ইন্দোনেশিয়ায় চলছে মাদক ব্যবসায়ী হত্যা
১৯ আগস্ট ২০১৭জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০ জন সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে পুলিশ৷ গত বছর অবশ্য সংখ্যাটি আরো কম ছিল৷ পুরো ২০১৬-তে ১৮ জন এমন হত্যার শিকার হন৷
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, ফিলিপাইন্সের মতো ইন্দোনেশিয়াও ‘মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ'-এর নামে নির্বিচারে এদের হত্যা করছে৷ সংস্থাটির ইন্দোনেশিয়া অংশের পরিচালক উসমান হামিদ বলেছেন, ‘‘এটি খুবই উদ্বেগজনক৷ অবশ্যই মাদকের ব্যবহার রোধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে৷ কিন্তু দেখা মাত্রই গুলি করে হত্যা করা কোন সমাধান নয়৷ এটা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনই নয়, এই উদ্যোগ মাদক বিস্তারের মূল সমস্যার সমাধান করবে না৷''
মাদক পাচারের হাব হিসেবে পরিচিত রাজধানী জাকার্তা ও সুমাত্রার আশেপাশের অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷
শুধু আগস্টেই ছয় জন নিহত হয়েছেন৷ সর্বশেষ এক পঞ্চাশ বছরের প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করার পর হত্যা করা হয়৷ পুলিশ দাবি করেছে, গ্রেফতারের পর সেই ব্যক্তি পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করেছিল৷
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, সবগুলো হত্যাই ‘আত্মরক্ষার্থে' অথবা সন্দেহভাজনরা ‘পালিয়ে যাবার সময়' করতে হয়েছে৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, এসব হত্যার কোনটিরই নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়নি৷
এ বছর বেশ কয়েকবার ইন্দোনেশিয়ার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা মাদক সম্পর্কিত অপরাধ বন্ধে কঠোর হবার কথা বলেন৷ এরপরই হত্যাকাণ্ড বেড়ে যায়৷
জুলাইয়ের শেষ দিকে, প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, ‘‘কঠোর হতে হবে৷ বিশেষ করে বিদেশি মাদক ব্যবসায়ীরা এদেশে ঢুকে মাদক ব্যবসা করছে, তাদের গ্রেফতার করুন৷ কোন ছাড় নয়৷''
২০১৭ সালে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের মধ্যে তিন চীনা নাগরিক সহ অন্তত আট জন বিদেশি৷
‘‘বিদেশিদের টার্গেট করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক৷ এতে করে দেশি হোতারা পার পেয়ে যাচ্ছেন,'' বলেন অ্যামনেস্টি ইন্দোনেশিয়ার পরিচালক উসমান৷
এ মাসেই যেসব মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হবার সময় বাধা দেবে তাদের গুলি করার আদেশ দিয়েছেন পুলিশ প্রধান জেনারেল টিটো কার্নাভিয়ান৷ তিনি ফিলিপাইন্সের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের ‘ওয়ার অন ড্রাগস'-এর উদাহরণ দিয়ে বলেন, এভাবেই মাদক নির্মূল করতে হবে৷
ফিলিপাইন্সে এ যাবৎ কয়েক হাজার সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ৷ নির্বাচিত হবার পর প্রেসিডেন্ট দুতার্তে ২০১৬ সালের জুনে তাঁর ‘ওয়ার অন ড্রাগস' ঘোষণা করেন৷
এরপর থেকেই বেড়ে যায় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড৷ দেশটির পত্রপত্রিকায় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও থামেননি দুতার্তে৷
মাদক ব্যবসায়ী দেখলেই হত্যা করা হবে – এমন আইন কি আপনি সমর্থন করেন? জানান নীচের ঘরে৷