1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা

১৫ মার্চ ২০২৩

২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে হামলার পর জাতিসংঘ ১৫ মার্চকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে টু কমব্যাট ইসলামোফোবিয়া' ঘোষণা করে৷

https://p.dw.com/p/4Oh5I
künftige Moschee Erfurt, erster Moschee-Neubau in der ehemaligen DDR
এরফুর্ট মসজিদছবি: Christoph Strack/DW

জার্মানিতে বাস করা প্রায় ৫৫ লাখ মুসলমানের অনেকেই বলছেন, তারা প্রতিদিন ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামবিদ্বেষের মুখোমুখি হন৷

জার্মানির এরফুর্টে আহমদিয়া মুসলিমদের একটি মসজিদে মিনার তৈরি হচ্ছে৷ এই কাজের সঙ্গে জড়িত আছেন এরফুর্ট-রিট এলাকার ডেপুটি মেয়র সুলেমান মালিক৷ ৩৪ বছর বয়সি মালিকের জন্ম পাকিস্তানে৷ তবে ১৮ বছর ধরে জার্মানিতে বাস করছেন৷

মালিক জানান, মিনার তৈরি কাজের জন্য একটি ক্রেন ঠিক করা হয়েছিল৷ কিন্তু ঐ কোম্পানি পরবর্তীতে বর্ণবাদ, ডানপন্থি মৌলবাদ ও ইসলামোফোবিয়ার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় কাজ থেকে সরে গিয়েছিল৷

শেষ পর্যন্ত একটি কোম্পানি কাজ করতে রাজি হয়৷ তবে কেউ নির্মাণকাজের ছবি বা ভিডিও তুলতে পারবে না বলে শর্ত দিয়েছিল৷

এরফুর্ট-রিট এলাকার ডেপুটি মেয়র সুলেমান মালিক
এরফুর্ট-রিট এলাকার ডেপুটি মেয়র সুলেমান মালিকছবি: Christoph Strack/DW

মসজিদ এলাকায় শূকরের মরদেহ ছুড়ে মারার মতো ঘটনা ঘটেছে বলেও জানান মালিক৷ এছাড়া গাড়ি করে নির্মাণকাজের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় জানালা খুলে চিৎকার করে গালি দেয়া, রাস্তার অপর পাশে ‘ক্যাথলিক প্রার্থনার' নামে ‘বিক্ষোভকারীদের' জড়ো হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে৷

মিনার নির্মাণকাজের প্রতি সমর্থন জানানোয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক মাধ্যমে প্রায়ই উপহাস করা হয়৷

সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা

জার্মানির সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়া আছে৷ তবে ‘জার্মান কাউন্সিল অফ এক্সপার্ট অন ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন' এর সবশেষ জরিপে অংশ নেয়া প্রায় ১৫ হাজার উত্তরদাতার এক-তৃতীয়াংশ থেকে শুরু করে অর্ধেক উত্তরদাতা মুসলমানবিরোধী ও ইসলামবিরোধী মনোভাব প্রকাশ করেছে৷

প্রায় প্রতি সপ্তাহে জার্মানির কোথাও না কোথাও মুসজিদে গ্রাফিতি এঁকে দেয়া কিংবা মসজিদের ক্ষতি করার ঘটনা ঘটছে৷ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জার্মানির হেসে রাজ্য ৪৩ বছর বয়সি এক শ্বেতাঙ্গ একটি শিশা বার, বার ও কিয়স্কে হামলা চালিয়ে নয়জনকে হত্যা করেছিলেন৷

জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমের মহাসচিব আব্দাসসামাদ আল ইয়াজিদি বলছেন, ইসলামোফোবিয়া বা ইসলামবিদ্বেষ বিষয়টি জার্মান সমাজের মূলধারা ঢুকে গেছে৷ অর্থাৎ এটি অনেকটা গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, যা প্রকাশ্যে প্রকাশ করা যায় বলে মনে করেন তিনি৷

হানাউয়ে এক ‘বর্ণবাদী হামলায়’ নয়জন নিহত হন
হানাউয়ে এক ‘বর্ণবাদী হামলায়’ নয়জন নিহত হনছবি: DW/L. Hänel

ইয়াজিদি জানান, তিনি জার্মানিতে মুসলমানদের বিষয় দেখাশোনা করার জন্য একজন কমিশনার নিয়োগ দিতে জার্মানির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ইহুদিদের দেখাশোনা করাসহ বিভিন্ন বিষয়ের জন্য জার্মানিতে প্রায় ৩৫ জন কমিশনার আছেন৷ ‘‘কিন্তু কপট যুক্তি দেখিয়ে মুসলমানদের জন্য কমিশনার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না,'' বলে জানান ইয়াজিদি৷ তিনি বলেন, মানুষ স্বীকার করতে চায় না যে সমাজে মুসলিমবিরোধী বর্ণবাদ সমস্যা রয়েছে ‘এবং মুসলমানরা এটি অনুভব করে'৷

অন্যান্য দেশে এমন কর্মকর্তা আছেন৷ যেমন ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো গত জানুয়ারিতে ইসলামবিদ্বেষ ঠেকানোর জন্য প্রথমবারের মতো একজন কমিশনার নিয়োগ দিয়েছেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৫ সালে মুসলিমবিরোধিতা ঠেকানোর জন্য একজন সমন্বয়কারীর পদ তৈরি করে৷

ক্রিস্টোফ স্ট্রাক/জেডএইচ