1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির ন্যূনতম বেতনধারীরাও দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে

কিরা শাখট, ওলায়া আরগ্যুয়েসো/এডিকে৬ জানুয়ারি ২০১৯

পূর্ণকালীন শ্রমিকরা যাতে দরিদ্র হিসাবে গণ্য না হন, তেমন নিশ্চয়তা দিয়েই নির্ধারণ করা হয় ন্যূনতম বেতন৷ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশই এই বিষয়টি নিশ্চিত করে৷ কিন্তু জার্মানিতে এই বেতন প্রায় দারিদ্র্যসীমার কাছাকাছি৷

https://p.dw.com/p/3B36K

জার্মানির ফুলটাইম শ্রমিকরা ন্যূনতম বেতন পান মাসিক ১,৫০০ ইউরো৷ পয়লা জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, যে-কোনো পূর্ণকালীন চাকরিজীবীকে ঘণ্টায় অন্তত ৯.১৯ ইউরো দিতেই হবে চাকরিদাতার৷ সেই হিসেবে লুক্সেমবার্গের মতো দেশেও জার্মানির চেয়ে ন্যূনতম বেতন বেশি৷ কিন্তু শুধুমাত্র টাকার অংকে হিসাব করলে অন্য অনেক ইউরোপীয় দেশের তুলনায় এই দিক দিয়ে এগিয়ে আছে জার্মানি৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২২ দেশের ন্যূনতম বেতন নিয়ে কাজ করেছে ডয়চে ভেলে৷ একই সাথে বিবেচনায় রাখা হয়েছে, নানা ধরনের কর বাদ দিয়ে মাস শেষে ঠিক কি পরিমাণ অর্থ তাঁরা নিজের কাছে রাখতে পারছেন৷ 

জার্মানিতে ২০১৯ সাল থেকে ন্যূনতম বেতন ৩৫ সেন্ট বাড়ানো হয়েছে৷ এর আগে প্রতি ঘণ্টায় বেতন ছিল ৮.৮৪ ইউরো৷ এই হারে কর ও সামাজিক অবদান বাদে মাস শেষে সন্তান ও পরিবারহীন কোনো ব্যক্তির হাতে থাকতো ১১০.৫০ ইউরোর মতো৷ জার্মানির দারিদ্র্যসীমার চেয়ে এ পরিমাণ মাত্র ১৪.৫০ ইউরো বেশি৷

একটি দেশের অর্ধেকের বেশি মানুষ যে বেতন পেয়ে থাকেন, তার ৬০ শতাংশও যেসব প্রাপ্তবয়স্ক পান না, ইউরোপীয় ইউনিয়নে তাঁরা দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে আছেন বলে বিবেচনা করা হয়৷ এই সীমাকে মধ্যবর্তী সীমা হিসেবে ধরে নেয়া হয়

ন্যূনতম বেতন পেয়েও দারিদ্র্যের ঝুঁকি

এই ঝুঁকি অবশ্য আপেক্ষিক৷ জার্মানিতে কাউকে দরিদ্র বলা মানে মধ্যবর্তী সীমার ওপরে যাঁরা বেতন পেয়ে থাকেন, তাঁদের তুলনায় দরিদ্র বোঝানো হয়ে থাকে৷

রোমানিয়ার মতো দেশের সাথে তুলনা করলে অবশ্য জার্মান চাকরিজীবীরা মাস শেষে অনেক বেশি অর্থই বাসায় নিতে পারেন৷ কিন্তু এর সাথে বিবেচনায় রাখতে হবে সমাজকেও৷ একটি সমাজে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে একজন চাকরিজীবীকে যে জীবনমান ধারণ করতে হয়, জার্মানিতে তা হচ্ছে না৷

ন্যূনতম বেতন ঘণ্টায় ৩৫ সেন্ট বাড়ানোর পরও আনুষ্ঠানিক দারিদ্র্যসীমার খুব একটা ওপরে যেতে পারেননি জার্মান চাকরিজীবীরা৷ এখনও জার্মানির মধ্যবর্তী আয়সীমা থেকে অনেক দূরেই রয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷

এই হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে সেসব পূর্ণকালীন চাকরিজীবীদের, যাঁরা একা বাস করেন এবং যাঁদের কোনো সন্তান নেই৷ হিসাবে ধরে নেয়া হয়েছে জার্মানির সবধরনের সামাজিক সহায়তা পাওয়ারও যোগ্য এই ব্যক্তিরা৷ এরপর বিবেচনায় আনা হয়েছে, মাসের সব খরচ শেষে কী পরিমাণ অর্থ তাঁদের কাছে বাকি থাকে৷ 

জার্মানিতে বাংলাদেশি শরণার্থীদের মাসিক আয় কত?

ইইউ-র দেশগুলোতে এটিও দারিদ্র্যসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হয়৷ কিন্তু এই দিক থেকে অন্য দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে আছে জার্মানি৷ জার্মানির পেছনে আছে কেবল এস্টোনিয়া ও লাটভিয়া৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ন্যূনতম বেতন দেয়া দেশ লুক্সেমবার্গেও চাকরিজীবীরা রয়েছেন দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে৷

নতুন তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে রোমানিয়া৷ দেশটিতে একা বাস করা চাকরিজীবীদের দারিদ্র্যসীমা মাত্র মাসিক ১৩৭ ইউরো৷ কিন্তু ন্যূনতম বেতন পাওয়া চাকরিজীবীরা প্রায় এর দ্বিগুণ পেয়ে থাকেন৷

তবে রোমানিয়াতে সার্বিকভাবে সবাই কম বেতন পেয়ে থাকেন৷ ফলে মধ্যবর্তী বেতন কম হওয়ায়, তালিকার ওপরের দিকে যেতে পেরেছে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোও৷

আন্তর্জাতিক শ্রমনীতি বিশেষজ্ঞ থোর্স্টেন শুলটেনের মতে, ‘‘যেসব দেশে বেতন কম, তাদের ন্যূনতম বেতন বেশি বেতনের দেশ থেকে তুলনামূলক ভালো হয়ে থাকে৷'' এ কারণেই গ্রিস, পর্তুগাল ও অন্যান্য কম বেতনের দেশগুলোতে ন্যূনতম বেতন দারিদ্র্যসীমার অনেক ওপরে হয়ে থাকে৷