1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজপাকিস্তান

গ্রিসে জাহাজডুবি: শোকদিবস পাকিস্তানে

১৯ জুন ২০২৩

গ্রিসে জাহাজডুবির ঘটনায় কয়েকশ পাকিস্তানি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

https://p.dw.com/p/4Sk5r
গ্রিসে জাহাজডুবি
ছবি: HELLENIC COAST GUARD/REUTERS

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সোমবার দেশজুড়ে শোকদিবস পালনের ডাক দিয়েছেন। এদিন দেশের সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। সম্প্রতি গ্রিসের উপকূলে একটি জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। জাহাজটিতে প্রায় ৭০০ জন মানুষ ছিলেন। মনে করা হচ্ছে, তার মধ্যে কয়েকশ পাকিস্তানি নাগরিক। তাদের কথা মনে রেখেই প্রধানমন্ত্রী শোকদিবসেরডাক দিয়েছেন।

ওই জাহাজডুবির ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৭৮জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ১০৪জনকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু বাকিদের খোঁজ এখনো মেলেনি। তল্লাশি অভিযান জারি আছে।

উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১২জন পাকিস্তানি। এথেন্সে পাকিস্তানি দূতাবাসের কর্মীরা গিয়ে ওই ব্যক্তিদের শনাক্ত করেছেন। পাকিস্তানি ছাড়াও ওই জাহাজে সিরিয়া, মিশর, প্যালেস্তাইনের মানুষ ছিলেন। তারা সকলেই লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছিলেন। ইউরোপে থাকার বাসনা নিয়েই তারা রওনা হয়েছিলেন।

পাকিস্তানের ধারণা, ওই জাহাজে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি নাগরিক ছিলেন। তাদের অধিকাংশ পাকিস্তানের কাশ্মীর এবং গুজরাট অঞ্চল থেকে গেছিলেন। বস্তুত, প্রতি বছর হাজার হাজার পাকিস্তানি ইউরোপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের অধিকাংশই মাঝপথে ধরা পড়েন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হাজতবাস করতে হয় তাদের।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা এই অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের ধরতে হবে। দেশজুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়ে গেছে। এখনো পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তাদের জেরা করে কী তথ্য মিলেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। তল্লাশি চালিয়ে আরো বহু লোককে আটক করা হবে। অবৈধ ব্যবসা ছড়িয়ে আছে গোটা দেশ জুড়ে। পাকিস্তানের কাশ্মীর এবং গুজরাট অঞ্চলে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ওই অঞ্চল থেকে প্রচুর যুবক ইউরোপে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

কীভাবে দুর্ঘটনা

দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির একটি অংশ এর জন্য গ্রিসের কোস্টগার্ডের দিকে আঙুল তুলছে। অভিযোগ, গ্রিস বরাবরই শরণার্থীদের নিজেদের জলসীমা থেকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা করে। সাহায্য চাওয়া সত্ত্বেও তারা ওই জাহাজটিকে সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ।

গ্রিসের কোস্টগার্ডের এক ক্যাপ্টেন নামপ্রকাশ যাবে না এই শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জানাহাজটির কাছাকাছি পৌঁছে তারা দড়ি দিয়ে জাহাজটিকে বাঁধার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জাহাজের লোকেরা রাজি হননি। তারা বলছিলেন, তারা ইটালি যাবেন, গ্রিসে দাঁড়াবেন না। ফলে বহু চেষ্টা করেও ওই জাহাজটিকে দাঁড় করানো যায়নি। কম গতিতে জাহাজটি চলছিল।

মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবির সঙ্গে ক্যাপ্টেনের বক্তব্য মেলেনি। এপি এবং রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মানবাধিকার সংগঠনগুলি জানিয়েছে, ওই জাহাজ থেকে একাধিকবার সাহায্যের দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন অ্যাকটিভিস্ট সংগঠনের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। জাহাজটি ডোবার আগে ১৫ ঘণ্টা সময় ছিল হাতে। কিন্তু গ্রিসের কোস্টগার্ড কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সময়মতো উদ্ধারকাজ হলে এত মানুষের মৃত্যু হতো না। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এই পরিস্থিতিতে কোস্টগার্ড জাহাজটিকে উদ্ধার করতে বাধ্য। ফলে গ্রিসের কোস্টগার্ড যা বলছে, তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি মানতে নারাজ।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)