1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিসের এরিয়াল ডান্সার

৮ নভেম্বর ২০১৮

শূন্যে ঝুলন্ত অবস্থায় নাচ, তা-ও উন্মুক্ত প্রকৃতির কোলে৷ এক গ্রিক শিল্পী ও তাঁর গোষ্ঠী এমন বিপজ্জনক, অথচ বিস্ময়কর অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন৷ দেশের ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে চান তিনি৷

https://p.dw.com/p/37rlj
ছবি: DW

চোখ ধাঁধানো প্রেক্ষাপটে মাথা ঘোরানো উচ্চতায় গ্রিক শিল্পী কাটেরিনা সোলডাটু স্বরচিত নৃত্যনাট্য পরিবেশন করেন৷ একে বলে ‘এরিয়াল ডান্স’৷ কাটেরিনা বলেন, ‘‘নৃত্য নিজের আবেগ প্রকাশ করার সুন্দর এক পথ৷ তাই এরিয়াল ডান্সিং সত্যি অসাধারণ৷ মুক্ত অবস্থায় শূন্যে নাচা জাদুর মতো৷’’

তিনি সেই ম্যাজিকের বর্ণাঢ্য ভিডিও তৈরি করে নিজের ওয়েবসাইট ‘গ্রিস-হ্যাজ-সোল’-এ প্রকাশ করেন৷ গ্রিসের সৌন্দর্য ও ইতিহাস তুলে ধরাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ তার জন্য কাটেরিনা বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১৬ মিটার দীর্ঘ রেশমের কাপড় নিয়ে ঝুলে পড়েন৷ যেমন, কোরিন্থ খালের উপর, অথবা মেটেওরা-র টিলা থেকে, কিংবা সান্তোরিনি দ্বীপে৷

উন্মুক্ত জায়গায় এরিয়াল কৌশল দেখানোর আইডিয়া বেশ কাকতালীয়ভাবে তাঁর মাথায় এসেছিল৷ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘নৌকায় করে ছুটি কাটানোর সময় মনে হয়েছিল, নৌকার উপরেই কিছু এরিয়াল নাচ করে দেখি৷ তখনই প্রথমবার উন্মুক্ত কোনো জায়গায় আমার রেশমের কাপড় নিয়ে কিছু পরীক্ষা করেছিলাম৷’’

কাটেরিনা সোলডাটু আধুনিক নৃত্যকলা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন৷ এখন তিনি অ্যাক্রোব্যাটিকের সঙ্গে তার মিলন ঘটিয়ে নতুন মাত্রা সৃষ্টি করছেন৷

২০১৩ সালে এথেন্স শহরে অলিম্পিক অ্যাকোয়াটিক সেন্টারে তাঁর নাচের স্কুল ‘বিয়ন্ড এরিয়াল’ যাত্রা শুরু করে৷ সাঁতারুরা নীচের পানি ভেদ করে এগিয়ে চলার সময় তিনি ছাদের নীচ থেকে তাঁদের নির্দেশ দেন৷ প্রতিদিন তিনি অনুশীলন করেন৷ কিন্তু তাঁর পক্ষেও একটি বিষয়ের প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব নয়৷ কাটেরিনা সোলডাটু বলেন, ‘‘ভেতরে থাকলে আবহাওয়া নিয়ে ভাবতে হয় না৷ কিন্তু বাইরে কোনো সেতু থেকে ঝোলার সময় কঠিন সমস্যা হলো, অনেক বিষয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে হয়৷’’

কখনো কখনো পরিস্থিতি বেশ বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে৷ ৬ জন পেশাদার ক্লাইম্বার ও ক্যামেরাম্যানদের নিয়ে তাঁর টিম আদর্শ লোকেশনের খোঁজ করে৷ প্রত্যেকটি পারফরম্যান্সের জন্য বেশ কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস ধরে নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করতে হয়৷ এক্সট্রিম অ্যাথলিট স্পিরোস বাডিয়স ভিডিও তৈরির দায়িত্ব পালন করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘বেশ কয়েকবার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম৷ ভিডিও তোলা সমস্যা নয়, কিন্তু কাটেরিনাকে তাঁর টিম চালানোর কাজেও সাহায্য করতে হয়৷ আমরা সব সময়ে সহযোগিতা করি, পরস্পরকে সাহায্য করি৷’’

কাটেরিনা সোলডাটু ও তাঁর টিমের জন্য ‘গ্রিস-হ্যাজ-সোল’ প্রকল্প বেশ পরিশ্রমের হলেও ভালোবাসা থেকেই তাঁরা সে কাজ করেন৷ কোনো বিজ্ঞাপনদাতা বা পর্যটন বোর্ড এ কাজে সাহাষ্য করে না৷ অন্তত এখনো পর্যন্ত এমনটা ঘটেনি৷ কিন্তু চোখ ধাঁধানো স্টান্টের কারণে আন্তর্জাতিক স্তরেও তা নজর কেড়েছে৷ কাটেরিনার কাছে গ্রিসের দ্রষ্টব্য জায়গাগুলির এক তালিকা রয়েছে, যেখানে তিনি কসরত দেখাতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি গ্রিসের সর্বোচ্চ জায়গা, অর্থাৎ অলিম্পাস পাহাড়ে যেতে চাই৷ ক্রিট ও সামোটরাকি-তেও যেতে চাই৷’’

কাটেরিনা তাঁর এরিয়াল ডান্সিং চালিয়ে যেতে চান৷ গ্রিসের ইতিহাস ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে তিনি এই কাজে আগ্রহী৷

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেসান/এসবি