1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণপিটুনি বিচারের হাতিয়ার নয়, শুধুই অপরাধ

শামীমা নাসরিন
শামীমা নাসরিন
৯ ডিসেম্বর ২০২২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একজন নারী গাড়ির নিচে চাপা পড়ে আটকে যাওয়ার পরও চালকের গাড়ি না থামিয়ে ওই অবস্থায় তাকে প্রায় এক কিলোমিটার টেনে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা মনকে বড় ধাক্কা দিয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/4Khyl
অনেক গণপিটুনির ঘটনার সময় আশেপাশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার অভিযোগও আছে
অনেক গণপিটুনির ঘটনার সময় আশেপাশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার অভিযোগও আছেছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

বারবার মনে হচ্ছিল, কেন চালক গাড়ি থামলেন না? তিনি সময়মত গাড়ি থামিয়ে দিলে ওই নারী আহত হলেও হয়তো মারা যেতেন না৷ মা হারা হতো না তার অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলেটি৷ গাড়ির চালকও সাধারণ কেউ নন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই সাবেক একজন শিক্ষক৷

গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষদর্শী  ও পুলিশ যা বলেছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে তিনি গাড়ির নিচে একজন মানুষ আটকে পড়ার বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন৷ ওই নারী যে মোটরসাইকেলে ছিলেন সেটিতে ধাক্কা লাগার পর তিনি যখন পেছন থেকে ছিটকে রাস্তায় পড়ে গাড়ির নিচে আটকা পড়ে যান তখন আশেপাশের লোকজন চিৎকার করছিল৷ হাত নেড়ে চালককে গাড়ি থামাতে বলেছিল৷

ধরেই নিলাম ঐ ব্যক্তি কিছু বুঝতে পারেননি, কিন্তু কেন লোকজন হঠাৎ করে তাকে গাড়ি থামাতে ইশারা করছেন সেটা তো সাধারণ কৌতূহলবশেই তার জানতে চাওয়ার কথা৷

আমার তাই মনে হয়, চালক বুঝতে পেরেছিলেন তার গাড়ির নিচে কেউ চাপা পড়েছেন এবং ভয়ে তিনি যত দ্রুত সম্ভব পালানোর চেষ্টা করছিলেন৷ কিন্তু কেন? কিসের ভয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন?

গত ২ ডিসেম্বরের এই ঘটনায় ওই গাড়ি চালক পরে নীলক্ষেতের কাছে সিগন্যালে আটকে গেলে জনতা তাকে গাড়ি থেকে বের করে গণপিটুনি দেয়৷ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় ‍তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ গাড়ির নিচে আটকে থাকা রুবিনা আক্তার ততক্ষণে আর বেঁচে নেই৷

বাংলাদেশে এ ধরনের ঘটনা কিন্তু একেবারেই নতুন নয়৷ বরং গাড়ির নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়ার, বিশেষ করে রাজধানীর সড়কগুলোতে প্রাণহানির মূল কারণ এটা বলে  আমার মনে হয়৷ ঢাকার সড়কে যে গতিতে বাস-গাড়ি চলে তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধাক্কা লেগে কেউ হয়তো রাস্তায় ছিটকে পড়তে পারেন বা গাড়ির চাকার নিচে চলে যেতে পারেন৷ চালক যদি তখনই গাড়ি থামিয়ে দেন তাহলে ছিটকে পড়া ব্যক্তি গুরুতর আহত হলেও প্রাণে রক্ষা পাওয়ার সম্ভাবনা কিন্তু অনেক বেশি৷

এটা কি চালকরা জানেন না বা বুঝতে পারেন না? অবশ্যই পারেন৷ তারপরও কেন তারা গাড়ি না থামিয়ে বরং গতি আরো দ্রুত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন?

এর একটাই কারণ হতে পারে, ভয়৷ তিনি হয়তো উত্তেজিত জনতার পিটুনি থেকে, ভাঙচুর থেকে পালানোর চেষ্টা করেন৷ যদিও সবক্ষেত্রে শেষরক্ষা হয় না৷ যেমন হয়নি ২ ডিসেম্বরের ঘটনার ক্ষেত্রে৷ 

গাড়ির নীচে কেউ চাপা পড়লে চালককে ধরে গণপিটুনি দেয়ার অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে বাংলাদেশে৷ উত্তেজিত জনতা গণপিটুনির পাশাপাশি গাড়ি, বাস বা ট্রাক ভাঙচুর করে, আগুন ধরিয়ে দেয়৷

একবার পত্রিকায় একজন ট্রাক ড্রাইভারের সাক্ষাৎকার পড়েছিলাম৷ মহাসড়কে পথচারীকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ধাওয়া করে আটক করে পুলিশ৷ তিনি পুলিশকে বলেছিলেন, জনতার পিটুনির ভয়ে তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন৷

আরেকটি ঘটনা নিজ চোখে দেখা৷ তখন রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় থাকি, ২০০৯ বা ১০ সালের ঘটনা৷ সকাল ৭টায় অফিস, যাব ধানমণ্ডি৷ সাড়ে ৬ টার দিকে ৩৬ নম্বর বাসে সবে উঠেছি৷ সকালের ফাঁকা রাস্তায় বাসে উঠতে না উঠতে সেটি জোরে টান দিল৷ আমি দুইহাতে সিট আকড়ে ধরে সামনে দাঁড়িয়ে আছি৷ হঠাৎই দেখি বাসের আগে একটি সাইকেল দ্রুত চলছে৷ সাইকেলের পেছনে দুইবাটির একটি টিফিন ক্যারিয়ার রাখা৷ হয়তো দুপুর খাবার নিয়ে কাজে যাচ্ছিলেন লোকটা৷ ফাঁকা রাস্তার সুযোগ পেয়ে তিনিও মাঝরাস্তা দিয়েই সাইকেল চালাচ্ছিলেন৷ আগারগাঁওয়ের কাছাকাছি তখন, বাসের হর্নের বিকট শব্দে টলমল সাইকেল নিয়ে তিনি ডানে আইল্যান্ডের দিকে চেপে যেতে চেষ্টা করলেন৷ কিন্তু টাল সামলাতে না পেরে সাইকেল নিয়ে রাস্তার দিকেই হেলে পড়েন৷ সঙ্গে সঙ্গে সাইকেল-বাসের সংঘর্ষের প্রচণ্ড শব্দ, সাথে একটা ভোঁতা ‘পটাস' শব্দ আমি পেয়েছিলাম৷ বাস থেকে পেছনে তাকিয়ে দেখি লোকটা রাস্তায় পড়ে আছেন, কাছে মনে হলো হলুদ হলুদ কিছু বুঝি ছড়িয়ে আছে৷ হতে পারে তার টিফিনবাটি ফেটে খাবার রাস্তায় ছড়িয়েছে, কিংবা.....

আমি চিৎকার করে বাস থামাতে বললে চালক বলে ওঠেন, ‘‘আপা গণধোলাই বোঝেন, আমি ওইটা খাইতে পারবো না৷ না পোষালে আপনি নেমে যান৷'' বাস একবারে টেনে নিয়ে দুই-তিন স্টপেজ পর কলেজগেটে নিয়ে থামান চালক৷ ভেতরে যাত্রীরা আর একটা কথাও বলেনি৷

আমি আজো স্বপ্নে ওই ঘটনা দেখি৷ অথচ স্বার্থপর আমি তখন বাস থেকে নেমে লোকটার অবস্থা দেখার সাহস করতে পারিনি৷

এই যে গণধোলাই বা গণপিটুনি৷ কেন চালকদের এটাতে এত ভয়৷ বাংলাদেশে সড়কের যে নাজুক অবস্থা তাতে দুর্ঘটনা ঘটবেই৷ তার উপর আমরা তো খুবই অসচেতন৷ যেভাবে রাস্তা পারাপার হই বা চলি তাকে মনে হয় নিজের প্রাণ নিজের দায়িত্বে না, গাড়ি চালকের দায়িত্বে৷ তাই যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তখন দায় দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিরও হতে পারে, এমনটা না ভেবে কেন সবসময় আমরা গাড়ি চালককে গণপিটুনি দিতে এবং গাড়ি ভাঙচুর করতে এগিয়ে যাই?

বাংলাদেশে তো আইন-আদালত রয়েছে৷ আমাদের প্রচলিত পরিবহন আইন বেশ কঠোর৷ আইন প্রয়োগের জন্য পুলিশ-প্রশাসন আছে৷ তারপরেও কেন দুর্ঘটনা হলেই চালককে গণপিটুনি দেয়ার রীতি গড়ে উঠেছে?

কোনো যুক্তিতেই গণপিটুনিকে ঠিক বা বৈধ বলার সুযোগ নেই৷এটা পুরোপুরি একটি বেআইনি ব্যাপার৷ গাড়ি চাপা বা যে-কোনো অপরাধের জন্য আইন অনুযায়ী বিচার হবে, শাস্তি হবে৷ কিন্তু তাই বলে একদল লোক কাউকে ধরে পেটাতে পারে না৷

কিন্তু বাংলাদেশে বারবার গণপিটুনির ঘটনা ঘটে৷ অনেকে কিছু না জেনেও গণপিটুনিতে অংশ নেন৷ বার বার এ ধরণের ঘটনা ঘটতে দেখে এবং এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হয় না বলে সাধারণ মানুষ তো বটেই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও যেন এটাকে একটা ‘স্বাভাবিক ব্যাপার' হিসাবে মেনে নিয়েছে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে, সাবেক শিক্ষক সেই চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ আশা করা যায়, আইন অনুযায়ী এই ঘটনার ন্যায্য বিচার পাবে নিহতের পরিবার৷ কিন্তু গণপিটুনির ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি৷ অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সবাই সেটাকে একটা 'ঠিক কাজ হয়েছে' বলে মনে নিয়েছে৷

আমার একজন সাংবাদিক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম, একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বলেছিলেন, ছিনতাইকারী বা ডাকাত ধরার পরে গণপিটুনি দিয়ে লোকজন মেরে ফেললে তারা খুশি হন৷ কারণ তাতে আইন-আদালত, মামলা-মোকদ্দমা, প্রমাণ করার ‘ঝামেলা' তাদের পোহাতে হয় না৷

অনেকগণপিটুনির ঘটনার সময় আশেপাশে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেচুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকার অভিযোগও আছে৷

কিন্তু সমস্যা হলো, যখন কোনো দেশে ‘গণপিটুনি' বা ‘মব লিঞ্চিং' বা  ‘মব জাস্টিস'-যে নামই হোক, সেটা মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, তখন সবসময়ে শুধু দোষী বা অপরাধীরাই তার শিকার হয় না৷ বরং অনেক সময় নির্দোষ মানুষ, আমি বা আপনিও তার শিকার হতে পারি৷

আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা হয়তোঅনেকের মনে পড়বে৷ ২০১১ সালে শবেবরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়৷ তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও করা হয়েছিল৷ পরে সেসব মিথ্যা প্রমাণিত হয়৷

কিংবা তিনবছর আগে ২০১৯ সালের ‍জুলাই মাসে ঢাকার বাড্ডায় সন্তানের ভর্তির খোঁজখবর করতে স্কুল গেটে গিয়ে উঁকিঝুকি মারা তাসলিমা বেগম রেনুকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা সবারই মনে আছে৷ সেই মাসেই ছেলেধরা সন্দেহে আটজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছিল দেশের বিভিন্ন এলাকায়৷

শামীমা নাসরিন, সাংবাদিক
শামীমা নাসরিন, সাংবাদিকছবি: privat

তখনকার পুলিশের আইজি একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, জুন-জুলাই মাসে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত আটজনের কেউ ছেলেধরা বা অপহরণকারী ছিলেন না৷ সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে ওই হত্যাকাণ্ড হয়েছে৷

সেই সময় পুলিশ আরো জানিয়েছিল, তারা এমন অভিযোগও পেয়েছে যে, ব্যক্তিগত শত্রুতা বা প্রতিশোধ নিতে ছেলেধরা আতঙ্ক ব্যবহার করা হয়েছে৷ অর্থাৎ ‍কোনো অপরাধ না করেও, শুধু সন্দেহের বশে মানুষের পিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছে এসব নির্দোষ মানুষ৷

অনেকে মনে করেন, দেশে যখন অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়া, বিচার না হওয়ার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে, তখন সাধারণ মানুষ গণপিটুনিতে উৎসাহিত হন৷ তারা মনে করেন, আদালতে হয়তো এসব অপরাধীর সাজা হবে না৷ তাই তারা অপরাধীর তাৎক্ষণিক সাজা দেয়ার চেষ্টা করে৷ একই কারণে ক্রসফায়ারের মতো বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডেও কোথাও কোথাও মিষ্টি বিতরণের মতো ঘটনা দেখা যায়৷ আবার অপরাধের শিকার হওয়ার পরেও অনেক সময় যথাযথ প্রতিকার না পাওয়ায় জমে থাকা ক্ষোভ থেকে অনেক মানুষ গণপিটুতিতে অংশ নেয়৷ 

কিন্তু সবসময় কী তাতে শুধু অপরাধীরাই সাজা পায়? এটা ভুলে গেলে হবে না যে, গণপিটুনিও বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড৷ যিনি গণপিটুনিতে অংশ নিচ্ছেন, মব লিঞ্চিং করছেন, তিনিও একজন অপরাধী, একজন হত্যাকারী৷ 

গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনু বা সাভারের ছয় ছাত্রের মতো অনেক নিরপরাধ মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়৷ আবার কোনো ব্যক্তি অপরাধী হলেও তাকে পিটিয়ে মারার অধিকার কারও নেই, কারণ সেই ব্যক্তিরও বিচার পাওয়ার অধিকার আছে, আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার আছে৷

‘মব জাস্টিস' সবসময়েই বিপজ্জনক৷ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের যেসব দেশে এরকম ‘মব কিলিং'এর ঘটনা ঘটেছে, তাতে সবসময়েই অনেক নিরপরাধ মানুষ শিকার হয়েছে৷

বাংলাদেশে গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনায় বিচারের উদাহরণ বিরল৷ সাভারের ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আলোচনার প্রেক্ষিতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের পর শেষ পর্যন্ত বিচার হয়েছে৷ তাতে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড, অন্যদের নানা মেয়াদের সাজা দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু এখনো গণপিটুনির বেশিরভাগ ঘটনায় রয়ে গেছে বিচারহীন৷

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও এসব ঘটনায় তদন্ত আর সাজা নিশ্চিত করার তাগিদ দেখা যায় না৷ অনেকে হয়তো ভাবেন, এরকম ঘটনায় অংশ নিলেও এতো লোকের ভিড়ে আসল অপরাধীদের শনাক্ত করা যাবে না৷

এ কারণে যারা গণপিটুনিতে অংশ নেন, তাদের মধ্যেও হয়তো কোনো ভয় কাজ করে না৷ এমনকি গণমাধ্যম বা সুশীল সমাজেরও এ নিয়ে খুব বেশি সোচ্চার হতে দেখা যায় না৷

একটি সভ্য দেশ আর সুশীল সমাজে আইনের শাসন নিশ্চিত করা জরুরি৷ এক অপরাধের মাধ্যমে আরেক অপরাধের বিচার করতে গেলে তাতে শুধু বিচারহীনতার পরিবেশই তৈরি হবে৷ আর কোনো দিন সেই পরিবেশের শিকার হয়ে যেতে পারি আমি, আপনি অথবা পরিচিত, ঘনিষ্ঠ স্বজনদের কেউ৷