1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেনিয়ার প্রান্তিক চাষিদের জন্য বায়োগ্যাস প্লান্ট

১৪ মে ২০১৯

জলবায়ু পরিবর্তনসহ একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখে গোটা বিশ্বে ক্ষুদ্র চাষিদের অবস্থা ভাল নয়৷ কেনিয়ায় বায়োগ্যাস প্লান্ট বসিয়ে তাদের কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে৷ জার্মানির এক এনজিও এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে৷

https://p.dw.com/p/3IS4j
Junge Farmer in Kenia
ছবি: J. van Loon

বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরির কাজে সহায়তা

জার্মানির ‘আটমোস্ফেয়ার' নামের এনজিও এবং কেনিয়ায় তার সহযোগী সংস্থা একটি পরিবারকে বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরির বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছে৷ এখনো পর্যন্ত রাজধানী নাইরোবির উপকণ্ঠে কিয়াম্বু কাউন্টিতে ৮০০ বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে৷ প্রকল্পের ম্যানেজার ডেনিস মাখনিক বলেন, ‘‘বায়োগ্যাস প্লান্টের মাধ্যমে আমরা গরুর গোবর ব্যবহার করে পরিষ্কার বায়োগ্যাস উৎপাদন করতে পারি৷ রান্নাঘরে ধোঁয়া না বেরোনোর অর্থ কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন ঘটছে না৷ ফলে প্রতিটি প্লান্ট বছরে প্রায় চার টন সিওটু বাঁচাতে পারে৷''

প্লান্টের প্রাচীর তৈরি করতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে৷ খুব শীঘ্রই তাতে গোবর ভরা হবে৷  চাষির পরিবার তখন বায়োগ্যাস কাজে লাগিয়ে রান্না করতে পারবে৷ এক গোয়ালা দম্পতির জন্য এটা বড় এক বিনিয়োগ৷ এই পরিবার এখনো পর্যন্ত শুধু জ্বালানি কাঠ ব্যবহার করেছে৷ তাই তারা সহজে রান্নার জন্য বায়োগ্যাস প্লান্ট চেয়েছিল৷ দু'টি গরু বেচে সেই অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে৷

অর্থায়নের সমস্যা

তবে এমন প্লান্টের অর্থায়ন এখনো সবচেয়ে বড় সমস্যা৷ সবচেয়ে ছোট প্লান্টের ব্যয়ও কমপক্ষে ৩০০ ইউরো৷ যে সব পরিবার সন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করে, এমন প্লান্ট তাদের সামর্থ্যের বাইরে৷ সাস্টেনেবল এনার্জি স্ট্র্যাটেজিস সংস্থার ডেভিড কারানজা বলেন, ‘‘এই জেলায় বিশাল বাজার রয়েছে৷ কিন্তু সমস্যা হলো এমন প্লান্ট অনেক মানুষের সামর্থ্যের বাইরে৷ আটমোস্ফেয়ার এনজিও থেকে ভরতুকি পাওয়া সত্ত্বেও তাদের কাছে এর জন্য যথেষ্ট অর্থ নেই৷''

কিয়াম্বু কাউন্টি-তে কয়েক'শ চাষি বসবাস করেন৷ খেতে ভুট্টা ও গবাদি পশুর খাদ্য চাষ হয়৷ বাগানে শাকসবজি চাষ হয়৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চাষিরা এর মাধ্যমে নিজস্ব প্রয়োজন মেটাতে পারেন৷ সে কারণেও বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করা তাঁদের জন্য বড় বিষয়৷

বহুমুখী সুবিধা

 পাইলিস ওয়ামবুই এমন প্লান্ট গড়ে তুলতে পেরেছেন৷ কারণ তাঁর কাছে প্রায় ৬০০ মুরগি রয়েছে৷ তিনি ডিম বেচেই সংসার চালান৷ সঞ্চয়ের অর্থ ও ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে তিনি নিজের জমিতে বায়োগ্যাস প্লান্ট গড়ে তুলেছেন৷ নিজের গরুর গোবর দিয়েই সেটি চালানো হয়৷ সেটা সম্ভব করতে তাঁকে পানিও মেশাতে হয়৷

সেই মিশ্রণ প্লান্টে ঢেলে দিলে প্রক্রিয়ার শেষে বায়োগ্যাস উৎপাদিত হয়৷ মাটির নীচ দিয়ে গ্যাস সরাসরি রান্নাঘরে পৌঁছে যায়৷ পাইলিস বলেন, ‘‘প্রতিবেশীদের কাছে এমন প্লান্ট দেখে আমিও প্লান্ট তৈরি করিয়েছি৷ রান্নার কাজ অনেক সহজ হয়ে পড়েছে৷ আগে জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ ও কাঠকয়লা কিনতে হতো৷ কাঠের দাম ছিল খুব বেশি৷ এখন আর আমার কোনো সমস্যা নেই৷ দেরিতে বাসায় ফিরলেও ১০ মিনিটে রান্না সেরে ফেলতে পারি৷

প্লান্টে অবশিষ্ট কাদা সার হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব৷ ফলে আরও সহজে সবজি বিক্রি করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ রাজধানী নাইরোবিতে এর জন্য ভালো দাম পাওয়া যাবে৷ কিন্তু বাস্তবে কি সেটা সম্ভব? ডেনিস মাখনিক বলেন, ‘‘পণ্য সংগ্রহ করার একটি ব্যবস্থা এখনই চালু আছে৷ তবে আমাদের বায়োগ্যাস প্লান্টের কাদা কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত পণ্যের জন্য কোনো লেবেল নেই৷ মানে অরগ্যানিক সার্টিফিকেশনের ব্যবস্থা নেই৷ কোনো রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি, এই বিষয়টি তুলে ধরতে পারলে বড় সুবিধা পাওয়া উচিত৷''

জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব

কিন্তু এখনো প্রক্রিয়া এত উন্নতি হয়নি৷ তাছাড়া চলতি বছরে চাষের কাজ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে৷ প্রায় ৪ সপ্তাহ আগেই বৃষ্টি আসার কথা ছিল৷ এই অঞ্চলের জন্য এমনটা মোটেই স্বাভাবিক নয়৷ কুয়া শুকিয়ে যাওয়ায় কিছু মানুষ পানি কিনতে বেরিয়ে পড়েছেন৷

শুধু ২০০০ সাল থেকেই কেনিয়ায় প্রায় ১০ শতাংশ অরণ্য লোপ পেয়েছে৷ ঘনঘন খরা এমন সমস্যার অন্যতম কারণ৷ কাঠ কাটা বেআইনি হলেও তা বন্ধ করা যাচ্ছে না৷ পাইলিস ওয়ামবুই ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পানির অভাবে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে, বাড়তি পানি কিনতে হচ্ছে যার দাম খুব বেশি৷ সবজি চাষ ও প্রাণীদের নিয়েও সমস্যা হচ্ছে৷''

তা সত্ত্বেও বায়োগ্যাস থাকায় জ্বালানি কাঠ কেনার প্রয়োজন হচ্ছে না৷ বাচ্চারা স্কুল থেকে ফিরলে তিনি তাদের জন্য দ্রুত রান্না করতে পারেন৷ চার সন্তানের মাকে ঋণ পরিশোধ করতে আরও এক বছর সময় লাগবে৷ তা সত্ত্বেও তিনি বায়োগ্যাস প্লান্টটিকে সাম্প্রতিক কালে সংসারের সেরা প্রাপ্তি হিসেবে গণ্য করেন৷

ইউলিয়া হাইনরিশমান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য