1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গান শুনলে পকেট উদার হয়ে যেতে পারে

২৯ ডিসেম্বর ২০২০

পছন্দের সুর কানে এলে কার না মন মেতে ওঠে? বিজ্ঞানীরা মানুষের উপর সংগীতের প্রভাব সম্পর্কে অনেক গবেষণা চালাচ্ছেন৷ সংগীত মানুষের আচরণ কীভাবে বদলে দিতে পারে, তার কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরছেন তারা।

https://p.dw.com/p/3nJDP
Daniel Barenboim Orchesterdirigent
ছবি: picture alliance/dpa

চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কিছু সংগীত স্মরণীয় হয়ে আছে৷ সংগীতই চিত্রনাট্যে প্রায় অসহনীয় সাসপেন্স বা উত্তেজনার অনুভূতি এনে দেয়৷ সংগীত মনোবিজ্ঞানী হিসেবে প্রো. গ্যুন্টার রোটার বলেন, ‘‘সংগীত যে শরীরের ৫০টি বিভিন্ন প্যারামিটার বা স্থিতিমাপ পরিবর্তন করতে পারে, সেটা পরিমাপ করা সম্ভব৷ সংগীত শোনার সময়ে মস্তিষ্কের তরঙ্গ, হৃদস্পন্দন, এমনকি কয়েকটি হরমোনও বদলে যায়৷’’

সংগীত কীভাবে ও কেন আমাদের প্রভাবিত করে এবং আমাদের অনুভূতির সঙ্গে জুড়ে যায়, মিউজিক সাইকোলজিস্ট হিসেবে গ্যুন্টার রোটার তা নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ভাষার সুরই সম্ভবত সংগীতের উৎস৷ ভাষার মধ্যে আবেগ থেকে মানুষ কিছুটা বার করে সংগীতের মধ্যে চালিত করেছে৷ আমরা সংগীতের মাধ্যমে মানুষের মনমেজাজ ও অবস্থা বদলে দিতে পারি৷ অন্তত কাগজেকলমে এমনটাই দাবি করা যায়৷’’

হোটেল-রেস্তোরাঁয় বেশিরভাগ সময়ে সংগীত চালু থাকে৷ আমরা কী খাচ্ছি, কত পরিমাণ খাচ্ছি এবং কত অর্থ ব্যয় করতে চাই, সংগীত সে সবের উপর প্রভাব ফেলে৷ যেমন ব্রিটেনের এক গবেষণা অনুযায়ী ক্লাসিকাল বা ধ্রুপদী সংগীত শুনলে অতিথিরা খাবারের জন্য দশ শতাংশ বেশি দাম দিতে প্রস্তুত থাকেন৷ এমনকি এমন সংগীতের অনুরাগী না হলেও মন উদার হয়ে উঠতে পারে৷ প্রো. রোটার অবশ্য মনে করেন, ‘‘ক্লাসিকাল সংগীত আমাদের পছন্দ না হলেও সেই ধারা অনেক বেশি অর্থবহ ও খানদানি মনে হয়৷ সেই সংগীত শোনার সময় আমরা আশেপাশের পরিবেশের অনেক বিষয়ের মধ্যেও সেই বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাই৷’’

সাংগীতিক প্রভাব সত্ত্বেও সেই সাফল্যের কিছু সীমা অবশ্যই রয়েছে৷ প্রো. গ্যুন্টার রোটার বলেন, ‘‘রেস্তোরাঁয় বসে কোনো গান শুনলে যে প্রভাব দেখা যায়, তার ফলে কিন্তু খাবারের মান সম্পর্কে অনুভূতি মোটেই ঢাকা পড়ে না৷ আমার মতে, সংগীতের প্রভাব এতদূর যেতে পারে না৷’’

আমাদের পছন্দের সংগীত মস্তিষ্কের মধ্যে আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে৷ সংগীত যখন তথাকথিত ‘লিম্বিক সিস্টেম'-এ পৌঁছে যায়, তখন ডোপামিন নামের আনন্দের হরমোনের নিঃসরণ ঘটে৷ এর ফলে শুধু মনে আনন্দ আসে না, শরীরও অনেক শিথিল, কর্মক্ষম ও সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ ফলে আমাদের কর্মক্ষমতার উপরও তার প্রভাব পড়ে৷

রেস্তোরাঁ হোক অথবা কেনাকাটা, সব ক্ষেত্রেই সেটা দেখা যায়৷ ক্রেতাদের স্বাচ্ছন্দ্য জরুরি, কারণ একমাত্র তখনই তারা বেশি সময় কাটাবে এবং আরও কেনাকাটা করবে৷ অন্তত কাগজেকলমে সেটাই আশা করা হয়৷

কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কেনাকাটার সময়ে সংগীতের প্রভাবের বিষয়টি কিন্তু বেশ জটিল৷ প্রো. রোটার বলেন, ‘‘যেমন কোনো বহুতল বিপণীর সবচেয়ে নীচের তলায় কোনো জিনসের দোকানে সেটা কাজে লাগতে পারে৷ কোনো ডিজে সংগীত পরিবেশন করতে পারে৷ ক্রেতাদের গড় বয়সও মোটামুটি একরকম৷ তারা অবসর সময়ে কোন গান শোনে, আমাদের তা ভালো জানা আছে৷ সেই গান বাজালে কিছু সাফল্য পাওয়া যেতে পারে৷ এমন আশা থাকলেও মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশা উচিত নয়৷’’

কারণ পরিকল্পনা করে সেই সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়৷ এমনকি সেরা কনসেপ্ট বা কৌশল সবসময়ে লক্ষ্য পূরণ করে না৷ সংগীত মনোবিজ্ঞানী হিসেবে প্রো. গ্যুন্টার রোটার বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘বিষয়টা হলো, বিজ্ঞান এখনো সংগীত পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারে নি৷ সংগীতের পেছনে এক মানুষ থাকে, যে নিজের অনুভূতি অনুযায়ী কাজ করে, সংগীত রচনা করে এবং সেটি কাজে লাগায়৷’’

অর্থাৎ সব কিছু ঠিকমতো খাপ খেলে তবেই সংগীতের পূর্ণ প্রভাব খাটানো সম্ভব৷

ইয়ো সিগলার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান