1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গির্জার রঙিন কাচের জানালা তৈরি রপে মিউনিখের স্টুডিও

২৩ এপ্রিল ২০২১

ইউরোপের প্রায় যে কোনো বড় শহরের গির্জার জানালায় নানা রংয়ের কাচের কাজ সত্যি মুগ্ধ করার মতো৷ বিশেষ করে সূর্যের আলো পড়লে অপরূপ পরিবেশ সৃষ্টি হয়৷ মিউনিখের এক প্রতিষ্ঠান আজও এমন জাদু সৃষ্টি করে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/3sSRU
Kölner Dom
ছবি: picture-alliance/bildagentur-online/Falkenstein

রয়েল বাভেরিয়ান স্টুডিওস ফর গ্লাস পেন্টিং-এ কাচ নিয়ে কাজের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে৷ বহু প্রজন্ম ধরে এই প্রতিষ্ঠান মিউনিখের এক ওয়ার্কশপে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ ১৮৮৭ সাল থেকে এই স্টুডিও গির্জায় স্টেনড গ্লাস জানালার জন্য বিখ্যাত৷ রাফায়েলা ক্নাইন ও ডিজাইনার হিসেবে কাটিয়া সুকিচ ২০১৫ সাল থেকে প্রতিষ্ঠাতা ফান ট্রেক পরিবারের কাছ থেকে এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন৷ 

গ্লাস পেন্টিং প্রশিক্ষক হিসেবে রাফায়েলা মনে করেন, ‘‘স্টেনড গ্লাসের ক্ষেত্রে অনেক ধৈর্য্য চাই৷ কারণ কাজের সময় চূড়ান্ত ফলাফল বোঝার উপায় নেই৷ কিন্তু কোনো গির্জায় প্রবেশ করলেই ঠিকমতো আলোকিত জানালার কাজ দেখলে মনে বার বার বিস্ময় জাগে৷’’

জার্মানির পশ্চিমে টোলাই অ্যাবির জন্য তিনটি জানালা তৈরি করে গত বছর তাঁরা গোটা বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছেন৷ বিখ্যাত জার্মান চিত্রশিল্পী গেয়ারহার্ড রিশটারের মোটিফ ব্যবহার করে সেগুলি ডিজাইন করা হয়েছে৷ শিল্প বিভাগের প্রধান কাটিয়া সুকিচ সেই অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘টোলাই অ্যাবির জন্য নতুন জানালা তৈরির প্রতিযোগিতায় আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ একজন শিল্পীকে বাছাই করাও হয়ে গিয়েছিল৷ আর এক জনকে ‘আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পী' হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছিল৷ দায়িত্ব পাওয়ার পর জানতে পারলাম তিনি আসলে গেয়ারহার্ড রিশটার৷’’

রঙিন কাচ আর সূর্যালোকে ঝলমলে গির্জা

আফগান শিল্পী মাহবুবা মকসুদির ডিজাইনের ভিত্তিতে এই স্টুডিও অ্যাবির জন্য আরও ৩১টি জানালা তৈরি করছে৷ নয় মিটার দীর্ঘ জানালা তৈরি করতে প্রায় এক মাস সময় লাগে৷ প্রত্যেকটিতে বাইবেলের কোনো দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে৷ মাহবুবা বলেন, ‘‘কাগজ বা ক্যানভাসের উপর প্রত্যেকটি ডিজাইনের খসড়া করা হয়৷ কাচের উপর আলোর প্রভাব আমাকে সত্যি মুগ্ধ করে৷ আলো সব সময়ে গতিশীল৷ ফলে একদিকে সৃষ্টিকর্ম খুব সুন্দর হয়, অন্যদিকে কাজটা অত্যন্ত কঠিন৷’’

মাহবুবা মকসুদি একাই কোনো আইডিয়া খসড়া থেকে কাচে রূপান্তরিত করেন৷ স্টুডিওর বিশেষজ্ঞরা তাঁকে সেই কাজে সাহায্য করেন৷ কাচের শার্সি কাটা, আকার ঠিক রাখা, কাচে রং করা ইত্যাদি কাজের ক্ষেত্রে শিল্পীর নির্দিষ্ট ইচ্ছা অনুযায়ী টিম কাজ করে৷ তারপর শিল্পী একাই শিল্পকর্মের চূড়ান্ত রূপ দেন৷ মাহবুবা মকসুদি অবশ্য নিজের খসড়া নিয়েও সবসময়ে সন্তুষ্ট হতে পারেন না৷ তিনি বলেন, ‘‘খসড়া অনুযায়ী সবকিছু করা হলেও এখানে একটি বিষয় আমার পছন্দ হয় নি৷ একটি অংশে তিন-তিন বার রদবদলের চেষ্টা করেও পছন্দ হচ্ছিল না৷ অবশেষে আমি চাহিদা অনুযায়ী এফেক্ট খুঁজে পেলাম৷’’

মোজাইক আর্টের সুদিন অতীতেই রয়ে গেছে৷ স্টুডিওর কর্ণধার কাটিয়া সুকিচ জানালেন, জানালা তৈরির এমন বরাত অত্যন্ত বিরল হয়ে উঠেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশক ছিল মোজাইকের স্বর্ণযুগ৷ সে সময়ে স্থাপত্যভিত্তিক শিল্পের জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ করা হতো৷ অনেক ভবনের বাইরের অংশে মোজাইক থাকতো৷ বিরল হলেও অনেক শহরে এমন নিদর্শন চোখে পড়বে৷ হয়তো সেই উপাদানের বেড়ে চলা চাহিদা অথবা স্থাপত্যের স্বরূপের পরিবর্তনই এর কারণ৷’’

ডিজাইনার ফুলদানি হোক, অথবা গির্জারা জানালা – রয়েল বাভেরিয়ান স্টুডিওস ফর গ্লাস পেন্টিং রঙিন কাচের সব রকম উদাহরণ তুলে ধরছে৷

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেসান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য