‘গ্রামীণ পত্রিকা’ নয়, টেলিভিশনের ব্যাপারে আলোচনায় ইউনূস
১৩ ডিসেম্বর ২০১০গ্রামীণ ব্যাংকের ‘অর্থ স্থানান্তর' নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের অনেক ভুলত্রুটি রবিবার ধরিয়ে দেন প্রফেসর ইউনূস৷ এমনকি নরওয়ের টেলিভিশনে প্রচারিত প্রামাণ্যচিত্রের সূত্রে প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়েও কিছু গণমাধ্যমে তথ্য ‘বিকৃত' করা হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
গণমাধ্যমের সংবাদে যখন এত বিভ্রান্তি, তখন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতাকে সাংবাদিকদের প্রশ্ন, তিনি নিজেই কোন সংবাদমাধ্যম চালুর পরিকল্পনা করছেন কিনা? এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য খানিকটা মজা করেই, ‘গ্রামীণ পত্রিকা' শব্দটি উচ্চারণ করেন সদালাপী ইউনূস৷ এবং পরমুহূর্তেই বলেন, না, সেদিকে যাওয়ার কোন ইচ্ছা নেই৷
এইটুকুতেই ভেবে বসবেন না, শান্তিতে নোবেল জয়ী বুঝি রাজনীতির মতো, গণমাধ্যম থেকেও পুরোপুরি মুখ ফিরয়ে নিচ্ছেন৷ মোটেই না, বরং ড. ইউনূস গণমাধ্যমকে মুনাফামুক্ত প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে আগ্রহী৷ সামাজিক ব্যবসার মিডিয়া গড়ার মাধ্যমে এমনটা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি৷
রবিবারের সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই বিষয়টিকেই তুলে এনেছে দৈনিক প্রথম আলো৷ পত্রিকাটি ইউনূসের বক্তব্য প্রকাশ করেছে এভাবে, ‘আমি তো মনে করি, সামাজিক ব্যবসার আওতায় গণমাধ্যম হওয়া উচিত৷ যদি তা হয়, তাহলে মানুষের বক্তব্য প্রচারের অনেক বেশি সুযোগ থাকবে৷ তা না হলে মালিকের বক্তব্যের প্রতিফলন ঘটবে৷'
তাছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে সামাজিক ব্যবসার আওতায় টেলিভিশন তৈরির একটি প্রস্তাবও পেয়েছেন গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা৷ এই টেলিভিশনের ব্যাপারে ভারতীয় চিত্রনির্মাতা শেখর কাপুরের সঙ্গে সম্প্রতি আলোচনাও হয়েছে, গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান ড. ইউনূস৷
এখানেই শেষ নয়, মিডিয়া গড়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাবও পেয়েছেন তিনি৷ এই সম্পর্কে বিস্তারিত না জানালেও ইউনূস প্রস্তাবটিকে আখ্যা দিয়েছেন, সামাজিক ব্যবসার আওতায় ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক' গড়ার উদ্যোগ হিসেবে৷
উল্লেখ্য, ইউনূসের নতুন ভাবনা, ‘সোশাল বিজনেস' নিয়ে জার্মান গণমাধ্যমে সম্প্রতি ইতিবাচক আলোচনা দেখা গেছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানও ইউনূসের এই নতুন ভাবনায় সামিল হচ্ছে৷ তাই, চাইলে ভিন্ন ধারার গণমাধ্যম মানে ‘সামাজিক ব্যবসার মিডিয়া' গড়াও তাঁর পক্ষে সম্ভব৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম