1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কাশ্মীরচিত্র - পণ্যের বদলে পণ্য

১৪ আগস্ট ২০১১

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার অন্যতম একটি উপলক্ষ্য কাশ্মীর৷ অনেকের কাছে পৃথিবীর ভূস্বর্গ বলে পরিচিত এই অঞ্চল নিয়ে দুটি দেশের মধ্যে কমপক্ষে তিন দফায় যুদ্ধ হয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/12GLj
কাশ্মীরছবি: DW

প্রায় আট বছর হলো সেখানে চলছে যুদ্ধবিরতি৷ ফলে সেখানকার জনগণ এখন কিছুটা নিশ্চিন্তে পাকা ভবন গড়ে তুলছে৷ জমিজমায়ও চাষবাস শুরু হয়েছে৷

কিন্তু দুই দেশের সৈন্যদের শান্তি নেই৷ কারণ তারা জানেন যুদ্ধবিরতি চললেও এটা এমন এক সংকট যে, যে কোন সময় সেটা আবার শুরু হয়ে যেতে পারে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসএফ'এর এক কর্মকর্তা বলছেন, ‘‘হয়তো মাথার চুল দাঁড়িয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই, কিন্তু তাই বলে এক মুহূর্তের জন্যও নিরাপত্তা বেষ্টনী থেকে সরে আসার উপায় নেই৷''

তাঁর এই কথার প্রমাণ পাওয়া যায় কিছুদিন আগের একটি ঘটনায়৷ গত জুন মাসে বিএসএফ'এর এক সেনা নিহত হন৷ ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে৷ কিন্তু পাকিস্তান সেটা অস্বীকার করে জানায়, এটা হয়তো বিএসএফ'এর অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে হতে পারে৷ কিন্তু তারপরও শুরু হয়ে যায় গোলাগুলি৷ চলে ঘন্টাখানেক৷

এধরনের ঘটনা কাশ্মীরে নিয়মিতই ঘটে চলেছে৷

Kaschmirkonflikt verschärft sich FLASH Galerie
কাশ্মীরে প্রশিক্ষণরত এক ভারতীয় সৈন্যছবি: picture-alliance / dpa

দুই দেশ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা কাশ্মীরের সীমান্তে বড় দুটি দরজা স্থাপন করেছে৷ ভারতের দরজার রং গাঢ় নীল আর পাকিস্তানেরটা গাঢ় সবুজ৷ শুধুমাত্র পতাকা বৈঠকের সময় এই দরজা দুটি খোলা হয়৷ আর মাঝেমধ্যে জাতিসংঘের সেনাদের সীমান্ত পাড়ি দিতে হলে খুলে দেয়া হয়৷ উল্লেখ্য, ১৯৪৭-৪৮ সালে কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রথম যুদ্ধের পরপরই জাতিসংঘ সেখানে সেনা পাঠায়৷

এদিকে ২০০৮ সালে দুই দেশের সরকার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সীমিত পর্যায়ে ব্যবসা বাণিজ্য শুরু করার অনুমতি দিয়েছে৷ বেচাবিক্রির জন্য মোট ২১টি পণ্যের নামও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে৷

তবে এটাকে বেচাবিক্রি না বলে লেনদেনই বলা ভাল৷ কেননা ভারতীয় বা পাকিস্তানি কোনো দেশেরই মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি নেই সেখানে৷ এমন কী তৃতীয় কোনো দেশের মুদ্রাও৷ কারণ দুই দেশই মনে করে, এভাবে মুদ্রা ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার মানে হচ্ছে কাশ্মীরের প্রতি দুই দেশের যে দাবি সেটাতে ছাড় দেয়া৷ ফলে পণ্যের বিনিময়ে পণ্য - এভাবেই চলতে হচ্ছে কাশ্মীরের মানুষকে৷ সে কারণে অনেক কাশ্মীরি মনে করেন তাঁরা দুই দেশের সেনাবাহিনীর চাপে পড়ে গেছেন৷

তবে এই যে সীমিত পর্যায়ে বাণিজ্যের শুরু সেটাকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন কাশ্মীরের শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতা শাকিল কালান্দার৷ তিনি বলছেন, এভাবে সীমান্ত খুলে দেয়ার মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবও অনেক৷

এদিকে, গত মাসে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আরও দুটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ ফলে আগে যেখানে সপ্তাহে মাত্র দুই দিন পণ্যের লেনদেন করা যেত এখন সেখানে করা যাবে চারদিন৷ আর ভ্রমণের অনুমতি পেতে আগে যেখানে লাগত তিন থেকে চারমাস এখন সেখানে লাগবে দেড় মাস৷

কাশ্মীরের এক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ আর্জিমান্দ হুসেইন তালিব বলছেন, চাইলে দুই দেশের সরকার কাশ্মীরের উন্নতির জন্য অনেক কিছু করতে পারে৷ কিন্তু তারা সেটা করছে না৷ বিশ্বাসের অভাবই এখানে বড়৷

প্রতিবেদন: জাহিদুল হক

সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়