জার্মানিতে সফল কয়েকজন তুর্কি
১৯৮২ সালে জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোল বলেছিলেন, তিনি জার্মানিতে বসবাসরত তুর্কিদের সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসতে চান৷ ছবিঘরে থাকছে জার্মানির কয়েকজন সফল মানুষের কথা, যাদের শেকড় তুরস্কে৷
চিত্র পরিচালক ফাতিহ আকিন
ফাতিহ আকিন জার্মানির চিত্রজগতের সুপারস্টারদের মধ্যে একজন, যার আন্তর্জাতিক পরিচিতি রয়েছে৷ তাঁর অভিনীত ছবি ‘গেগেন ডি ভান্ড’ (দেয়ালের বিপরীতে) ছবির জন্য তিনি বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছেন৷ সেগুলোর মধ্যে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব বার্লিনালের ‘গ্লোডেন বেয়ার’ও রয়েছে৷ তাঁর বাবা, মা দুজনই তুরস্ক থেকে এসেছেন৷ ফাতিহ আকিনের জন্ম ১৯৭৩ সালে জার্মানির হামবুর্গ শহরে৷
রাঁধুনি আলি গ্যুনগোরমুস
গ্যুনগোরমুস ২০০৬ সালে একটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সেরা রাঁধুনির পুরস্কার লাভ করেন৷ তাঁর ‘ল্য কানার নুভো’ নামের রেস্তোরাঁটি নামকরা রেস্তোরাঁর মধ্যে একটি৷ আলি ১০ বছর বয়সে তুরস্ক থেকে এসেছেন৷ ৩৭ বছর বয়সি আলি বলেন, তিনি যে একটি দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছেন সেটাই তাঁকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা যুগিয়েছে৷
ব্যবসায়ী ভুরাল ওয়গার
ব্যবসায়ী ভুরাল ওয়গার ১৯৬০ সালে তুরস্ক থেকে জার্মানিতে এসেছেন৷ তিনি পড়াশোনা শেষ করার পর একটি আন্তর্জাতিক ট্রাভেল এজেন্সি প্রতিষ্ঠা করেন৷ যেটা জার্মানির বৃহত্তম ট্রাভেল এজেন্সি হিসেবে গড়ে উঠে৷ তিনি ২০০৮ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এসপিডি দলের হয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সংসদ সদস্য ছিলেন৷ তাঁর আন্ত:সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডের জন্য তাঁকে জার্মানির সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মাননা ‘জার্মান সেবা পদক’ দেয়া হয়৷
রাজনীতিক: সেম ওসডেমিয়ার
তুর্কি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে সেমি ওসডেমিয়ারই প্রথম যিনি ১৯৯৪ সালে সবুজ দলের সদস্য হিসেবে জার্মানির সংসদ সদস্য হন৷ শুধু তাই নয়, পরে তিনি সবুজ দলের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হন৷ তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নে তুরস্কের অন্তর্ভুক্তির একজন সমর্থক৷ ওসডেমিয়ার জার্মান স্কুলে তুর্কি ভাষা শিক্ষা দেন৷
উপস্থাপিকা নাজান একেস
হাসি মুখে যিনি বসার ঘরের টিভিতে উপস্থিত হন তিনি হচ্ছেন নাজান একেস৷ তিনি জার্মানির একজন জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপিকা৷ অভিবাসী তুর্কি বাবা-ময়ের সন্তান নাজান ছোট বড় অনেক টিভি অনুষ্ঠানেই উপস্থাপনা করেন৷ ২০১০ সালে নাজানের পরিবারের গল্প নিয়ে তাঁর লেখা একটি বই প্রকাশিত হয়েছে৷ তিনি সামাজিক কর্মকান্ডের সাথেও জড়িত৷ ২০১১ সাল থেকে তিনি জার্মান সরকারের ইন্টিগ্রেশন কাউন্সিল-এ আছেন৷
জার্মান ফুটবল দলের খেলোয়াড় মেসুত ওজিল
মেসুত ওজিল জার্মান ফুটবল তারকাদের একজন৷ তুর্কি বাবা মায়ের সন্তান ওজিল জার্মান নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০০৯ সালে জার্মান জাতীয় ফুটবল দলে খেলার সুযোগ লাভ করেন৷ ২০১০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতায় ফুটবল প্রেমীদের হৃদয় জয় করায় তাঁকে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকায় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল৷ মেসুত ওজিল জার্মানির সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়৷
হেলমুট কোলের বিতর্কিত বিবৃতি
জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর হেলমুট কোল ১৯৮২ সালে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে বলেছিলেন, তিনি জার্মানিতে বসবাসরত তুর্কিদের সংখ্যা অর্ধেকে কমিয়ে ফেলতে চান৷ কারণ তাঁর মনে হয়েছিল, তুর্কিরা জার্মান সমাজের সঙ্গে নিজেদের ভালভাবে খাপ খাওয়াতে পারছেন না৷ ছবিঘরে থাকছে জার্মানির কয়েকজন সফল তুর্কি বংশোদ্ভূত নাগরিকের কথা৷