1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির বনজঙ্গল হুমকির মুখে

১৯ অক্টোবর ২০২০

জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব জার্মানিতেও টের পাওয়া যাচ্ছে৷ বছরের পর বছর গ্রীষ্মের প্রখর রোদ ও অনাবৃষ্টির ফলে গাছপালা, বনজঙ্গলের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ছে৷ নতুন এই চ্যালেঞ্জের মুখে বনবিভাগ দিশাহারা হয়ে পড়ছে৷

https://p.dw.com/p/3k7jr
ছবি: HR

জার্মানির মধ্যভাগে মেলসুঙেনের অরণ্য এলাকার একটা অংশ প্রবল ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে, অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে৷ বার্ক বিটল পোকা বাকি গাছগুলি নষ্ট করে দিয়েছে৷ অথচ কয়েক মাস আগে পর্যন্ত সেখানে ঘন জঙ্গল ছিল৷ বনবিভাগের কর্মকর্তা পেট্রা ভেস্টফাল বলেন, ‘‘কয়েক দশক ধরে দেখাশোনার পর কোনো জঙ্গল কার্যত উধাও হয়ে গেলে, পোকায় গাছ খেয়ে নিলে বন বিভাগের কর্মী হিসেবে খুবই কষ্ট হয়৷’’

হেসে রাজ্যের সেই অরণ্যে প্রায় তিন লাখ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে৷ সেগুলির মধ্যে বেশ কিছু প্রাচীন ও বিশাল গাছও ছিল৷ অন্যান্য জায়গায়ও এমন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে৷

শুধু ২০১৮ সালে জার্মানিতে প্রায় ছয় কোটি গাছ ঝড়ঝঞ্জা অথবা পোকার উপদ্রবে নষ্ট হয়ে গেছে৷ বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে৷ শুধু আবহাওয়ার অবস্থা অনুযায়ী কিছু পার্থক্য টের পাওয়া গেছে৷

এই মুহূর্তে বার্ক বিটল পোকা পেট্রা ভেস্টফালের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ৷ মাত্র দুই থেকে চার মিলিমিটার দীর্ঘ এই পোকা জঙ্গলে ঝড়ে বিধ্বস্ত মৃত গাছ খেয়ে থাকে৷ তবে বিশেষ করে খরার কারণে মুমূর্ষু গাছও এই পোকার হামলার শিকার হয়৷

জার্মানিতে ২০১৮ সালের গ্রীষ্মকাল ছিল অস্বাভাবিক রকম গরম ও শুষ্ক৷ সে বছর শীতে বৃষ্টি কম হওয়ায় মাটি শুকিয়ে যায়৷ সেই ধাক্কা এখনো সামলানো সম্ভব হয় নি৷ অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বহু বছর ধরে নেমে চলেছে৷

চেপটা শিকড়ের কারণে স্প্রুস গাছ সাধারণত ভূগর্ভস্থ পানির নাগাল পায় না৷ সে কারণে খরা দেখা দিলে এমন গাছ চাপের মুখে পড়ে৷ তখন বার্ক বিটলের মতো পোকা প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যায়৷ পেট্রা ভেস্টফাল বলেন, ‘‘বিটল বাইরে থেকে গাছের বাকল ভেদ করে ঢুকে গেছে৷ ভেতরে প্রবেশ করে এই পোকা কাঠ চিবিয়ে উপর ও নীচের দিকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ে৷ মাদি পোকাই এমন সুড়ঙ্গ তৈরি করে পাশের অংশে ডিম পাড়ে৷ জন্মের পর গুটিপোকা সেই সুড়ঙ্গের নরম কাঠ খেয়ে নেয়৷ এই পোকা গাছের পুষ্টির জোগান নষ্ট করে দেয়৷’’

ডিম থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠতে বিটলের মাত্র চার থেকে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে৷ ডিম ফুটে গুটিপোকা বেরিয়ে দ্রুত পূর্ণতা পায়৷ একটি মাদি পোকা পঞ্চাশটির মতো সন্তান জন্ম দেয়৷ তার মধ্যে ২৫টি মাদি হলে এবং সেগুলি বংশবৃদ্ধি চালিয়ে গেলে তৃতীয় প্রজন্মে মোট ৩১ হাজার ২৫০টি পোকা সৃষ্টি হতে পারে৷ একশো পোকাই একটি স্প্রুস গাছ মেরে ফেলতে পারে৷

পোকার হামলা হলে একটি অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেকটি গাছ চিহ্নিত ও নথিভুক্ত করা হয়৷ অনেক কচি গাছ কয়েক দশক ধরে বেড়ে উঠতে পারতো৷ কিন্তু বাধ্য হয়ে সেগুলি কেটে ফেলতে হয়৷ বার্ক বিটলের হামলার পর গাছ কাটার হার প্রায় চার গুণ বেড়ে গেছে৷

নিনা স্মিট/এসবি