প্রোমের জীবনে পরিবর্তন
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৩প্রোমের জীবনে এত আনন্দের সুযোগ এনে দিয়েছে একটি বাঁধ, যেটা তাঁর বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত৷ এটা কম্বোডিয়ার সরকারের আটটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি, যেগুলো বাস্তবায়ন করছে কয়েকটি চীনা কোম্পানি৷
বিদ্যুৎ পেয়ে খুব খুশি প্রোম৷ তিনি বলছেন, ‘‘আমি খুব খুশি৷ এখন আমার একটা টিভি আছে এবং ইস্ত্রি করার সময় আর কয়লা ব্যবহার করতে হয় না৷ আমার সন্তানেরা দর্জির কাজ করে৷ তারাও এখন বৈদ্যুতিক সেলাই মেশিন ব্যবহার করতে পারে৷ সবকিছুই অনেক সহজ হয়ে গেছে৷''
জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের মাধ্যমে কম্বোডিয়া তার জ্বালানি সমস্যার সমাধান করতে চায়৷ কারণ দেশটি তার প্রয়োজনীয় জ্বালানির অধিকাংশই আমদানি করে, যার বেশিরভাগই হচ্ছে তেল৷
প্রোমের বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কেন্দ্রটি কামচায় নদীর তীরে অবস্থিত৷ সেখান থেকে মূলত রাজধানী নম পেন-এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়, যেখানে পনেরো লক্ষেরও বেশি লোকের বাস এখানে৷ কিন্তু বিদ্যুতের অভাব ও অধিক মূল্যের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ লোডশেডিং-ও অস্বাভাবিক নয়৷
কিন্তু বাঁধ তৈরিতে বিনিয়োগ ভালো উদ্যোগ কিনা, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন সে দেশের বিরোধী দলীয় নেতা সোন চায়৷ সরকার ও চীনা কোম্পানির বিরুদ্ধে তাঁর অনেক অভিযোগ৷ চায় বলেন, ‘‘প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে, যেন সরকারের কিছু দুর্নীতিপরায়ন কর্মকর্তা ও চীনা ব্যবসায়ীরা নিজেদের পকেটে কিছু ভরতে পারে৷ চীনারা এখানে দুর্নীতি করছে, আর কনট্র্যাক্টগুলো পেতে চীনা সরকারের প্রভাব খাটাচ্ছে৷ ফলে কম্বোডিয়ার অনেক প্রকল্পই যে অনেক বেশি ব্যয়বহুল হচ্ছে, সেটা পরিষ্কার৷''
পরিবেশকর্মী কং চিট-ও তাই মনে করেন৷ বিশেষ করে কম্বোডিয়ার আরেক রাজ্য কো কং-এ প্রস্তাবিত স্টুং টাটাই বাঁধের কারণে পরিবেশ ও এলাকার জনগণের কী পরিমাণ ক্ষতি হবে, তার হিসাব অনেক কম করে দেখানো হয়েছে বলে তাঁর বিশ্বাস৷
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বলছে, নতুন নতুন বাঁধ নির্মাণ কম্বোডিয়ার ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে পারবেনা৷ তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ সব বড় বড় প্রকল্প থেকে কেউ যদি লাভবান হয়ে থাকে, তবে সেটা চীনা কোম্পানিগুলি৷