1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান প্রেসিডেন্টের ইসরায়েল সফর

মারিনা জোয়ারদার২ ফেব্রুয়ারি ২০০৫

জার্মানির প্রেসিডেন্ট Horst Köhler জেরুজালেমে ইসরায়েলী সংসদ Knesset -এ বলেন যে, Holocaust -এর শিকার যারা হয়েছে জার্মানি কোন অবস্হাতেই তাঁদের ভুলে যাবে না৷ তাঁরা চিরদিন ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে থাকবেন৷ তাঁদের কথা ভুলে গেলে চলবে না৷ গতকাল প্রেসিডেন্ট Köhler ইসরায়েলী সংসদে জার্মান ভাষায় দেয়া এক ভষণে এ কথা বলে

https://p.dw.com/p/DPyF
ছবি: AP

�৷ তিনি আরো বলেন, এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সে বিষয়েও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে৷

জার্মান প্রেসিডেন্ট Horst Köhler ইসরায়েল সংসদ Knesset -এ জার্মানিতে দক্ষিণপন্হী এবং ইহুদিবাদ বিরোধীতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আহবান জানান৷ বিদেশী বৈরিতা এবং ইহুদিবাদ বিরোধীতা জার্মানি থেকে একেবারে মুছে যায়নি দেখে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন৷ তিনি তাঁর ভাষণ জার্মান ভাষায় দিলেও শুরু করেন তিনি হিব্রু ভাষা দিয়ে৷ তিনি সাংসদদের আরো বলেন, জার্মানি তাঁর কৃতকর্মের কথা কখনোই ভুলে যাবে না৷ হিব্রু ভাষায় প্রেসিডেন্ট এই আমন্ত্রনের জন্য ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, এই যাত্রা, এই দিন এবং এই ক্ষণ তাঁর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷

Köhler বলেন জার্মানি এবং ইসরায়েলের মধ্যে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেদিন থেকে যেদিন কনরাড আডেনাওয়ার এবং ডেভিড বেন গুরিয়ন একে অপররের প্রতি সাহায্য এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন৷সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত তা বিদ্যমান রয়েছে৷ জার্মানির সাথে ইসরায়েলের যেরকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের এত ঘনিষ্ঠতা নেই৷ তিনি জানান, হলোকাস্টের দায়দায়িত্ব অবশ্যই জার্মানির কাঁধে বর্তায়৷ জার্মানির রাজনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে ইসরায়েল যাতে আন্তর্জাতিকভাবে কোন ধরনের ভয়ভীতি ছাড়া মুক্ত ভাবে চলাফেরা করতে পারে সে ব্যবস্হা করা৷ জার্মানি বরাবরই তার প্রমাণ দিয়ে এসেছে৷ জার্মানি সবসময়ই ইসরায়েল এবং ইসরায়েলীদের পাশে রয়েছে৷

ভাষণের একাংশে প্রেসিডেন্ট Köhler কয়েকদিন আগে Auschwitz সফরের কথা উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন জেরুসালেম যাত্রা তাঁর সেখান থেকেই শুরু হয়েছে৷ হলোকাস্টের স্বীকার হয়েও যারা বেঁচে আছেন তাঁদের সাথে প্রেসিডেন্টের সেখানে সাক্ষাত্ হয়৷ তিনি জানান এই সাক্ষাত্ তাঁকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে৷ভাষণের এক পর্যায়ে আবেগে তাঁর কন্ঠরোধ হয়ে যায়৷ তিনি বলেন হলোকাস্টের শিকার হয়েও যারা বেঁচে আছেন জার্মানি তাঁদের কাছে লজ্জিত৷

প্রেসিডেন্ট Köhler বলেন যুদ্ধের পর জার্মানিতে যারা জন্মেছে তাঁরা হলোকাস্টের জন্য দায়ী নয় কিন্ত তাঁরা জানে ভবিষ্যতে এর দায়দায়িত্ব এবং স্মৃতি স্মরণ তাঁদের কাঁধে বর্তাবে৷ তাঁরা শিখবে কি করে মানবজাতিকে রক্ষা করতে হয় এর সাথে মানবাধিকারের বিষয়গুলোও জড়িত৷


নব্য নাত্ সীদের রাজনৈতিক দল NPD প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট Köhler বলেন, প্রতিটি মুক্ত সমাজেই কিছু না কিছু শত্রু থাকে৷ বিদেশী বৈরিতা এবং ইহুদিবাদ বিরোধীতা জার্মানি থেকে একেবারে মুছে যায়নি৷ হলোকাস্টের সাথে তুলনা করলে বলতে হবে এটি হচ্ছে জার্মানদের জন্য একটি লজ্জাকর ব্যাপার ৷ রাজনৈতিকভাবেই আমাদের দক্ষিণপন্হী এবং ইহুদিবাদ বিরোধীতা সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজতে হবে এবং এবিষয়ে আরো সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে৷

ফিলিস্তীনিদের সাথে সংঘাত প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট Köhler বলেন, শুধুমাত্র এ দুটি দেশই পারে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে৷জার্মানি শুধু সহযোগির ভূমিকা পালন করতে পারে৷তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দ্বন্দ্ব এবং সংঘাতের অবশ্যই সমাপ্তির প্রয়োজন, আত্মঘাতি বোমা হামলা ক্ষমার অযোগ্য একটি অপরাধ৷

যদিও জার্মানি এবং ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ তারপরেও প্রেসিডেন্ট Köhler -এর Knesset -এ জার্মান ভাষায় দেয়া ভাষণ নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়৷ Knesset -এর ডেপুটি স্পিকার হেমি ডরন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইহুদিদের এই সংসদে জার্মান ভাষা শোনা তাঁর পক্ষে একেবারেই অসম্ভব৷ নাত্ সী বাহিনীর হাতে নিহত ৬০ লক্ষ ইহুদির মধ্যে ডরনের দাদাও ছিলেন৷ স্বাস্হ্য মন্ত্রী ড্যানি নাভেহ Knesset -এজার্মান ভাষার ব্যাবহারটিকে অনুপযোগী এবং অযোগ্য বলে আখ্যা দেন৷ সংসদের স্পিকার রুভেন রিভলিন বলেন, ইসরায়েল বর্তমানে শক্তিশালী একটি দেশ এবং এর অতীত ভুলে যাওয়া আমাদের পক্ষে এত সহজ নয়৷ আমরা আমাদের অতীতকে ভুলে গিয়েছি এটা মনে করা মোটেই ঠিক হবে না৷

প্রেসিডেন্ট Köhler ইসরায়েল এবং জার্মানির মধ্যে সম্পর্ক আরো গভীর করার অনুরোধ করেন৷ তিনি বলেন ইসরায়েল এবং ইসরায়েলীদের প্রতি যে দায়িত্ববোধ জার্মানির আছে, জার্মানি তা সবসময়েই পালন করবে৷