1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘আঙ্কেল বুনমি হু ক্যান রিকল হিস পাস্ট লাইফ’

২৪ মে ২০১০

১২ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হল ৬৩তম আন্তর্জাতিক কান চলচ্চিত্র উৎসব৷ সেরা পুরস্কার ‘গোল্ডেন পাম’ জিতে নেবে কোন ছবি, তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন বিশ্বের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা৷ অবশেষে এল সেই প্রতীক্ষিত ঘোষণাটি৷

https://p.dw.com/p/NVcl
অবশেষে এল সেই প্রতীক্ষিত ঘোষণাটিছবি: AP

চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম বৃহত্তম উৎসব – কান ফিল্ম ফেস্টিভালে যোগ দেয়ার জন্য বাঘা বাঘা চিত্রনির্মাতা ও শিল্পীরা উন্মুখ হয়ে থাকেন৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি৷ হলিউডের সালমা হায়েক থেকে শুরু করে ভারতের তারকা অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাই পর্যন্ত অনেকেই এসেছিলেন উৎসবে৷ হাজার হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছিল কান চলচ্চিত্র উৎসব৷ এই উৎসবে কয়েকটি বিভাগে দেয়া হয় পুরস্কার৷ এ গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শ্রেষ্ঠ ছায়াছবির জন্য গোল্ডেন পাম পুরস্কার, গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্য জুরি ও সেরা অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার৷

প্রতি বছরই নির্বাচিত হয় নতুন জুরি বোর্ড৷ এবারের জুরি মণ্ডলীর পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন অ্যামেরিকার খ্যাতনামা চিত্র পরিচালক টিম বার্টন৷ এ ছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটেনের অভিনেত্রী কেট বেকিনসেল, স্পেনের চিত্র পরিচালক ভিক্টর এরিস, ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক শেখর কাপুর৷

খ্যাতনামা চিত্রপরিচালক রিডলে স্কট পরিচালিত রবিন হুড ছবির প্রদর্শনী দিয়ে উদ্বোধন করা হয় এবারকার কান চলচ্চিত্র উৎসবের৷ জনদরদী ডাকাত রবিন হুডকে নিয়ে আগেও বহুবার ছায়াছবি নির্মিত হয়েছে৷ কিন্তু এবার বিশ্বজোড়া অর্থনৈতিক মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে রবিন হুডকে অনেকটা পরিত্রাতা মনে হতে পারে৷ তবে বরাবরের মত এবারও উদ্বোধনের ছবিটি প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেছে৷ মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে ১৯টি ছায়াছবি৷ ইউরোপ ও এশিয়ার ছবিই প্রাধান্য পেয়েছে উৎসবে৷

NO FLASH Filmfestival Cannes 2010 Apichatpong Weerasethakul
পুরস্কার পাওয়ার পর থাই পরিচালক আপিচাটপং ভিরাসেথাকুলছবি: AP

কান চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা পুরস্কার ‘গোল্ডেন পাম' জিতবে কোন ছবি তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার অন্ত ছিলনা৷ অবশেষে সবাইকে তাক লাগিয়ে থাইল্যান্ডের পরিচালক আপিচাটপং ভিরাসেথাকুল-এর ছবি ‘আঙ্কেল বুনমি হু ক্যান রিকল হিস পাস্ট লাইফ' জিতে নিল গোল্ডেন পাম পুরস্কার৷ এই ছবিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে গুরুতর অসুস্থ এক ব্যক্তিকে তার পরিবারের প্রয়াত সদস্যদের আত্মা পরলোকের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে৷ আপিচাটপং গতানুগতিক অ্যাকশন ধারার বাইরে ভিন্ন ধরণের ছবি করতে ভালবাসেন৷ কান উৎসবে আগেও তিনি পুরস্কার পেয়েছেন, তবে এবারই পেলেন সবচেয়ে বড় পুরস্কারটি৷ জুরিপ্রধান টিম বার্টন বলেন, ‘‘সারা বিশ্বই যখন হলিউডি কায়দায় ছবি করতে ব্যস্ত, তখন আপিচটপং-এর ছবি যেন ভিন্ন কোনো দেশের ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরা৷''

গ্র্যান্ড প্রাইজ অফ দ্য জুরি পেল ফরাসি পরিচালক সাভিয়ে বোভোয়া নির্মিত ছবি ‘অফ গড অ্যান্ড মেন'৷ এই ছবিটিও মৃত্যুকে নিয়ে৷ আলজেরিয়ার এক মঠ থেকে সাত অপহৃত ক্যাথলিক সন্ন্যাসীর কাহিনী, যারা পরে নিহত হয়েছেন৷

Flash-Galerie Filmfestspiele Cannes 2010
৬৩তম আন্তর্জাতিক কান চলচ্চিত্র উৎসবের পোস্টারছবি: Festival de Cannes/Durban

সেরা অভিনেতা হিসাবে পুরস্কার পেয়েছেন দু'জন৷ স্পেনের খাবিয়ের বারডেম ‘বিউটিফুল' ছবিতে অভিনয়ের জন্য এবং ইটালির এলিও জ্যার্মানো ‘আওয়ার লাইফ' ছবিতে অভিনয়ের জন্য৷ ‘সার্টিফাইড কপি' ছবিতে অভিনয় করে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেলেন ফ্রান্সের জুলিয়েট বিনোশ৷ শ্রেষ্ঠ পরিচালনার জন্য পুরস্কার পেলেন ফরাসি পরিচালক ও অভিনেতা মাটিও আমালরিক তাঁর ‘অন ট্যুর' ছবির জন্য৷

অনেক বছর পর আফ্রিকার একটি দেশ পুরস্কার পেল কান চলচ্চিত্র উৎসবে৷ চাড-এর মাহামাত সালেহ হারুন পরিচালিত ছবি ‘এ স্ক্রিমিং ম্যান' পেল জুরি প্রাইজ৷ সেরা চিত্র নাট্যের জন্য পুরস্কার পেয়েছে কোরিয়ান ছবি ‘পোয়েট্রি'৷

এককভাবে কোনো জার্মান ছবি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি৷ তবে আনন্দ উল্লাসের ঘাটতি ছিলনা চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেয়া জার্মানভাষী চিত্রনির্মাতা ও শিল্পীদের৷ গত বছরের গোল্ডেন পাম জয়ী ছবি হোয়াইট রিবনের খ্যাতনামা পরিচালক অস্ট্রিয়ার মিশায়েল হানেকে বলেন, ‘‘এই উৎসব আমার ক্যারিয়ারে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে৷ আমার সৌভাগ্য যে, প্রথম ছবি থেকেই এই উৎসবে যোগ দেয়ার সুযোগ হয়েছে৷ যা আমার শৈল্পিক বিকাশে সাহায্য করেছে৷ এ জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ৷''

প্রতিবেদন: রায়হানা বেগম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন