জলেই লুকিয়ে বিপদ
৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮উত্তর জার্মানির লোয়ার স্যাক্সন অঞ্চলের ১২টি জায়গার জলে ভয়াবহ এই প্যাথোজেন পাওয়া গেছে৷ গবেষকেরা জানিয়েছেন, এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া শরীরে একবার প্রবেশ করলে বহু অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না৷ কারণ, এ ধরনের প্যাথোজেন এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করে, অ্যান্টিবায়োটিককে যা নিস্তেজ করে দেয়৷
গবেষকেরা লোয়ার স্যাক্সনি অঞ্চলের থেকে জল সংগ্রহ করে তা পাঠিয়েছিলেন ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং জার্মান সেন্টার ফর ইনফেকশন রিসার্চে৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিটি অঞ্চলের জলেই ওই ধরনের ব্যাকটেরিয়া আছে৷ সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক তো বটেই, জীবনদায়ক কোনো কোনো অ্যান্টিবায়োটিককেও অকেজো করে দিচ্ছেএই প্যাথোজেনগুলি৷ কিন্তু কীভাবে এর সঙ্গে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে এখনো কেউ আলো দেখাতে পারেননি৷
গবেষণার ফলাফল জেনে বিশিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, পরিবেশে প্যাথোজেন অনেক আগে থেকেই ছিল৷ কিন্তু এত দ্রুত তা এতটা বৃদ্ধি পেয়েছে, তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি৷ বস্তুত, এ ধরনের প্যাথোজেনকে প্রাণনাষক বলেই মনে করছেন তাঁরা৷ তাঁদের ধারণা, দ্রুত এই প্যাথোজেনের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে৷ কিন্তু একই সঙ্গে তাঁদের আক্ষেপ, জলদূষণ নিয়ে ইদানীং বহু গবেষণা হলেও প্যাথোজেনের উপস্থিতি কার্যত দেখাই হয় না৷ কারণ, প্যাথোজেনকে এতদিন পর্যন্ত সমস্যা বলে মনেই করা হতো না৷
উত্তর জার্মানির দু'টি বিখ্যাত সাঁতার কাটার জায়গা হলো সুইশেনআনার এবং ট্যুফেলডার লেক৷ দুঃখজনক বিষয় হলো, এই দু'টি লেকেই প্যাথোজেন পাওয়া গিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, বিভিন্ন নদী এবং ঝর্ণার জলেও এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে৷
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, স্বাস্থ্যবান মানুষের শরীরে প্যাথোজেন থাকলেও তা টের পাওয়া যায় না৷ কিন্তু তিনি যখন শিশু বা বৃদ্ধের সঙ্গে শারীরিকভাবে মেলামেশা করেন, তখন তা ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ অসুস্থ মানুষের শরীরে খুব সহজেই এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া চলে যেতে পারে৷ এবং একবার তা চলে গেলে কোনো অ্যান্টিবায়োটিকই আর কাজ করবে না৷
বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে জার্মানির পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রক ইতিমধ্যেই ব্যাকটেরিয়াটিকে নিয়ে আরো গবেষণার কথা জানিয়েছেন৷ দ্রুত যাতে এই সমস্যার সমাধানে পৌঁছানো যায়, তার জন্য গবেষকদের কাছে আর্জিও জানানো হয়েছে৷
নাটালি ম্যুলার/এসজি