1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেনের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বার্লিনে আলোচনা

২৪ অক্টোবর ২০২২

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করতে বার্লিনে সোমবার এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণে সেখানে মার্শাল প্ল্যানের মতো পরিকল্পনার রূপরেখা স্থির করা হবে৷

https://p.dw.com/p/4IaSY
Ukraine | Krieg | Angriffe auf Infrastruktur
ছবি: EPA-EFE/TELEGRAM/V ZELENSKIY OFFICIAL HA

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে সাবেক পশ্চিম জার্মানি তথা পশ্চিম ইউরোপের চমকপ্রদ উত্থানের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মার্শাল প্ল্যান' বড় ভূমিকা পালন করেছিল, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কোনো রাষ্ট্রের পুনরুত্থানের লক্ষ্যে এমন সার্বিক পরিকল্পনা ও বিশাল বিনিয়োগের এমন দৃষ্টান্তের তুলনা মেলা ভার৷ আজ রাশিয়ার হামলার ফলে ইউক্রেনের বিশাল ক্ষয়ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশ গড়ার সেই কর্মযজ্ঞের প্রসঙ্গ উঠে আসছে৷ এখনো যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও কোনো এক সময়ে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের বিষয়টি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়ে গেছে৷

সোমবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে সেই লক্ষ্যে জার্মান-ইউক্রেনিয়ান বিজনেস ফোরামের বৈঠক বসছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ও ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিয়াল সেই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন৷ রোববার জার্মানির ফ্রাংকফুর্টার আলগেমাইনে সাইটুং সংবাদপত্রে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের রূপরেখা তুলে ধরেছেন শলৎস ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন৷ তাদের মতে, একটা গোটা প্রজন্মকে সেই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে৷ অ্যামেরিকা যেভাবে ১৯৪৮ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত পশ্চিম ইউরোপের পুনর্গঠনের জন্য ‘মার্শাল প্ল্যান' কার্যকর করেছিল, ইউক্রেনের ক্ষেত্রেও তেমন বিশাল কর্মসূচির পক্ষে সওয়াল করেছেন তারা৷

শলৎস ও ফন ডেয়ার লাইয়েন মনে করেন, ইইউ-তে যোগদানের প্রার্থী হিসেবে ইউক্রেনের পাশে দাড়ানোর ক্ষেত্রে ইউরোপের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে৷ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের পথে অগ্রসর হবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন৷ দুই নেতা এ প্রসঙ্গে এক বৃহত্তর চিত্র তুলে ধরেন৷ তাদের মতে, ইউক্রেন আজ আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়মভিত্তিক কাঠামো রক্ষার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাষ্ট্রগুলির মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থানের ভিত্তি ও বিশ্বব্যাপি সমৃদ্ধির আদর্শকে ধরে রেখেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর ও ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট মনে করেন, ইউক্রেনকে সমর্থনের মাধ্যমে ইউরোপও এমনই এক ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখছে৷

ইউক্রেন-জার্মানি বিজনেস ফোরাম ‘রিবিল্ড ইউক্রেন' শিরোনামে ২০ পৃষ্ঠার এক রিপোর্টে সে দেশের পুনর্গঠনের রূপরেখা তুলে ধরেছে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিও রাশিয়ার চলমান হামলা সত্ত্বেও পুনর্গঠনের উপর জোর দিচ্ছেন৷ তবে এমন কঠিন কর্মযজ্ঞের লক্ষ্যে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ও গোটা বিশ্বের অংশগ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে বলে সব মহলই মোটামুটি একমত৷ জার্মানির যে লবি গোষ্ঠী ইউক্রেন-জার্মানি বিজনেস ফোরাম আয়োজন করছে, সেটি বিশেষ করে ইউরোপের প্রত্যেকটি দেশের উদ্দেশ্যে বিশেষ সমন্বয়ক নিয়োগের ডাক দিয়েছে৷ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে তাঁরা ইউক্রেনের সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করবেন, এমন প্রস্তাব আনা হয়েছে৷ ইউক্রেনের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে মার্শাল প্ল্যানের অনুকরণে বিশেষ করে জার্মানির কোম্পানিগুলিকে বিশেষ প্রণোদনার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ লবি গ্রুপের সভাপতি মিশায়েল হার্মস জার্মানির আরএনডি সংবাদ নেটওয়ার্ককে বলেন, ইউক্রেনের পুনর্গঠন তরান্বিত করতে কোম্পানিগুলির নির্ভরযোগ্য স্থানীয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা আবশ্যিক৷ সেইসঙ্গে দ্রুত টেন্ডার ডাকা ও অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং আর্থিক ও আইনি নিরাপত্তাও প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন৷ উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাংক, ইউক্রেনের সরকার ও ইউরোপীয় কমিশন সেপ্টেম্বর মাসে  এক যৌথ রিপোর্টে ইউক্রেনের পুনর্গঠনের সম্ভাব্য আর্থিক অংক হিসেবে ৩৫ হাজার কোটি ইউরো তুলে ধরেছে৷ তবে যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়লে সেই অংকও আরও বাড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)