1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জনসমর্থন যাচাই করছেন খালেদা জিয়া!

২৯ অক্টোবর ২০১৭

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতেই শুধু কক্সবাজারের যাননি৷ তিনি জনসমর্থনটাও যাচাই করছেন৷ আর সেটা শাসক দল আওয়ামী লীগও আঁচ করতে পেরেছে৷ তাই খালেদার গাড়িবহরে হামলা নিয়ে চরছে নানামুখী আলোচনা৷

https://p.dw.com/p/2mhjd
Bangladesh Khaleda Zia
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. H. Opu

খালেদা জিয়া তাঁর গাড়িবহর নিয়ে ঢাকা থেকে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন৷ এরপর ফেনীর ফতেপুর এলাকায় তাঁর গাড়িবহরের সঙ্গে থাকা সাংবাদিকদের গাড়ির ওপর হামলা হয়৷ সেখানে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়৷ এতে তিনজন সাংবাদিক আহতও হন৷

পরবর্তীতে চট্টগ্রামের মীরসরাই এলাকায়ও হামলার ঘটনা ঘটে৷ তবে রবিবার চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি৷ আর আগের দিনের হামলার জন্য বিএনপি শাসকদল আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে৷ রবিবার সকালে চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি'র মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘এই হামলা পরিকল্পিত৷ এতে সাংবাদিকেরাও আহত হয়েছেন৷ এই হামলা কারা করেছে তার সাক্ষী সাংবাদিকরাই৷'' 

Sakil.mp3 - MP3-Stereo

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিএনপির চেয়ারপার্সন মানবিক কর্মসূচিতে যাচ্ছেন৷ কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে তিনি ত্রাণ বিতরণ করবেন৷ রাস্তায় হাজার হাজার নেতাকর্মী তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন৷ এসব জায়গায় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি কোনো বক্তব্য দেননি৷ অথচ ওনার গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে৷''

একইদিন সকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘সংবাদপত্রে দেখলাম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা৷ কিন্তু তিনি ও তাঁর গাড়ি অক্ষত আছে৷ তাহলে হামলাটা হলো কোথায়? কিভাবে হলো?''

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে যে, সরকার চাচ্ছিল খালেদা জিয়া যেন সরাসরি কক্সবাজার চলে যান৷ পথে কোনো জমায়েত বা সংবধর্না যাতে না হয়৷ আর সেজন্য ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে যেসব এলাকায় খালেদা জিয়া থামতে পারেন এবং তাঁকে সংবর্ধনা দেয়া হতে পারে সে সব এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল৷ 

এদিকে, বিএনপি'র একাধিক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফেরার পর নানা কৌশলে তাঁর বক্তব্য সাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন৷ আর একারণেই তিনি জিয়া অর্ফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে বিস্তারিত কথা বলছেন৷ আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি দু'দিন আদালতে কথা বলেছেন৷ আরো বলবেন৷ আর তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনে দেয়া বক্তৃতায় বাংলাদেশের রাজনীতির নানা দিক উঠে আসছে৷ নিজেরও মামলা ও পরিবারের ওপর নানা হয়রানি ছাড়াও শেখ হাসিনা প্রসঙ্গেও কথা বলছেন তিনি৷ এটা তাঁর একটা কৌশল৷

বিএনপি সূত্রে আরো জানা গেছে যে, আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপি এখনই প্রস্তুত হচ্ছে৷ দলটি এবার ‘পজিটিভ' আন্দোলন করতে চায়৷ নির্বাচনের আগে বিএনপি নির্বাচরকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা প্রকাশ করবে৷ এবং সেই রূপরেখা বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনে যাবে৷

খালেদা জিয়ার গাড়ি বছরের সঙ্গে থাকা অনলাইন নিউজ পেপার ‘বাংলা ট্রিবিউনে'র সিনিয়র রিপোর্টার সালমান তারেক শাকিল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘চট্টগ্রাম খেকে কক্সবাজারের সড়কের দু'পাশে বিএনপি'র শত শত নেতাকর্মী খালেদা জিয়া যাত্রাপথে দাঁড়িয়ে ছিল৷ তখন খুব ধীরগতিতে খালেদা জিয়ার গড়ি বহর এগোয়৷ নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা যায় নির্বাচনি আমেজ৷ তারা অনেকেই দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ এর আগে শনিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে পথেও একই পরিস্থিতি দেখা যায়৷''

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়া আসলে দেশের মানুষের মনোভাব জানতে চেয়েছেন এই সুযোগে৷ আর সেটা তিনি এরইমধ্যে বুঝতে পেরেছেন৷ নেতাকর্মীরা সাহস নিয়ে মাঠে নামলে নির্বাচনের আগেই বিএনপি চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন তিনি৷

উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যার পর খালেদা জিয়া কক্সবাজার শহরে পৌঁছলেও তিনি ত্রাণ বিতরণ করবেন সোমবার সকালে৷ কক্সবাজারের উখিয়ায় চারটি ক্যাম্পে তাঁর ত্রাণ বিতরণের কথা রয়েছে৷