জার্মানিতে অনৈতিকতা এবং মাস্ক-দুর্নীতি
১০ মার্চ ২০২১সংকটের সময় জনগণ রাজনীতিবিদদের ওপর ভরসা রাখে৷ করোনা সংকটেও রাজনীতিবিদদের ওপর সে ভরসা রেখেছিল মানুষ৷ সাম্প্রতিক জরিপ বলছিল সরকার তার সুফল পেয়েছে৷ অনেক দিন পর ম্যার্কেল সরকারের জনপ্রিয়তায় আবার জোয়ারের ঢেউ লেগেছিল৷
কিন্তু ম্যার্কেলের সরকার সেই অবস্থায় আর নেই৷ কয়েক সপ্তাহ ধরে সরকারের জনপ্রিয়তা আবার ঢালপথে৷ জরিপই বলছে সে কথা৷ এবং তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই, কারণ, অঙ্গীকার লঙ্ঘন হয়েছে, করোনার সংক্রমণ নতুন করে বেড়েছে এবং দেশে যে চ্যালেন্সরের আর কোনো কর্তৃত্ব নেই তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, এটাও বোঝা হয়ে গেছে যে, ‘শক্তিশালী’ রাজ্যগুলোর প্রধানমন্ত্রীরা আর তার কথা শোনেন না এবং সে কারণে চ্যান্সেলর হাল ছেড়ে দিয়েছেন৷
নীতি ফেলে মাস্ক চুক্তি
সব শেষে এলো আঙ্গেলা ম্যার্কেলের দল সিডিইউ এবং তাদের সহযোগী দল সিএসইউ-র দুই সাংসদের মাস্ক চুক্তিতে ভূমিকা রাখার বিনিময়ে কয়েক লাখ ইউরো পকেটে পোরার খবর৷ দুঃখজনক ব্যাপার হলো, বিষয়টি ধরা পড়ার পরও তারা সংসদ সদস্যের পদ ছাড়তে চাননি৷ সিডিইউ-এর নিকোলাস ল্যোবেল এবং সিএসইউ- এর গেয়র্গ ন্যুজেলিন পদ ছেড়েছেন চাপের কাছে নতি স্বীকার করে৷
এই দুটো ঘটনা হয়ত করোনা ভাইরাস নিয়ে নোংরা বাণিজ্যের সম্পূর্ণ চিত্রের খুব ছোট একটা অংশ৷ এমনও হতে পারে যে এর সঙ্গে শুধু রক্ষণশীল দল নয়, অন্য দলের রাজনীতিবিদরাও জড়িত৷
ল্যোবেল এবং ন্যুজেলিন রাজনীতির মহাক্ষতি করেছেন৷ সংকটের সময়ে তারা সাংসদ হিসেবে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে টাকা কামিয়েছেন৷ এ ঘটনা রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদের প্রতি আস্থাকে দুর্বল করেছে৷ এতে যারা এতদিন বলতেন, রাজনীতিবিদদের মূল আগ্রহ বাঁকা পথে করে খাওয়া- তাদের এ বিশ্বাস আরো দৃঢ় হবে৷ এবং এখান থেকে চরম ডানপন্থি দল এএফডি আর লকডাউন-বিরোধীরা লাভবান হবে৷ অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা ভুগবে৷
মাস্ক-কেলেঙ্কারি দেখিয়ে দিলো কিছু নির্বাচিত প্রতিনিধি নৈতিকতার ধার না ধেরে মানুষের কষ্টকে পুঁজি করেও অর্থ উপার্জন করতে পারেন৷