1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
প্যানোরামাকেনিয়া

চুমার স্টুডিওতে একদিন

১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চুমা আনাগবাদো কাঠের শিল্পের সঙ্গে নির্ভুল প্রযুক্তির মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন কিছু তৈরির চেষ্টা করেন৷ তিনি তার সৃজনশীল কাজের প্রক্রিয়া দেখাতে নাইরোবিতে তার স্টুডিওতে আমন্ত্রণ জানান ডয়চে ভেলেকে৷

https://p.dw.com/p/4kbNL
কেনিয়ার শিল্পী চুমা আনাগবাদো
কাঠের শিল্পের সঙ্গে নির্ভুল প্রযুক্তির মিশ্রণ ঘটিয়ে নতুন কিছু তৈরির চেষ্টা করেন কেনিয়ার শিল্পী চুমা আনাগবাদো ছবি: DW

নাইরোবিভিত্তিক নাইজেরীয় শিল্পী চুমা আনাগবাদো ফিউচারিস্টিক, ডেটা ড্রিভেন ডিজাইনকে বাস্তব রূপ দেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার সৃজনশীল প্রক্রিয়ার এক প্রয়োজনীয় উপাদান প্রযুক্তি৷ গল্প তৈরির প্রয়োজনে আফ্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো আমার কাজের মধ্যে পুনরায় ফুটিয়ে তুলি৷ এমন মডেল যেগুলো মানুষ দেখবে এবং গর্ববোধ করবে৷''

চুমা ডিজিটাল ড্রয়িংয়ের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন৷ তাতে জটিল সব লাইন থাকে যেগুলো তথ্যনির্ভর৷ নাইরোবির অন্যতম প্রসিদ্ধ ডিজাইন হাবে প্রদর্শিত তার সর্বশেষ কাজে বিপন্ন প্রাণী সম্পর্কিত রেডিও কলার কোঅর্ডিনেটস ব্যবহার করা হয়েছে৷ বুনো সিংহ এবং মানুষের জিপিএস লোকেশন তার কাজের রূপরেখা গড়েছে৷   

এনএফটি শিল্পী চুমা আনাগবাদো বলেন, ‘‘কালো রেখাগুলো যেখানে কমলা রেখার সঙ্গে মিলেছে সেখানে সংঘাতের বার্তা দিচ্ছে৷ এটা এক সামাজিক সমস্যা তুলে ধরেছে যা আমরা মোকাবিলা করছি৷ তাহচ্ছে এই সিংহগুলো রক্ষা করা৷ সেকথাই ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে এটি৷''

কিন্তু এই জটিল শিল্পকর্ম কীভাবে প্রস্তুত হয়? হোম স্টুডিওতে ধাপগুলো বুঝিয়েছেন চুমা৷ তিনি বলেন, ‘‘যে মুহূর্তে আমি ডিজিটালভাবে শেষ রেখাটা টানি এবং ফাইলটাকে ভেক্টর ফরমেটে রূপান্তর করে মেশিনে পাঠাই ও মেশিনে প্রোগ্রামিং করি এবং বিটগুলো নড়তে শুরু করে, তখন ঈশ্বরের মতো অনুভূতি হয় যে আপনার সৃষ্টি - এক্ষেত্রে আমার সৃষ্টি, প্রাণ পেতে শুরু করেছে, ঠিক না?''

‘‘এরপর ডিজিটাল ফাইলটি, যেটি আসলে আমার তৈরি ড্রয়িং, অনন্য এবং পরিবর্তনযোগ্য নয়, এমন টোকেন হিসেবে ব্লকচেইনে দেয়া হয়৷ আমার শিল্পকর্মের অকৃত্রিমতার সার্টিফিকেট হিসেবে কাজ করে আমার এনএফটি৷ এরপর আপনি সেটি স্ক্যান করলে লাইভ দেখতে পান,'' যোগ করেন তিনি৷

প্রযুক্তি ও শিল্পের মেলবন্ধন

এটা অনেকটা প্রকৃত বিশ্ব এবং ডিজিটাল বিশ্বের মধ্যকার রেখাটি মুছে ফেলে এক বিশ্ব গড়ার মতো৷ আমি আমার কাজটা সেই জায়গাতে রেখেছি৷

তার বাড়ি থেকে বহু দূরে ওয়ার্কশপে ডিজিটাল এবং ফিজিক্যাল ওয়ার্ল্ডের মিলন ঘটে৷ চুমা আনাগবাদো বলেন, ‘‘হাতে আঁকার পরের ধাপ এটি৷ এই ধাপে আমার ড্রয়িংটিকে স্পর্শকাতর উপাদান, যেমন আমি কাঠ ব্যবহার করছি, ফুটিয়ে তোলা হয়৷ নির্ভুল কম্পিউটারনির্ভর প্রযুক্তির সহায়তায় মেশিন কাজটি করে৷''

চুমার কাজে ষাট লাখের মতো রেখাও থাকতে পারে৷ সাধারণত একটি কাজ সম্পন্ন করতে মেশিনের ১৮ ঘণ্টার মতো সময় লাগে৷ তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু আমি আমাদের ধরিত্রি নিয়ে ভাবি, আমি কাঠ সংগ্রহের টেকসই উপায় ব্যবহার করি৷ আমি দেখি যে এগুলো টেকসই জঙ্গল থেকে এসেছে কিনা৷ এই ধাপের পর আমি এগুলোকে আমার স্টুডিওতে নিয়ে যাই এবং হাতে পেইন্ট করি৷''

গ্লিফের মতো প্যাটার্নগুলো যা চুমা কাজে লাগিয়েছেন আসলে নাইজেরিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের মোটিফ৷ ইগবো নারীরা কয়েক প্রজন্ম ধরে উলি প্রতীক ভবন এবং মানবদেহ সাজাতে ব্যবহার করছেন৷

এনএফটি শিল্পী চুমা আনাগবাদোর কথায়, ‘‘আমি আমরা পূর্বপুরুষদের তৈরি আসল মোটিফও নিয়েছি এবং সেগুলোর ডিজিটাল রূপান্তর ঘটিয়েছি৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমি আফ্রিকান হিসেবে আমাদেরকে এমন জায়গায় নিতে চাচ্ছি যা নিয়ে গর্ববোধ করতে পারি৷ আমরা যাতে আমাদের সত্ত্বার তারিফ করতে পারি৷ কারণ আমাদের অনেকে এমন পরিবেশে বড় হয়েছে যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ বা কালো যেকোনো কিছু নিচুশ্রেণীর হিসেবে বিবেচিত হয়েছে৷ আমার কাজ সেই সামাজিক সমস্যার সমাধান করতে চাচ্ছে৷''

চুমার শিল্পকর্ম ইতোমধ্যে অন্তত পাঁচটি দেশে প্রদর্শিত হয়েছে৷ তিনি যেখানে তার কাজের বিকাশ ঘটাচ্ছেন, তাতে শীঘ্রই এগুলো আপনার কাছের গ্যালারিতেও পৌঁছে যেতে পারে৷

প্রতিবেদন: ডানিয়েল প্লাফকার, স্যামসন অ্যাডেলেকে/এআই