্যে কোনো মানুষের পক্ষে স্বাভাবিক জীবন করা প্রায় অসম্ভব৷ কিন্তু পাকিস্তানের অনেক শহর ও জনপদে এটাই আজকের কঠিন বাস্তব৷ এসব থামানোর উপায় না থাকলে কমপক্ষে ভুলে থাকার চেষ্টা তো করা যায়! সেদেশের তরুণ প্রজন্মের একাংশ ঠিক সেটাই করছে নিজেদের গানের জগতে ভাসিয়ে দিয়ে৷
তবে রক-পপ-রেগে-হেভি মেটাল সংগীতের জগতে প্রবেশ করতে হলে পকেট খালি থাকলে চলে না৷ যেমন সম্প্রতি লাহোরে সারা রাত জলসার এক অনুষ্ঠানের পরিচালনা করতে লন্ডন থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল ডিজে ফয়জল'কে৷ বিখ্যাত এই ডিজে'কে পেতে উদ্যোক্তারা লন্ডনের বিখ্যাত নাইটক্লাব ‘মিনিস্ট্রি অফ সাউন্ড'এর কাছে দরবার করেছিলেন৷ টিকিটের দাম প্রায় ১০০ মার্কিন ডলার! কোনো ক্লাব বা হল নয় – এক ইটের ভাটায় আয়োজন করা হয়েছিল অভিনব এই অনুষ্ঠান৷ সারারাত নাচ-গানের এই আসরে উপস্থিত ছিলেন তরুণ তাহির আলি৷ তিনি বলেন, ‘‘এটা পাকিস্তান৷ আমার পাকিস্তান৷ পরিবর্তনশীল পাকিস্তান৷ আর বোমা নয়, আর সন্ত্রাস নয়, আমাদের সমাজ বদলাচ্ছে৷'' আশাবাদের এই সুর শোনা গেল অন্যদের কণ্ঠেও৷ তরুণী জুবিয়া নাচতে নাচতে বললেন, ‘‘আপনি দেখবেন, একদিন গোটা পাকিস্তান বদলে যাবে৷ আমরা আমাদের দেশের ভোল পাল্টে দেব৷ আমরা এখানে বিপ্লব নিয়ে আসবো, সন্ত্রাসবাদকে বিদায় করে ছাড়বো৷''
বলাই বাহুল্য, পাকিস্তানের মতো দেশে পশ্চিমা আধুনিক সংগীতের এমন অনুষ্ঠান ও এই ধারার সংগীতপ্রেমীদের সংখ্যা নগণ্য৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও লাহোর, করাচি ও ইসলামাবাদে একশোরও বেশি হেভি মেটাল গোষ্ঠী সংগীত পরিবেশন করে চলেছে বলে মনে করেন জনপ্রিয় ‘টকাটক' গোষ্ঠীর গিটার-বাদক জইন৷ তবে বেশিরভাগ গোষ্ঠীকেই প্রকাশ্যে দেখা যায় না, তারা শুধু পরিচিত লোকজনের সামনেই গান-বাজনা করে৷
এভাবে কঠিন বাস্তব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিজস্ব এক জগত গড়ে তুলছে পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক