1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান নির্বাচনে এসপিডি দলের প্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাভিন্দ্রা গুজ্জুলা

২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯

ভারতে বিয়ে মানেই এলাহি কান্ড৷ আর এমনই একটা মস্ত বিবাহমন্ডপ নতুন রঙ নিয়ে এলো জার্মানির নির্বাচন প্রচারাভিযানে৷

https://p.dw.com/p/JpEy
ব্রান্ডেনবুর্গছবি: picture-alliance/ dpa

কীভাবে ? এই তো সেদিন, হাতি, ঘোড়া, পায়রা আর বলিউড ধর্মী নাচের তালে তালে ছাদনা তলায় দাঁড়ালেন এবারের সংসদীয় নির্বাচনে সামাজিক গণতন্ত্রী বা এসপিডি দলের প্রার্থী ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাভিন্দ্রা গুজ্জুলা৷

৫৫ বছর বয়স্ক রাভিন্দ্রা ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যের বার্নিম এবং ম্যার্কিশ-ওডারলান্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ গত প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি ব্রান্ডেনবুর্গের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত৷ শুধু তাই নয়, রাভিন্দ্রাই জার্মানির প্রথম অশ্বেতাঙ্গ, যিনি মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ তাই এবার, তাঁর বিয়ের অনুষ্ঠানে সে অঞ্চলের সব মানুষের অবাধ অধিকার থাকায়, সে অনুষ্ঠানই হয়ে উঠেছিল রাভিন্দ্রার জন্য একরকম প্রচারাভিযানেরই নামান্তর৷ জার্মানির রাজনীতিতে একজন অশ্বেতাঙ্গ হিসেবে নিজের জায়গা করে নেওয়া কতোটা কষ্টকর ?

আদতে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে আসা ড. রাভিন্দ্রা জানান, ‘‘এখানকার রাজনৈতিক মঞ্চে প্রবেশ খুব একটা কষ্টসাধ্য নয়৷ কারণ, ৩৫ বছর জার্মানিতে বসবাস করার পর এবং জার্মান ভাষায় পারদর্শীতা অর্জনের পর, একজন মানুষ কিন্তু জার্মানদের মতোই চিন্তাভাবনা করতে শুরু করে৷ অচিরেই সেই ব্যক্তি হয়ে উঠেন জার্মানদেরই একজন৷ তখন তাঁর চলাফেরা, বাচনভঙ্গী - সবটাই একজন জার্মানের মতো হয়ে ওঠে৷''

ব্রান্ডেনবুর্গে বর্ণ বিদ্বেষের ঘটনা আখসারই ঘটে থাকে৷ অথচ রাভিন্দ্রা কিন্তু এটা মেনে নিতে রাজি নন৷ বর্ণ বিদ্বেষের প্রশ্ন তুলতেই, তাই তিনি নিজের উদাহরণ টানেন৷ বলেন রাজনীতির মঞ্চে নিজের সাফল্যের কাহিনী৷ জানান, কিভাবে তিনি প্রায় ৮২ শতাংশ ভোট পেয়ে আল্টেনব্যার্গের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ জানান, বর্তমানে তাঁর রাজ্য পরিষদের সদস্যপদের কথাও৷

তাঁর ব্যাপারে ব্রান্ডেনবুর্গ এসপিডি দলের চেয়ারম্যান গুনথার বাস্ক বলেন, ‘‘ব্রান্ডেনবুর্গে বর্ণ বিদ্বেষের ঘটনা নতুন নয়৷ কিন্তু বিদেশীদের জন্য বিশেষ বিশেষ নিষিদ্ধ জায়গা রয়েছে - এ কথা আমি মানতে পারছি না৷ তবে কোন বিদেশী যদি আমায় বলেন যে, তারা কয়েকটি বিশেষ অঞ্চলে যেনে ভয় পান - সে কথা আমি আমার যে একেবারে বোধগম্য হয় না - তা নয়৷ কিন্তু, নাৎসিদের বিরুদ্ধাচারণ করলে, এ ধরণের ঘটনা কিন্তু একজন সামাজিক গণতন্ত্রী বা খ্রীস্টীয় গণতন্ত্রীর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে৷ আমি বরং বলবো যে, রাভিন্দ্রা গুজ্জুলা প্রার্থী হিসেবে সত্যিই উত্তম৷ এবং আমরা তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছি, তাঁর কাজ দেখে৷ তিনি একজন অশ্বেতাঙ্গ বলে নয়৷''

এছাড়া, জার্মানির সংসদ নির্বাচনে তাঁর প্রার্থীতা অশ্বেতাঙ্গদের জন্য যে একটি নতুন দিকের উন্মোচন করেছে, সে কথা জানাতে ভোলেন না রাভিন্দ্রা গুজ্জুলাও৷ তিনি জানান, এ বছর ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে এসপিডি-র সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে বামপন্থী দল 'ডি লিঙ্কে'-র৷ তাই আল্টেনব্যার্গ থেকে বার্লিন পর্যন্ত রাভিন্দ্রা ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডাগমার এঙ্কেলমান-এর ছবি সহ পোস্টার পড়ে গেছে ইতিমধ্যেই৷ রাভিন্দ্রার কথায়, লোকে যাই বলুক না কেন, মিস ব্রান্ডেনবুর্গ বলে পরিচিত জার্মান বংশোদ্ভূত সুন্দরী সাংসদ ডাগমার-এর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা যে তাঁর নিজের থেকে অনেকাংশেই বেশি - তা বলাই বাহুল্য!

তবে নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক ভারতীয় সংস্কৃতিকে চিরতরে দূরে না ঠেলে দিলেও রাভিন্দ্রা কিন্তু এতোদিনে পুরোপুরি জার্মানই হয়ে উঠেছেন৷ তা না হলে, জয়ের আনন্দ অথবা হারের দুঃখ কি আর তিনি বিয়ার পান করেই পালন করতে চাইবেন ?

প্রতিবেদক: দেবারতি গুহ

সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার