1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানদের জীবনে আবারো ফিরে আসছে গান আর ছন্দ

২৫ ডিসেম্বর ২০১০

মহাকবি গ্যোয়েটের সময় গান ছিল সাধারণ মানুষের জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য এক অংশ৷ একসময় হঠাৎ করেই যেন সেই ছন্দের পতন ঘটে যায়৷ কিন্তু প্রতিবছর বড়দিনের সময় সংগীতের মূর্ছনা মানুষের মনে দোলা দেয় ভাল করেই৷

https://p.dw.com/p/zpP2
জার্মানদের জীবনে ফিরে আসছে গানছবি: picture-alliance/ dpa

গানের ভুবনে জন্ম রুডল্ফ টিয়েরশ-এর৷ তাঁর বয়স যখন খুব অল্প, তখন বন্ধুরা বাড়িতে আসতো ছুটির দিনগুলোতে৷ রান্নাঘরে বসতো আড্ডা, চলত খাওয়া দাওয়া৷ আর সেই সঙ্গে গান৷ সেই সময় বাড়িতে বাড়িতে টেলিভিশন ছিল না৷ গানের সঙ্গে বাজানো হত গিটার৷ অনেক ছোট বেলা থেকেই টুং-টাং সুর তোলা হত গিটারে৷

টিয়েরশ-এর বয়স এখন ৫০৷ পুরনো দিনের সেই গানের সুরে মাখা সোনালি দিনগুলো আজ কেবলই স্মৃতি৷ স্মৃতি শুধু গান গাওয়ার জন্য নয় বরং বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সবাইকে নিয়ে গান গাওয়া এবং গেয়ে যাওয়া৷

ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘গানের সেই দিনগুলো মানুষকে মানুষের আরো কাছে আনতে পারতো৷ ধর্ম অথবা দেশ যে কোন বিষয় নিয়েই গান গাওয়ার প্রথা ছিল৷ গানের মাধ্যমে সবাইকে কাছে আনা সহজ৷ কারণ যে কেউই একটু চেষ্টা করলে গান গাইতে পারে৷ সবার পক্ষে গিটার বাজানো বা পিয়ানো বাজানো সম্ভব নয় – কিন্তু গান যে কেউই গাইতে পারে৷'' কথাটা একেবারে মিথ্যে নয়৷

Deutschland Komponist Ludwig van Beethoven Zeichnung
অমর সুর স্রষ্টা জার্মানির বিটোফেনছবি: picture-alliance / akg-images

জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলের লোকসংগীতের শিকড় লুকিয়ে আছে দ্বাদশ শতাব্দীতে৷ তখন মিনেসিঙ্গাররা পথে পথে ঘুরে ঘুরে প্রেম আর ভালবাসার গান গাইতো৷ আমাদের দেশের বাউলের মত৷ এরপর সময়ের সঙ্গে তাল রেখে প্রেম আর ভালবাসার হাত ধরে গানের এই তীব্র স্রোতে চলে আসে ধর্ম, সমাজ-জীবন আর মানুষের জীবন কাহিনী৷ উনবিংশ শতাব্দীতে এসে গান পরিণত হয় উচ্চ মার্গের এক শিল্পে৷ গান হয়ে ওঠে শিল্পের আত্মা৷

এরপর এসেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ৷ মানুষের জীবনের অন্তঃস্থল থেকে হারিয়ে গিয়েছিল গান৷ মানুষকে দূরে রেখে সংগীত, সংগীতের মূর্ছনা পার করেছে কঠিন এক সময়৷ বিভক্ত হয়েছিল জার্মানি৷ আজ জার্মানির একত্রীকরণের কুড়ি বছর পর পার হয়ে গেছে৷ বেশ কয়েক দশক ধরে মানুষের জীবনে গান আর তেমন প্রাধান্য পায় নি৷ অনেকেই ভুলে গেছেন সুর তুলতে, সুরের সঙ্গে তাল রাখতে৷ কিন্তু ভোলেননি রুডল্ফ টিয়েরশ৷ গানের জন্য ভালবাসার কমতি কখনোই তাঁর মধ্যে ছিল না৷ আজ তিনি একজন সফল কয়ারমাস্টার৷ বৃন্দগানের দলের নির্দেশক৷ জার্মানির পূর্বে ফ্রাঙ্কফুর্ট আন ড্যার ওডার শহরে একটি সংগীত ভবনের প্রধান রুডল্ফ টিয়েরশ৷

টিয়েরশ চেষ্টা করছেন মানুষের জীবনে প্রতিদিন সংগীতের পরশ দিতে৷ গানের ভুবন তাঁর কাছে একটি সামাজিক নেটওয়ার্কের মত৷ গান তাঁর কাছে সমাজের মধ্যে যেন আরেকটি বিশাল নিষ্পাপ সমাজ৷ সেখানে নেই একাকিত্ব, রয়েছে শুধু স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক