গোধূলিতে জার্মানির ১০টি মনোমুগ্ধকর স্থান

প্রায় ম্যানহ্যাটানের স্কাইলাইনের মতোই সুবিখ্যাত ও সুপরিচিত বলা চলে জার্মানির ‘ব্যাংক শিল্পের রাজধানী’ ফ্রাংকফুর্ট শহরের স্কাইলাইনকে; কেননা মাইন নদীর তীরে অবস্থিত এই মহানগরীতেও আকাশচুম্বী অট্টালিকার ছড়াছড়ি৷ ছবিতে ফ্রাংকফুর্টের কেন্দ্রীয় বাজার এলাকায় অবস্থিত ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংকের নতুন হেড অফিসটি দেখা যাচ্ছে৷

টাওয়ারটি ছিল এককালে ডর্টমুন্ড ইউনিয়ন নামের বিয়ার তৈরির কোম্পানির সম্পত্তি, যে কারণে ‘ইউ’৷ সে আমলে এখানে বিয়ার তৈরি হতো ও বড় বড় ভাঁটিতে সেই বিয়ার রাখা হতো৷ ২০০৭ সালে ভবনটিকে একটি শিল্পকলা ও সংস্কৃতি কেন্দ্রে পরিণত করা হয়৷ টাওয়ার ঘিরে বসানো এলইডি স্ক্রিনগুলিতে দিনক্ষণ অনুযায়ী ভিডিও আর্ট দেখানো হয়ে থাকে৷

কোলন শহরের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথিড্রালের বিশালত্ব ও মহিমা উপলব্ধি করার জন্য সন্ধ্যার মুখে রাইন নদের অপর পার থেকে গির্জাটিকে দেখা প্রয়োজন৷

হামবুর্গ বন্দরের আলোকোজ্জ্বল জেটিগুলি থেকে দিনে কি রাতে অসংখ্য মালবাহী ও ক্রুজ জাহাজ সাগরপাড়ি দিয়ে থাকে৷ তাই সন্ধ্যার মুখে আকাশের চাঁদ যেন বলছে, ‘বদর, বদর...’

বিশেষ করে ইটালীয় ব্যারোক শৈলীর গির্জাটির দরুণ মিউনিখের কেন্দ্রে অবস্থিত এই চত্বরটি যেন দক্ষিণ জার্মানিতে এক ভূমধ্যসাগরীয় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে৷ সন্ধ্যায় কাছের নানা কফিশপের যে কোনো একটিতে কফি কিংবা পানপাত্র নিয়ে বসলেই তা টের পাওয়া যায়৷

এলবে নদীর ধারে মাইসেন শহর৷ সেখানকার চীনেমাটির জিনিসপত্র যুগ যুগ ধরে সুবিখ্যাত, অভীপ্সিত ও মহার্ঘ৷ মনে রাখতে হবে, পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত আলব্রেশ্টবুর্গ দুর্গকে জার্মানির প্রাচীনতম অক্ষত দুর্গ বলে গণ্য করা হয়৷

ইংল্যান্ডের ব্রাইটন পিয়ারের নাম শুনেছেন নিশ্চয়? জার্মানির বালটিক উপকূলের ব়্যুগেন দ্বীপে সেলিন পিয়ার নামের যে প্রমোদ জেটিটি আছে, তার মজাও কম নয়৷ ১৯০৬ সালে তৈরি এই ৪০০ মিটার লম্বা জেটিটি ঠিক ব্রাইটন পিয়ারের মতোই নব্বইয়ের দশকে আগুনে ধ্বংস হয়ে যায় ও পুনরায় গড়ে তোলা হয়৷

মাগডেবুর্গ ক্যাথিড্রাল আজ ৮০০ বছর ধরে আকাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে৷ বলতে কি, কোলনের ক্যাথিড্রাল নয়, মাগডেবুর্গের ক্যাথিড্রালটিই হলো জার্মানির প্রাচীনতম গথিক ক্যাথিড্রাল৷ পবিত্র রোমক সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট মহান অটোর সমাধিও এই গির্জাটিতে৷

কোলনের মতোই, সন্ধ্যায় এলবে নদীর অপর পার থেকে দেখলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুরোপুরি ধ্বংসপ্রাপ্ত ও পরে নতুন করে গড়ে তোলা বিশ্ববিখ্যাত ফ্রাউয়েনকির্শে বা চার্চ অফ আওয়ার লেডি অর্থাৎ মা মেরির গির্জার অবর্ণনীয় উপস্থিতি অনুভব করা যায়৷

সন্ধ্যা ঘনালে বাভেরিয়ার এই রূপকথার প্রাসাদদুর্গটি যেন সত্যিই কোনো স্বপ্নরাজ্যে ফিরে যায়৷ নির্মাতা রাজা দ্বিতীয় লুডভিশ এই মায়াদুর্গের স্বপ্নই দেখেছিলেন – উঁচু উঁচু দালান ও গুলি চালানোর ফোকরযুক্ত দেওয়ালসহ মধ্যযুগের নাইটদের একটি দুর্গ৷ কোথায় গেলেন সেই নাইটরা? কোথায় গেলেন রাজা লুডভিশ?