ইসরায়েল-হেজবোল্লাহের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েল ও হেজবোল্লাহের মধ্যে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। ইসরায়েলের সেনার হাতে তাদের দুইজন কম্যান্ডোর মৃত্যুর পর হেজবোল্লাহ ইসরায়েলে ১৬০টি রকেট ছোড়ে। গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। তারপর থেকে ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তে উত্তেজনা তুঙ্গে। হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল-সহ বেশ কিছু দেশ।

লেবাননের খুবই প্রভাবশালী গোষ্ঠী হলো হেজবোল্লাহ। লেবাননের রাজনীতি ও সমাজের উপর তাদের প্রভাব রয়েছে। হেজবোল্লাহ ইসরায়েলকে শত্রু বলে মনে করে। ১৯৯৬ ও ২০০৬ সালে হেজবোল্লাহ ও ইসরায়েল যুদ্ধ করেছে। একে অন্যের জায়গায় তারা আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণ করতে থাকে। এর ফলে প্রচুর মানুষ মারা গেছেন। উপরের ছবিতে হেজবোল্লাহের ছোড়া রকেটে ইসরায়েলে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি।

গতবছর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে ঢুকে আক্রমণ করার পর থেকে ইসরায়েলের সেনা ও হেজবোল্লাহের মধ্যে আক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে এবং তা আরো তীব্র হয়েছে। এর ফলে পুরোদস্তুর যুদ্ধের আশঙ্কাও বাড়ছে। চলতি মাসে করা সমীক্ষায় দেখা গেছে, ইসরায়েলের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, হেজবোল্লাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হওয়া উচিত। উপরের ছবিতে লেবানন সীমান্তে উড়ছে ইসরায়েলের এফ ১৫ যুদ্ধবিমান।

গাজায় লড়াই বন্ধ করার জন্য এখন আন্তর্জাতিক স্তরে চেষ্টা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে সায় দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এই অবস্থায় ইসরায়েল যদি গাজার পাশাপাশি আরেকটি ফ্রন্টে যুদ্ধ শুরু করে তাহলে তা তাদের পক্ষে কৌশলগতভাবে ভালো হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তাদের মতে, হেজবোল্লাহ হামাসের থেকে বেশি প্রশিক্ষিত ও তাদের হাতে আরো ভালো অস্ত্রশস্ত্র আছে।

বেশ কিছু বছর ধরে লেবাননে আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকট চলছে। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে লেবাননকে। ফলে হেজবোল্লাহ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ুক, তা লেবাননের মানুষ চাইবেন না।

লেবাননের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলের হামলার ফলে ৮৮জন সাধারণ মানুষ-সহ ৩৭৫ জন মারা গেছেন। আর ইসরায়েলের হিসাব, তাদের ১৮ জন সেনা ও ১০ জন সাধারণ মানুষ হেজবোল্লাহের আক্রমণে মারা গেছেন।

লেবাননে সীমান্তের কাছের এলাকা থেকে প্রায় এক লাখ মানুষ ঘরছাড়া। তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। ইসরায়েলের ৬০ হাজার মানুষও ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকছেন। সীমান্তের কাছের এলাকায় সমানে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ছে। ফলে সেখানে থাকা একেবারেই নিরাপদ নয়।