বিবিসি সাংবাদিক বহিষ্কারের কারণ
৯ মে ২০১৬বিবিসি বলছে, তাদের টোকিও প্রতিনিধি রুপার্ট উইংফিল্ড-হেইস আরও দুই সহকর্মী সহ শুক্রবার উত্তর কোরিয়া ত্যাগের জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ সেই সময় তাঁকে আটক করা হয়৷
বিবিসির আরেক প্রতিনিধি জন সাডওয়ার্থ জানান, ‘‘আটকের পর তাঁকে (হেইস) হোটেলে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ এরপর একটি বিবৃতিতে স্বাক্ষর নিয়ে শনিবার সকালে ছেড়ে দেয়া হয়৷''
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হেইসকে প্রায় আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়৷ সেই সময় তাঁকে পিয়ংইয়ং-এর একটি হাসপাতাল নিয়ে করা তাঁর প্রতিবেদন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়৷ ঐ প্রতিবেদনে হেইস পরিদর্শন করা হাসপাতালটি ‘আসল' কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন৷
শুক্রবার হেইসকে আটকের সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রডিউসর মারিয়া বির্নে ও ক্যামেরাম্যান ম্যাথিউ গোদার৷ কর্তৃপক্ষ এই দু'জনকে উত্তর কোরিয়া ত্যাগের অনুমতি দিলেও সহকর্মীকে আটক করায় তাঁরা যেতে চাননি৷ সোমবার এই তিনজনকে উত্তর কোরিয়া ত্যাগ করতে বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়৷
খবর প্রকাশ করতে চায়নি বিবিসি
বিবিসি প্রতিবেদককে নিয়ে এই ঘটনাটি বিবিসি প্রথম প্রকাশ করেনি৷ আটককৃতদের নিরাপত্তার খাতিরে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন জন সাডওয়ার্থ৷ তবে সোমবার সকালে খবরটি প্রকাশ করে উত্তর কোরিয়ার ‘ন্যাশনাল পিস কমিটি' কর্তৃপক্ষ৷ তাদের বরাত দিয়ে চীনের সরকারি সিনহুয়া বার্তা সংস্থা জানায়, ‘ডিপিআরকে-র (উত্তর কোরিয়াকে এই নামেও ডাকা হয়) ব্যবস্থাকে আক্রমণ করে' প্রতিবেদন প্রকাশ করায় হেইসকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷ উত্তর কোরিয়ার ন্যাশনাল পিস কমিটির মহাসচিব ও রিওং টু জানান, হেইস তাঁর প্রতিবেদনে বিকৃত তথ্য উপস্থাপন করেছেন৷ বিবিসির ঐ প্রতিনিধি উত্তর কোরিয়ায় আর প্রবেশ করতে পারবেন না বলেও জানান তিনি৷
৩৫ বছর পর কংগ্রেস
বিবিসির প্রতিবেদককে আটক ও বহিষ্কারের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন দেশটিতে প্রায় ১৩০ জনের মতো বিদেশি সাংবাদিক রয়েছেন৷ শাসক দল ওয়ার্কাস পার্টির কংগ্রেস কভার করতে উত্তর কোরিয়া তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে৷ বিবিসির বহিষ্কার হওয়া সাংবাদিক অবশ্য এই আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন না৷ গবেষণার উদ্দেশ্যে একদল নোবেল জয়ীর উত্তর কোরিয়া সফর কভার করতে তিনি আগে থেকেই উত্তর কোরিয়ায় ছিলেন এবং কংগ্রেস অনুষ্ঠানের মধ্যেই শুক্রবার তিনি উত্তর কোরিয়া ছাড়তে চেয়েছিলেন৷
এদিকে, ১৯৮০ সালের পর আয়োজিত কংগ্রেসের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিদেশি সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও কংগ্রেস যে ভবনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে তাঁদের ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না৷ এর বদলে ঐ সাংবাদিকদের পিয়ংইয়ং-এর বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ ফলে কংগ্রেস সংক্রান্ত খবরগুলো জানতে দেশটির সরকারি প্রচারমাধ্যমের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷ এমনই এক সূত্র জানিয়েছে, কংগ্রেসের তৃতীয় দিন রবিবার দেশটির নেতা কিম জং উন তিন ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য দিয়েছেন৷ সেই সময় তিনি বলেন, আক্রমণের শিকার না হওয়া পর্যন্ত তাঁর দেশ কারও উপর পরমাণু হামলা চালাবে না৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, এপি)