1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনকে পছন্দ করছেন না বহু মানুষ

৮ অক্টোবর ২০২০

সম্প্রতি একটি সমীক্ষার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ চীনকে পছন্দ করছেন না। আর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তলানিতে।

https://p.dw.com/p/3jbEK
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Solanki

পৃথিবী জুড়ে চীনের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি একটি মার্কিন সংস্থার রিপোর্টে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। ১৪ টি দেশে সমীক্ষা চালিয়েছিল পিউ সার্ভে নামক ওই সংস্থা। দেখা গিয়েছে, নয়টি দেশের জনগণ বিভিন্ন বিষয়ে চীনের বিরুদ্ধে মতামত প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বহু দিনের মধ্যে এ ভাবে চীনের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে ওঠেনি। এও এক ঐতিহাসিক ঘটনা।

করোনা ভাইরাস থেকে শি জিনপিংয়ের জনপ্রিয়তা, সমস্ত বিষয়েই সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল। বিশ্বের উন্নত অর্থনীতির দেশগুলির জনগণের কাছে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষ করোনা নিয়ে চীনের কার্যকলাপকে ভালো চোখে দেখেননি। অধিকাংশ মানুষই মনে করছেন, চীন আরa ভালো ভাবে করোনা পরিস্থিতি সামলাতে পারতো। এবং তারা সময় মতো ব্যবস্থা নিলে গোটা বিশ্বে তা ছড়িয়ে পড়তো না।

সমীক্ষা বলছে, অস্ট্রেলিয়ার ৮১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বিশ্ব রাজনীতিতে চীন যে অবস্থান নিয়েছে, তা ঠিক নয়। গত বছরের চেয়ে যা ২৪ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালেও একই ধরনের সমীক্ষা করেছিল সংস্থাটি। সেখানেও অস্ট্রেলিয়ার মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। চীন সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার মানুষ নিজেদের মতামত অনেকটাই বদলেছেন বলে সংস্থাটির রিপোর্টে বলা হয়েছে। বহু মানুষ চীনের বিপক্ষে চলে গিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনা ছাড়াও সাউথ চায়না সমুদ্র নিয়েও অস্ট্রেলিয়ার মানুষ চীনের উপর ক্ষুব্ধ। সেখানে চীনের আগ্রাসন অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ ভালো চোখে দেখছেন না।

অ্যামেরিকাতেও সাধারণ মানুষের মধ্যে চীন বিরোধিতা গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যুক্তরাজ্যেও একই ভাবে চীন বিরোধী অভিমত ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জার্মানিতে ৭১ শতাংশ মানুষ চীন বিরোধী বলে সমীক্ষার রিপোর্টে প্রকাশ। সুইডেনে ৮৫ শতাংশ মানুষ চীনের রাজনৈতিক অবস্থানের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছেন।

Infografik Entwicklung der allgmeinen Einstellung gegenüber China EN

করোনা-কাল

করোনার জন্য মানুষ কি চীনকে দায়ী করছেন? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘ দিন ধরেই বলছেন, করোনা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার জন্য চীনই দায়ী। তিনি বলেছেন, উহানের একটি পরীক্ষাগার থেকে করোনা ছড়িয়েছে। বস্তুত, ওই ল্যাবে করোনা ভাইরাস তৈরি হয়েছে, এমন কথাও বলেছেন মার্কিন প্রশাসনের কেউ কেউ। সাধারণ মানুষ অবশ্য মনে করেন না যে, করোনা ভাইরাস ল্যাবে তৈরি হয়েছে। তবে তাঁদের অভিমত, চাইলে চীন আরও ভালো ভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারতো। চীন চাইলে গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া অনেকটাই আটকানো যেত বলে মনে করছেন অনেকে। ১৪ টি উন্নত দেশের ৬১ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, চীন চাইলে করোনার সংক্রমণ আটকাতে পারতো।

Infografik China's coronavirus response EN

কিন্তু করোনার বিষয়ে আরও খারাপ পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা। গোটা বিশ্বের ৮৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, ডনাল্ড ট্রাম্প করোনা পরিস্থিতি সামলাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাঁদের বক্তব্য, চাইলে ট্রাম্প প্রশাসন আরও শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারতো। কিন্তু ট্রাম্প কেবল ব্যর্থই হননি, তিনি মানুষকে ভুল পথে পরিচালিতও করেছেন।

শি জিনপিংয়ে আস্থা নেই

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না বহু মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছেন শি জিনপিং। বিশ্ব শান্তির ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি করছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। ক্যানাডায় ৬১ শতাংশ মানুষ শি জিনপিংকে খারাপ বলে মনে করেন। ডেনমার্কে ৭২ শতাংশ মানুষও একই মত প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাজ্যের ৬০ শতাংশ মানুষ শি জিনপিং বিরোধী। তবে ইটালিতে ৫১ শতাংশ মানুষ শি জিনপিংয়ের পক্ষে মত দিয়েছেন। দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের ৭৯ শতাংশ মানুষ শি জিনপিংকে পছন্দ করেন না।

ট্রাম্পের অবস্থা ভয়াবহ

শি জিনপিং জনপ্রিয় না হলেও এখনো তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছেন মানুষ। কিন্তু ডনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থা ভয়াবহ। সমীক্ষা বলছে, জার্মানিতে শি জিনপিং জনপ্রিয় নন। কিন্তু তাঁকে এখনও গুরুত্ব দিচ্ছেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। ৮৯ শতাংশ মানুষ করছেন, ট্রাম্পকে গুরুত্ব দেওয়ারও অর্থ নেই। ট্রাম্প যা বলেন, যে ভাবে চলেন তা হাস্যকর বলে মনে করেন অধিকাংশ মানুষ। বস্তুত, সমীক্ষার রিপোর্ট যদি ঠিক হয়, তা হলে এ বারের নির্বাচনে ট্রাম্প খারাপ ভাবে হারবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)