1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের প্রতি ‘নরম’ মনোভাব দেখিয়ে কোণঠাসা শলৎস

৩১ অক্টোবর ২০২২

জার্মানি তথা ইউরোপে চীন সম্পর্কে সংশয় বেড়ে চললেও খোদ জার্মান চ্যান্সেলরের ভূমিকা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে৷ শলৎসের চীন সফরের আগে জার্মানির শাসক জোট ও শিল্পবাণিজ্য মহলে কড়া পদক্ষেপের ডাক শোনা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4Is4u
জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বর্তমান পরিস্থিতি ও যাবতীয় সংশয় সত্ত্বেও চীনের প্রতি অত্যন্ত নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে৷
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস (ফাইল ফটো)ছবি: Michael Varaklas/AP Photo/picture alliance

রাশিয়ার উপর লাগামহীন নির্ভরতার পরিণাম কী হতে পারে, ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে জার্মানি তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে৷ বিশেষ করে সে দেশ থেকে গ্যাসসহ জ্বালানি আমদানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জার্মানিকে মরিয়া হয়ে দ্রুত বিকল্পের সন্ধান করতে হচ্ছে৷ সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে চীনের মতো একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও জার্মানির রাজনৈতিক ও শিল্পবাণিজ্য মহলে চরম সতর্কতার মনোভাব দেখা যাচ্ছে৷ কিন্তু বার্লিনের ক্ষমতাসীন জোট সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে এমন বোধোদয় ঘটলেও খোদ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের ভূমিকা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে৷

চ্যান্সেলর শলৎস বর্তমান পরিস্থিতি ও যাবতীয় সংশয় সত্ত্বেও চীনের প্রতি অত্যন্ত নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠছে৷ প্রথমে নিজের শহর হামবুর্গে একটি বন্দর প্রকল্পে চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত কোম্পানি ‘কসকো'-র অংশগ্রহণ নিয়ে মন্ত্রিসভার জোরালো বিরোধিতা উপেক্ষা করে তিনি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা সেই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন৷ অংশীদারিত্বের মাত্রা কমানোর বদলে তিনি সেই কোম্পানিকে পুরোপুরি প্রকল্প থেকে বাইরে রাখার পক্ষে সওয়াল করেন৷

এবার চ্যান্সেলর হিসেবে শলৎস প্রথমবার চীন সফরে যাবার আগেও তার ভূমিকা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চীনের প্রতি জার্মানি তথা ইইউ-র নীতি কেমন হওয়া উচিত, সে বিষয়ে কোনো ঐকমত্য স্থির করার আগেই শুক্রবার বেইজিং-য়ে যাচ্ছেন শলৎস৷ এই প্রশ্নে নিজের সরকার ও ব্রাসেলসের সঙ্গে সমন্বয়ের তেমন কোনো উদ্যোগেরও লক্ষণ দেখছেন না সমালোচকরা৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দুজনেরই বেইজিং সফর পরিকল্পনার কোনো তাগিদও শলৎসের মধ্যে দেখছেন না তাঁরা৷

এমন প্রেক্ষাপটে জার্মানিতে চীনের ভূমিকা খর্ব করার নানা বিচ্ছিন্ন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে৷ জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার চীনের প্রভাব সীমিত রাখতে আইনি পদক্ষেপের ঘোষণা করেছেন৷ তাঁর মতে, বেইজিং জার্মানিতেও নির্ভরতা সৃষ্টি ও প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে৷ সরকারের আর এক শরিক সবুজ দলের সভাপতি ওমিদ নুরিপুর বলেন, দেশের জরুরি অবকাঠামো রক্ষায় বর্তমান আইনে অসংখ্য ফাঁকফোকর রয়েছে৷ তিনি অবিলম্বে আইন করে সেই দুর্বলতা দূর করার ডাক দিয়েছেন৷ এমনকি শলৎসের নিজের দল এসপিডি-র সহ সভাপতি লার্স ক্লিংবাইল বলেন, জার্মানি তথা ইউরোপের নিরাপত্তার জন্য প্রাসঙ্গিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্র থেকে চীনকে দূরে রাখা উচিত৷ তার মতে, ইউরোপে ডিজিটালাইজেশন, জরুরি অবকাঠামো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, তথ্য সংরক্ষণ ও কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো ক্ষেত্রে চীনের কোনো ভূমিকা থাকতে পারে না৷ তাছাড়া চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কেও এসপিডি দলের স্পষ্ট অবস্থান থাকা উচিত৷

জার্মানির শিল্পজগতের কেন্দ্রীয় সংগঠন শলৎসের উদ্দেশ্যে চীনের উপর জার্মানির একতরফা নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে৷ বিশেষ করে খনিজ পদার্থের ক্ষেত্রে নির্ভরতা কমাতে দুর্দিনের জন্য এমন খনিজের ভাণ্ডার রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই বলে সংগঠনের প্রধান মনে করিয়ে দিয়েছেন৷ জার্মানির শিল্প ও বাণিজ্য চেম্বারও দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ন্যায্য ভারসাম্যের ডাক দিয়েছে৷ বিশেষ করে চীনের আমলাতন্ত্রের দীর্ঘ বাধার কারণে জার্মান কোম্পানিগুলি সে দেশে ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না বলে সংঘের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)