জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবেই সহিংস অ্যাকশনে গেল জামায়াত-শিবির ও তাদের সহযোগীরা৷ ব্লগে ইসলামের বিরুদ্ধে কথিত কটূক্তির কথা বলে তাদের ভাষায় ‘মুরতাদ-নাস্তিকদের' ফাঁসির দাবিতে আগেই শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর কর্মসূচি দেয়৷ আর আজ জুম্মার নামাজের আগেই তারা তাণ্ডব শুরু করে৷
দুপুর ১২টার পর পরই ঢাকার বায়তুল মেকাররম জাতীয় মসজিদে তারা সমবেত হয়ে উস্কানিমুলক স্লোগান দেয় এবং পুলিশকে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে৷ পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করতে মসজিদের বাইরের গেট আটকে দিলে তার গেট ভেঙে সামনের রাস্তায় চলে আসে৷ হামলা চালায় সাংবাদিকদের ওপর৷ পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ৷ এখানে ৫ জন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন৷
শাহবাগ বিরোধীরা ইটপাটকেল ছাড়াও হাতবোমা এবং ককটেল ছুড়ে মারে৷ এরপর তাদের সঙ্গে শুরু হয় পুলিশের গোলাগুলি৷ তারা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের দিকে এগোতে থাকলে সংঘর্ষ পল্টন হয়ে প্রেসক্লাব পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে৷ ককটেল, গুলি আর টিয়ার গ্যাসের সেলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়৷
প্রায় একই সময়ে ঢাকার কাঁটাবনে শাহবাগ বিরোধীরা রাস্তায় নামে৷ তারাও শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের দিকে এগোনোর চেষ্টা করে৷ সেখানেও পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়৷ আহত হন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা৷
জামায়াতের নেতা-কর্মীরা নানা নামে, নানা ব্যানারে ঢাকার কারওয়ান বাজার , মিরপুর, চানখারপুলসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নাশকতার চেষ্টা করে৷ পুলিশ জানায়, তাদের এই নাশকতার ষড়যন্ত্রের খবর তারা আগেই জানতে পেরেছিলেন৷ কিন্তু নামাজ শুরুর অনেক আগেই তারা বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে পড়ে৷
বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় জামায়াতের হামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক আলী আহমেদ ডয়চে ভেলেকে জানান, জামায়াত-শিবিরের এই হামলা পরিকল্পিত৷ তারা আগে থেকেই হামলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল৷
ঢাকার বাইরে চট্টগামের প্রেসক্লাবে হামলা হয়েছে৷ তাদের হামলায় পুলিশ এবং সাংবদিকসহ ২০ জন আহত হয়েছেন৷ বগুড়া, রাজশাহী, সিলেট, চাঁদপুরে গণজাগরণ মঞ্চে হামলা চালায় তারা৷ হামলা চালায় সিলেট শহীদ মিনারে৷ সেখানে একজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷ গাইবন্ধায় ২ জন এবং ঝিনাইদহে জাগরণমঞ্চ বিরোধীদের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন৷
এদিকে এই তাণ্ডবের পর শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে লোকজন আবার ভিড় করতে শুরু করেছেন৷ তারা দাবি তুলেছেন, কোন নির্দিষ্ট সময় নয় – দিন রাত, ২৪ ঘণ্টা তারা এখানে অবস্থান করতে চান৷ হামলাকারী জামায়াত সহ ১২টি ইসলামি দল রোববার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে৷