1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইটালিতে একই ছাদের নীচে ইনফ্লুয়েন্সারদের কর্মকাণ্ড

২৮ মে ২০২১

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগে মানুষের মনে প্রভাব ফেলার উৎসের অভাব নেই৷ তরুণ বয়সের ইনফ্লুয়েন্সারদের ক্ষমতাও বেড়ে চলেছে৷ বিশ্বের অনেক দেশের মতো ইটালিতেও ইনফ্লুয়েন্সারদের শক্তির সমন্বয়ের উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3u69Q
ছবি: DW

ইটালির প্রথম টিকটক কমিউনের সদস্যরা ২০২০ সালের অক্টোবর মাস থেকে একসঙ্গে থাকেন৷ মিলান শহরের কেন্দ্রস্থলে সুসজ্জিত ফ্ল্যাটই তাদের মঞ্চ৷ সোশাল মিডিয়ার কনটেন্ট তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য৷ বয়স মাত্র ২১ হওয়া সত্ত্বেও সিমোনে বার্লিনি সবার বড়৷ সিমোনে বলেন, ‘‘ডেফহাউস শুধু আট জন টিকটক শিল্পীর বাসা নয়, এই জায়গাটি আমাদের আরও শিক্ষা দিচ্ছে৷ আমরা জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে চাই, নিজেদের স্বপ্ন বাস্তব করতে চাই৷ যেমন অভিনেতা হওয়া আমার স্বপ্ন৷ প্রত্যেকের আলাদা স্বপ্ন রয়েছে, আইডিয়া রয়েছে৷ আমরা কিছু হাসিল করতে চাই৷''

বেশিরভাগ বাসিন্দাই ইতোমধ্যে টিকটক তারকা হয়ে উঠেছেন৷ সবারই দশ লাখেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে৷ প্রতিদিন তাঁরা ক্যামেরার সামনে নিজেদের দক্ষতার উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করেন৷ মার্শাল আর্ট ও অভিনয়ের প্রশিক্ষণও চলছে৷ সবাই মিলে ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ তৈরি করেন৷ প্রত্যেকেই অন্যের জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে নিজের পরিচিতি বাড়িয়ে নেন৷ ডেফহাউসের আর্ট ডিরেক্টর জন পেন্টাসুলিয়া বলেন, ‘‘ডেফহাউস গড়ে তোলার সময় টার্গেট গ্রুপ অর্থাৎ দর্শকদের পছন্দের ডিজাইন কনসেপ্ট আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ অন্যান্য ‘কোল্যাব হাউস' বা গোষ্ঠীর টিকটকার, ইনফ্লুয়েন্সর ও শিল্পীরা বিলাসবহুল ভিলায় বাস করেন৷ এর মাধ্যমে কিছুটা হামবড়া ভাব, দূরত্ব সৃষ্টি হয় যা আমরা এড়িয়ে চলতে চেয়েছিলাম৷''

লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের হাইপ-হাউস টিকটকারদের প্রথম ‘কোল্যাব হাউস' ছিল৷ ২০১৯ সালে সেটি গড়ে তোলা হয়েছিল৷ সাফল্যের সেই উদাহরণ ২০২০ সাল থেকে ইউরোপেও নকল করা হচ্ছে৷ ফ্রান্স ও ব্রিটেনে বেশ কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে৷

ইটালির টিকটক স্কুল!

২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ইটালিতেও এই ধারা পৌঁছে গেছে৷ ডেফহাউসে কে জায়গা পাবে, জুসেপে গ্রেকো সেই সিদ্ধান্ত নেন৷ তিনিও এক সময়ে সফল ইনফ্লুয়েন্সর ছিলেন৷ জুসেপে বলেন, ‘‘নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে প্রস্তুত এমন ইনফ্লুয়েন্সরদেরই বাছাই করা হয়৷ আমাদের কোর্সগুলিতে তারা নিজেদের মূল্যবোধ আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন৷ শিক্ষক হিসেবে নয়, তরুণ প্রজন্মের মানুষ হিসেবে তারা নিজেদের দর্শকদের কাছে সেই মূল্যবোধ পৌঁছে দেবেন৷ গভীর কৌতূহলের ভিত্তিতে তারা বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে এমন সুবিধা থেকে বঞ্চিত তরুণদের সমৃদ্ধ করছেন৷''

লুকা কাসাদেই ‘ওয়েব স্টার্স চ্যানেল' নামে ইটালির এক ডিজিটাল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা৷ ইনফ্লুয়েন্সরদের পরিচিতি বাড়াতে মার্কেটিং-এর কাজে দক্ষ এই কোম্পানি৷ তথাকথিত ‘জেনারেশন জেড'-এর প্রভাব ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে চলায় বহু কোম্পানি তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে মার্কেটিং-এর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে৷ লুকা মনে করেন, ‘‘এই হাউস নতুন এক মাধ্যম৷ সংবাদ পরিবেশনের নতুন এক উৎস এবং ইনফ্লুয়েন্সাররাই হলেন সাংবাদিক, যাদের কাছে নিজেদের প্রজন্মের কাছে পৌঁছানোর উপযুক্ত ভাষার সঠিক ‘কোড' ও সঠিক ব্যাকারণ রয়েছে৷ কোল্যাব-হাউসগুলি নতুন প্রকাশনা সংস্থার মতো৷ সেগুলির অর্থায়নের জন্য আমাদের বিভিন্ন ব্র্যান্ড, অর্থাৎ বিজ্ঞাপনের দিকে হাত বাড়াতে হচ্ছে৷''

বিজ্ঞাপন বাবদ আয়ের একটি অংশ ইনফ্লুয়েন্সারদের পকেটে যায়৷ কোনো কোনো দিন একশো পর্যন্ত কনটেন্ট তৈরি হয়৷ ফলে ব্যক্তিগত সময় প্রায় থাকে না বললেই চলে৷ তবে এই মুহূর্তে সেটা তেমন জরুরি নয়৷ তারা সবাই এখানে এসে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে চায়৷ ডেফহাউসের বাসিন্দা আলেসিয়া লান্সা বলেন, ‘‘ইনফ্লুয়েন্সরদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সম্পর্কে কথা বলতে এবং মূল্যবান ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট তৈরি করতে হয়৷ অর্থাৎ, আমাদের বড় দায়িত্ব রয়েছে৷ সেটা সত্যি ভালো৷ কারণ বাকি সমবয়সিদের তুলনায় আমরা আরও অনেক বেশি মানুষের নাগাল পাই৷ আমরা মূল্যবান বিষয়, আইডিয়া ও মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে পারি৷ এভাবে আমরা আমাদের ফলোয়ারদের সাহায্য করতে পারি৷''

ডেফহাউসে থাকার ভাড়া ইনফ্লুয়েন্সরদের গুনতে হয় না৷ তবে যে জীবনযাত্রাকে অফুরন্ত বড় পার্টি বলে মনে হয়, তা আসলে বেশ কঠিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম৷

ইয়োসেফিনে গ্যুন্টার/এসবি