চীনা কনসুলেট বন্ধের নির্দেশ অ্যামেরিকার
২৩ জুলাই ২০২০অ্যামেরিকার অভিযোগ, হিউস্টনের চীনা কনসুলেটের অফিসাররা বানিজ্যিক চরবৃত্তি এবং ট্রাম্প প্রশাসনের বৈজ্ঞানিক তথ্য চুরি করছিলেন। তাই হিউস্টনে চীনা কনসুলেট শুক্রবারের মধ্যে বন্ধ করে দিতে হবে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পেরহুমকি, প্রয়োজনে অন্য রাজ্যেও চীনা কনসুলেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।
অ্যামেরিকার এই সিদ্ধান্তে প্রবল ক্ষুব্ধ চীন। তাদের দাবি, অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে চীনও প্রত্যাঘাত করবে। সাধারণত, এই সব ক্ষেত্রে প্রত্যাঘাত মানে চীনও তাঁদের দেশে অ্যামেরিকার একটি কনসুলেট বন্ধ করে দেবে। উহান সহ চীনের পাঁচটি শহরে অ্যামেরিকার কনসুলেট আছে।
হিউস্টনের পুলিশের অভিযোগ, কনসুলেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ পাওয়ার পরই সেখানে নথিপত্র পোড়ানো হচ্ছে। কনসুলেট অফিসে আগুনের শিখা দেখে দমকল ও পুলিশ কর্মীরা সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের দাবি, অফিস বন্ধ করে চলে যাওয়ার আগে অনেক নথি এই ভাবে পুড়িয়ে যাচ্ছেন চীনের কূনীতিকরা।
হঠাৎ, এইভাবে হিউস্টনের চীনা কনসুলেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো তা নিয়ে অ্যামেরিকায় প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নেওয়া হলো, যখন ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। তাঁর প্রচারের দায়িত্বে থাকা লোকজন তাই কি মরিয়া হয়ে নজর চীনের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন?
তবে অ্যামেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের পলিসি ফর ইস্ট এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের ডেভিড আর স্টিলওয়েল নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, হিউস্টনের চীনা কনসুলেট অতীতেও অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করেছে। আর এটা হলো গবেষণা চুরির কেন্দ্র। গত ৩১ মে কনসাল জেনারেল সহ অন্য কূটনীতিকরা ভুয়ো কাগজপত্র দিয়ে কয়েকজন চীনা পর্যটককে বিশেষ বিমানে নিয়ে আসছিলেন। তাঁরা ধরা পড়ে যান। গত ছয় মাস ধরে অ্যামেরিকা থেকে বৈজ্ঞানিক তথ্য চুরির প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। সম্ভবত তাঁরা করোনা ভ্যাকসিন বানানোর জন্য এই কাজ করছে। তবে এর পক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি স্টিলওয়েল। এই সংবাদপত্রের রিপোর্ট বলছে, অতীতে এফবিআই বহুবার হিউস্টন কনসুলেটের বিরুদ্ধে বৈজ্ঞানিক তথ্যচুরি নিয়ে তদন্ত করেছে।
মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও সম্প্রতি চীনবিরোধী সুর চড়া করেছেন। তিনি কোপেনহেগেনে বলেছেন, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে চীনের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে অ্যামেরিকা।
অ্যামেরিকায় চীনের আরও চারটি কনসুলেট আছে শিকাগো, নিউ ইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকো এবং লস এঞ্জেলেসে। এ ছাড়া ওয়াশিংটনে দূতাবাস আছে।
হিউস্টনের কনসুলেটকে বলা হয়, উহানের সিস্টার কনসুলেট। উহানে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর সেখান থেকে সব কর্মীকে সরিয়ে নেয় অ্যামেরিকা। মনে করা হচ্ছে, হিউস্টনের প্রতিক্রিয়ায় উহানের অ্যামেরিকার কনসুলেট বন্ধ করে দিতে পারে চীন।
জিএইচ/এসজি(এপি, ডিপিএ)