কথা নয়, কাজে সাহস দেখান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
৯ জুলাই ২০২০মঙ্গলবারও তিনি তার কথার পুনরাবৃত্তি করেন৷ দুর্ঘটনার পর নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল৷ মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে৷ এই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম এটি হত্যাকাণ্ড এবং এখনও দেখলে আবারও বলবো হত্যাকাণ্ড৷ যেহেতু অবহেলাজনিত কারণে দুর্ঘটনার অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয়েছে, তদন্তে যদি হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই ৩০২ ধারায় (হত্যা মামলা) আসবে৷’’
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে প্রতিমন্ত্রীর আগ্রহ ফুটে উঠেছে৷ এমন শাস্তির ব্যবস্থা করে তিনি হয়ত অন্য লঞ্চ মালিক, চালক ও সংশ্লিষ্টদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন৷
সরকারি সূত্রের উল্লেখ করে দৈনিক যুগান্তর জানাচ্ছে, ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লঞ্চ দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৬৫৪ জন মারা গেছেন৷
এসব দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারায় নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের চাপ থাকে৷ ফলে দায়ীদের বেশিরভাগ পার পেয়ে যান৷
নৌচলাচল আইন তৈরিতেও এমন চাপ দেখা যাচ্ছে৷ ২০১৭ সালে প্রণীত এই আইনের খসড়ায় নৌযান দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে৷ কিন্তু মালিক-শ্রমিকদের চাপে শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে পাঁচ বছর ও জরিমানা তিন লাখ টাকা করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে দৈনিক যুগান্তর৷
এই খবর যদি সত্যি হয়, তাহলে মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে আমরা বলতে চাই, আইন তৈরিতে যদি মালিক-শ্রমিকদের চাপ আপনি মেনে নেন, তাহলে ভবিষ্যতে সব বিষয়েই আপনাকে আপোস করতে হবে৷ এবং তখন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য আপনিও দায়ী থাকবেন৷