1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধের দামামা?

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

পূর্ব ইউক্রেনের রুশ সীমান্তে স্বঘোষিত লুহানৎসক ও দোনেৎসক পিপলস রিপাবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সেনা সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/47ICK
অনিয়মিত সেনাদেরও বাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লুহানৎসক ও দোনেৎসক পিপলস রিপাবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা৷
অনিয়মিত সেনাদেরও বাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন লুহানৎসক ও দোনেৎসক পিপলস রিপাবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা৷ছবি: REUTERS/ALEXANDER ERMOCHENKO

অনিয়মিত সেনাদেরও বাহিনীতে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এই দুই অঞ্চলের নেতারা৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা অনেকদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে ইউক্রেনে হামলার উছিলা খুঁজছে রাশিয়া৷ লুহানৎসক ও দোনেৎসকের নেতাদের এই উদ্যোগকে এমন এক উছিলা হিসাবেই দেখছেন অনেকে

ইউক্রেনকে রুখে দেয়ার জন্য সক্ষম সকল বাসিন্দাকে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা৷ শনিবার প্রকাশ করা এক ভিডিও বার্তায় দোনেৎসক পিপলস রিপাবলিকের নেতা ডেনিস পুশিলিন বলেন, ‘‘আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি, মিলিটারি কমিসারিয়াতে যোগ দেয়ার জন্য৷ আজ আমরা সেনা সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে ডিক্রি জারি করেছি৷''

এরপর একই ধরনের ডিক্রি জারি করেছেন লুহানৎসক পিপলস রিপবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা লেওনিড পাসেশনিকও৷

গত কয়েকদিনে ইউক্রেন সরকার এবং রুশপন্থি বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে৷ শুক্রবার এই দুই স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র থেকে বাসিন্দাদের রাশিয়ায় সরিয়ে নেয়া শুরু হয়েছে৷ লুহানস্ক ও দোনেৎসক থেকে আসা মানুষদের রাশিয়ায় আশ্রয় ও খাবারের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন৷

পশ্চিমা নেতাদের প্রতিক্রিয়া

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফল ডের লায়েন জানিয়েছেন, ইউরোপ ‘এখনও ভালো কিছুর আশা করছে, তবে খারাপ কিছুর প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে৷'' মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান ইউক্রেন আক্রমণ করলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং তার মিত্র দেশগুলো সম্পূর্ণ প্রস্তুত৷

কনফারেন্সে দেয়া বক্তব্যে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ‘ইউরোপ আবার যুদ্ধের হুমকিতে পড়েছে' বলে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ এই হুমকি এখনও প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ ন্যাটোতে যোগ দেয়া বা না দেয়ার সিদ্ধান্ত কোনো দেশের নিজের নেয়া অধিকার রয়েছে, এ ব্যাপারে আবারও বার্লিনের অবস্থান দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করেন শলৎস

তবে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘অনুমাননির্ভর তথ্য়ের' ব্যাপারে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন৷ রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন ইউক্রেনে হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন মন্তব্যের পরই এ কথা বললেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘‘সংকটকালীন সময়ে সবচেয়ে অনুচিত কাজটি হচ্ছে অনুমান বা ধারণা থেকে কিছু করা৷''

একই সম্মেলনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়াকে ইউক্রেনে হামলার মতো ‘বিপর্যয়কর' সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহ্বান জানান৷ তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে এই প্রভাব পুরো বিশ্বজুড়ে অনুভব হবে৷ ‘‘মানুষের মনে এমন ধারণা তৈরি হবে যে আগ্রাসনেই ফল পাওয়া যায়, শক্তিপ্রয়োগই সঠিক পথ৷'' শেষ মুহূর্তেও শান্তি ও সংলাপের পথ খোলা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন জনসন৷

মিউনিখ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস৷ তিনি বলেছেন, ‘‘আপনার দেশের (ইউক্রেন) ওপর যেকোনো হুমকিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি৷'' জবাবে জেলেনস্কি বলেন, ‘‘কী ঘটছে তা আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারছি৷ এটা আমাদের দেশ৷ আমরা শান্তি চাই৷''

এদিকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান ইয়েনস স্টোলটেনব্যার্গ ‘এখনও সময় আছে' বলে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছেন৷ এক অপরকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ মিউনিখ কনফারেন্সে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘মস্কো ইতিহাসকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে, নিজেদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে৷'' ইউক্রেনে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হলে ‘ন্যাটোর কম উপস্থিতির বদলে রুশ সীমান্তে ন্যাটোর উপস্থিতি আরো বাড়বে' বলেও রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি৷

এডিকে/এআই (এএফপি, এপি, ইন্টারফ্যাক্স, রয়টার্স)