চীনে সংখ্যালঘুদের হত্যার পর অঙ্গ বিক্রি!
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯চীনের জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছিল৷
ওই ট্রাইব্যুনালের কাউন্সেল হামিদ সাবি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলকে (ইউএনএইচআরসি) জানিয়েছেন, বহু বছর চীনজুড়ে জোর করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং আজও তা অব্যাহত আছে৷ নিষিদ্ধ ঘোষিত ফালুন গং-এর বন্দি এবং উইগুর সংখ্যালঘুদের এই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়, এতে লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷
‘‘শিকারের জন্য শিকার, মৃত্যুর জন্য মৃত্যু, হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গ জীবিত অবস্থায় কেটে ফেলা... নির্দোষ, নিরীহ মানুষ এই শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ গণ-অত্যাচারের শিকার হয়েছেন৷’’
সাবি বলেন, ‘‘জীবন বাঁচাতে অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটি বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক বিজয়, কিন্তু দাতাকে হত্যা করা অপরাধ৷'' নির্দোষ ও নিরীহ মানুষদের ধরে তাঁদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করাকে এ শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ গণনৃশংসতা বলে মত দেন তিনি৷
ট্রাইব্যুনালের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বন্দি এবং ফালুন গং ও উইগুর সংখ্যালঘুদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পেয়েছে তারা৷ দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চীন সরকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর লোকদের হত্যা করে তাঁদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে বিক্রি করছে৷
বন্দি ও সংখ্যালঘু ছাড়াও জীবিত বা মৃত ব্যক্তির কিডনি, লিভার, হার্ট, ফুসফুস, কর্নিয়া এবং ত্বকের চামড়া বিক্রির জন্য অপসারণ করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷
বেইজিং এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে৷ তারা বলছে, ২০১৫ সাল থেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিতদের অঙ্গও তারা আর ব্যবহার করে না৷
আধ্যাত্মিক গোষ্ঠী ফালুং গংকে ২০ বছর আগে নিষিদ্ধ করা হলে এর ১০ হাজার সদস্য বেইজিংয়ে নীরব প্রতিবাদ করতে আসেন৷ এরপর এদের বেশিরভাগকে জেলে পাঠানো হয়৷
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জেফ্রি নিস বলেন, সরকার, জাতিসংঘ এবং এর সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা এটি প্রমাণের জন্য আর অন্ধ দৃষ্টি রাখতে পারবে না৷
সাবেক যুগোস্লাভিয়ার রাষ্ট্রপতি স্লোবোডান মিলোসেভিকের বিচারের নেতৃত্ব দেওয়া প্রসিকিউটর নিস বলেন, ট্রাইব্যুনালের অনুসন্ধানের পর এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার৷
চীনা নাগরিকদের পাশাপাশি প্রচুর বিদেশি চীনে গিয়ে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেন৷ লন্ডনে চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে বলেন, সরকারি বিধিবিধানে শর্ত রাখা হয়েছে মানব অঙ্গ দান স্বেচ্ছাসেবায় এবং বিনা অর্থে হতে হবে৷
এসআই/এসিবি (থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন)