ইকো ইসলাম সম্মেলন যে বার্তা দিলো

সম্মেলনে সবাইকে স্বাগত জানান ডয়চে ভেলে মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ৷ শান্তি আর পরিবেশ নিয়ে বিভিন্ন সংস্কৃতি, ধর্ম, আর দেশের মানুষের মধ্যে আলাপ, মতবিনিময়ের সুযোগ তৈরিতে ডয়চে ভেলের প্রতিশ্রুতির কথা জানান তিনি৷ তুলে ধরেন কান্তারা ও মুকালামা প্রকল্পের উদাহরণও৷

ডয়চে ভেলে এশিয়া বিভাগের প্রধান দেবারতি গুহ বলেন, শুধু পাকিস্তান নয় এই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোও ভুগছে পরিবেশগত সমস্যায়৷ অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার ধারাবাহিকতায় ইকো ইসলাম সম্মেলনের আয়োজন হয়েছে করাচিতে৷ পরবর্তী ইকো ইসলাম সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি৷

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধই পরিবেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে বলে মনে করেন করাচিতে নিযুক্ত জার্মানির কনসাল জেনারেল অয়গেন ভলফরাথ৷ পরিবেশ রক্ষায় শান্তি প্রতিষ্ঠা তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ তিনি বলেন, ধর্ম কাউকে পরিবেশ রক্ষা বা শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাধা দেয় না৷

সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পরিবেশ উপদেষ্টা মুর্তজা ওয়াহাবও স্বীকার করেছেন যে, পাকিস্তানে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয়নি৷ তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানে এটি একটি অবহেলিত বিষয়৷ কিন্তু এখন আমরা এটাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি৷ পরিবেশ রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব বৃদ্ধি করতে সম্প্রতি আমরা জলবায়ু পরিবর্তন নীতি অনুমোদন করেছি৷

পরিবেশবিদ তৌফিক পাশা বলেন, পাকিস্তানের শহরগুলোতে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে প্রতিদিন কয়েক কোটি লিটার পানি নষ্ট হয়৷ এমন অবস্থা চলতে থাকলে সেখানে অচিরেই মানুষ পানির অভাবে পড়বে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দেশটি ২২ কোটি মানুষের৷ যদি প্রতিজন এক ফোঁটা পানি সাশ্রয় করে, তাহলেও প্রায় ২২ কোটি ফোঁটা পানি প্রতিদিন সাশ্রয় সম্ভব৷’’

ইসলামী চিন্তাবিদ ড. মহসিন নাকভি পরিবেশ রক্ষায় কোরআনের শিক্ষা সবাইকে মনে করিয়ে দেন৷ বলেন, মুসলিমদের নিজেদের ক্ষতি করার যেমন অনুমতি দেয়া হয়নি, তেমনি তারা পরিবেশের ক্ষতিও করতে পারে না৷

খাইবার পাশতুনখোয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মোহাম্মদ আকমল সম্মেলনে পাকিস্তানের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব তুলে ধরেন৷ গবেষণা ও তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে জানান, দেশটিতে গ্রীষ্ম আর শীতের তীব্রতা প্রতিবছরই বাড়ছে৷

খ্রিস্টান থেকে শুরু করে প্রতিটি ধর্মই শান্তির কথা বলেছে৷ কোনো ধর্মেই মানুষ কিংবা প্রকৃতির ক্ষতি করার শিক্ষা দেয়া হয়নি, বলেন মানবাধিকারকর্মী পিটার জ্যাকব৷

পাকিস্তানের সেনেট সদস্য কৃষ্ণ কুমারি কোহলি দেশটির প্রথম সংখ্যালঘু প্রতিনিধি৷ আন্তঃধর্ম আলোচনার উপর জোর দেন তিনি৷ বলেন, এর মাধ্যমে পরিবেশগত সমস্যা সমাধানে সবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি সম্ভব হবে৷

ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ পাকিস্তানের এই প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, পরিবেশ-সমস্যা মানুষের সৃষ্টি হলেও এর ফলে পৃথিবীর অন্য প্রাণীদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে৷

পাঞ্জাবি সুফি কবিতার অনুবাদ করেন অধ্যাপক সাইদ আহমেদ৷ কিভাবে সুফি কবিতায় পরিবেশের বিষয় উঠে এসেছে তা তুলে ধরেন তিনি৷

ওয়াহিদ ফাউন্ডেশনের আপ্রিদা সনডাং ইন্দোনেশিয়া থেকে করাচি সম্মেলনে যোগ দেন৷ পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে জাকার্তায় এর আগের সম্মেলনটি কী প্রভাব রেখেছে সেটি তুলে ধরেন তিনি৷