1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এক মুখ্যমন্ত্রীই পুনর্জন্ম ঘটালেন ভারতীয় হকির

৬ আগস্ট ২০২১

ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরেই ভারতীয় হকির পুনর্জন্ম হলো। অলিম্পিক থেকে ব্রোঞ্জ আনলেন ছেলেরা। মেয়েরা পৌঁছলেন পদকের খুব কাছে।

https://p.dw.com/p/3ycxy
নবীন পট্টনায়ক
ছবি: Getty Images/AFP/Strdel

এক সময় তাকে নিয়ে হাসাহাসি হয়েছে। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছেন, কেন ওড়িশার মতো আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া একটি রাজ্য ভারতীয় হকির পিছনে অর্থ খরচ করবে? তিনি পিছিয়ে আসেননি। নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থেকেছেন। আর সে কারণেই অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয় করে ভারতীয় পুরুষ হকি দলের অধিনায়ক প্রথম ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ককে। ২০১৮ সালে পুরুষ এবং নারী দলকে স্পনসর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই ভারতীয় হকির পুনর্জন্ম হলো।

একসময় অর্থের অভাবে ভুগছিল ভারতের জাতীয় স্তরের হকি। স্পনসররা মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল। সকলেই ছুটছিল ক্রিকেটের পিছনে। অর্থের অভাবে খেলা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছিলেন প্লেয়াররা। সে সময় হাত বাড়িয়ে দেন নবীন। জানিয়ে দেন ২০১৮ থেকে ২০২৩ এই পাঁচ বছর ভারতীয় পুরুষ এবং নারী হকি দলের সমস্ত ব্যয় বহন করবে ওড়িশা সরকার। ভারতে এমন ঘটনা এই প্রথম। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা খেলায় অর্থ বিনিয়োগ করলেও কোনো রাজ্য কখনো তা করেনি। কিন্তু বরাবরই অন্য ভাবনার মানুষ নবীন সে কাজটিই করে ফেলেন। দুইটি জাতীয় দলের জন্য ২০ কোটি করে অর্থ বরাদ্দ করেন। সঙ্গে হকি দলের পরিকাঠামোর জন্য সব মিলিয়ে ১৫০ কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নেন।

দুন স্কুলের সাবেক ছাত্র নবীন নিজেও হকি খেলোয়াড় ছিলেন। গোলরক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন। তার কথায়, ওড়িশায় ঘরে ঘরে হকি খেলা হয়। ওড়িশার মানুষ হকি নিয়ে পাগল। কিন্তু বেশি দূর যাওয়ার সুযোগই কেউ পায় না। কারণ হকির সেই পরিকাঠামোই নেই। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সেই পরিকাঠামো তৈরি করে দিয়েছেন নবীন। কলিঙ্গ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এখন বিশ্বমানের ব্যবস্থা আছে। পরবর্তী ছেলেদের হকি বিশ্বকাপও ওড়িশার স্টেডিয়ামেই হবে। বিশ্বমানের সেই সেই স্টেডিয়ামও তৈরি।

বছরকয়েক আগেও যে হকি ধুঁকছিল, এখন সেই হকিতেই প্রাণ ফিরেছে। প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েরা ওড়িশায় এসে হকি খেলার সুযোগ পাচ্ছেন। এবারের জাতীয় নারী দলের প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড় চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে উঠে এসেছেন। ভেঙেছেন সামাজিক প্রতিরোধ। সবটাই সম্ভব হয়েছে ওড়িশা সরকারের সাহায্যে। বস্তুত, ভারতের পুরুষ এবং নারী দলে এখন তিনজন ওড়িশার খেলোয়াড় আছেন।

এক সময় যারা নবীনকে নিয়ে হেসেছিলেন, এখন তারাই ধন্য ধন্য করছেন। ছেলেরা ব্রোঞ্জ পাওয়ার পর নবীন টুইট করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

একই সঙ্গে আরো একটি কথা বলেছেন নবীন। হকি নিয়ে তার আরো স্বপ্ন আছে। এবারের অলিম্পিকে ভারতীয় পুরুষ এবং নারী দলের পারফর্ম্যান্স তার সূচনামাত্র। আরো অনেক পথ পেরোতে হবে। বস্তুত, এক সময় ভারতীয় হকি বিশ্ব শাসন করেছে। ধ্যানচাঁদ এখনো হকির বিশ্বে জীবন্ত কিংবদন্তী। কিন্তু গত কয়েকদশকে সেই হকি কার্যত মৃত্যুর পথে হাঁটছিল। এবারের অলিম্পিক প্রত্যক্ষভাবে তাকে আবার জীবনে ফিরিয়েছে। আর তার পিছনের নায়ক ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, আনন্দবাজার)