1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজফ্রান্স

গরমে চাপের মুখে ফ্রান্সের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো

১৬ আগস্ট ২০২২

ফ্রান্সের জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ আসে পরমাণু বিদ্যুৎ থেকে৷ বিশ্বের আর কোনো দেশ পরমাণু বিদ্যুতের উপর এতটা নির্ভরশীল নয়৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের টানা গরম পরমাণু চুল্লিগুলোর উপর চাপ তৈরি করছে৷

https://p.dw.com/p/4FaOP
Frankreich I Golfech-AKW
ছবি: Jean Pierre Jost

ফ্রান্সে মোট ৫৬টি পরমাণু চুল্লি আছে৷ এসব চুল্লি ঠাণ্ডা করতে সাধারণত নদীর পানি ব্যবহার করা হয়৷ কিন্তু তা করতে গিয়ে নদীর পানির তাপমাত্রা যেন নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম না করে, সে বিষয়ে আইন রয়েছে৷ তবে অন্তত আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই আইন প্রয়োগ স্থগিত করেছে সরকার৷

ফলে নদীর পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে৷ যেমন দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গলফ্যাশ এলাকার গ্যারন নদীর পানির তাপমাত্রা প্রায় ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে বলে জানান স্থানীয় পরিবেশকর্মী জ্য-পিয়ের ডেলফু৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ফ্রান্সে গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠছে৷ সে কারণে গ্যারন নদীর পানি অনেক কমে গেছে৷ এই অবস্থায় পরিস্থিতি আরও খারাপ করছে গলফ্যাশের পরমাণু চুল্লি৷ কারণ চুল্লি ঠাণ্ডা করতে আট ঘনমিটার পানি দরকার৷ কিন্তু শীতলীকরণ প্রক্রিয়া শেষে মাত্র ছয় ঘনমিটার পানি নদীতে ছাড়া হচ্ছে৷ বাকিটা বাষ্প হয়ে উড়ে যাচ্ছে৷

ডেলফু বলেন, পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় খাদ্যচক্রের উপর প্রভাব পড়ছে৷ ‘‘উষ্ণ পানি মাইক্রোঅ্যালজি ধ্বংস করে দেয়৷ এই অ্যালজিগুলো ছোট মাছের খাবার৷ আবার ছোট মাছ হচ্ছে বড় মাছের খাবার৷ এছাড়া উষ্ণ পানিতে বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে৷ ফলে এই পানিকে পানযোগ্য করতে বেশি রাসায়নিক ব্যবহার করতে হয়,’’ ডয়চে ভেলেকে জানান তিনি৷ 

এ ব্যাপারে ফ্রান্সের সব পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী সংস্থা ইডিএফ-এর যোগাযোগ করা হলে সংস্থার মুখপাত্র ইমেলে ডয়চে ভেলেকে জানান, এখন পর্যন্ত চালানো তদন্তে পরমাণু চুল্লির কারণে আশেপাশের জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷

আরও পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বানাবে ফ্রান্স

প্যারিস ইউনিভার্সিটি ডোফার ক্লাইমেট ইকোনমি ডাইরেক্টর আনা ক্রেটি জানান, বর্তমান পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সংস্কার ও নতুন পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ফ্রান্স দেড়শ বিলিয়ন ইউরো বা ১৪ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে৷ 

নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য এমন বরাদ্দ না করলেও এই খাতের উন্নয়নে লাল ফিতার দৌরাত্ম কমাতে নতুন আইন করছে ফ্রান্স৷ 

ইউরোপের মধ্যে ফ্রান্সই একমাত্র দেশ যারা ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা ইইউ ঠিক করেছিল সেটিতে পৌঁছতে পারেনি৷ ২০২০ সালের মধ্যে একটি দেশের জ্বালানি চাহিদার ২৩ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে মেটানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করছিল ইইউ৷ ফ্রান্স করেছে মাত্র ১৯ শতাংশ৷

লিসা লুইস, প্যারিস/জেডএইচ