ম্যার্কেল-ওবামা সাক্ষাতের ফল
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫সোমবার ম্যার্কেল ও ওবামা যে বার্তা দিয়েছেন, তা হলো এই: ইউক্রেনে রাশিয়ার অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য মস্কোর উপর চাপ অব্যাহত রাখা হবে৷ অপরদিকে পূর্ব ইউক্রেনে আগের মতোই তীব্র যুদ্ধ চলেছে এবং ওবামা নিজেও এখন ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য স্বদেশে চাপের মুখে৷
ম্যার্কেলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিক সম্মেলনে ওবামা জানিয়ে দিয়েছেন: ‘‘বলতে কি, কূটনীতি যদি ব্যর্থ হয়, সে'ক্ষেত্রে আমি আমার ‘টিম'-কে সব রকমের বিকল্প বিবেচনা করে দেখতে বলেছি৷... প্রতিরক্ষামূলক মারণাস্ত্র প্রেরণ সেই সব বিকল্পের মধ্যে একটি৷''
ম্যার্কেল তাঁর অবস্থান ওয়াশিংটনেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন: পূর্ব ইউক্রেনের বেসামরিক বাসিন্দাদের কথা ভাবলে, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই, কেননা ‘‘রাজনীতিক হিসেবে সেটা আমাদের দায়িত্ব''৷ অপরদিকে সেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যে সফল না-ও হতে পারে, ম্যার্কেল সে'কথাও স্বীকার করেছেন৷
আপাতত দুনিয়ার চোখ বেলারুসের রাজধানী মিনস্ক-এর দিকে, কেননা সেখানে বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ-এর সঙ্গে শীর্ষবৈঠকে মিলিত হচ্ছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
অবশ্য জার্মান পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবারেই জানিয়ে দিয়েছে যে, সব পক্ষ নতুন ফরাসি-জার্মান শান্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে পূর্বাহ্নে একমত না হলে, বৈঠক হয়ত সংঘটিতই হবে না৷ চারটি দেশের কূটনীতিকরা বার্লিনে বসে সেই শান্তি পরিকল্পনার খুঁটিনাটি ঠিক করছেন৷ আজ মঙ্গলবার রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ওএসসিই (ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংগঠন) সম্বলিত ‘ইউক্রেন কন্ট্যাক্ট গ্রুপ' বা ইউক্রেন সংযোগ গোষ্ঠী মিনস্ক-এ রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথকভাবে মিলিত হচ্ছেন৷
অর্থাৎ আটঘাট বেঁধেই কাজ করা হচ্ছে, যদিও অসাফল্যের মূল্য কম হবে না৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার ব্রাসেলস-এ ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গের একটি বৈঠকে বলেছেন: ‘‘এটা সকলের কাছেই স্পষ্ট যে, এই সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে, সংঘাত বেড়ে একটা নতুন পর্যায়ে পৌঁছাবে৷'' সেই কারণেই পররাষ্ট্রমন্ত্রীবর্গ ১৯ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী বা রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধে এক পর্যায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এই সোমবার কার্যকরি না করে, আগামী সোমবার অবধি স্থগিত রেখেছেন৷
তবুও, মিনস্ক বৈঠক সংঘটিত হওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই: পুটিন স্বয়ং সাবধান করে দিয়েছেন যে, তার আগে ‘‘কয়েকটি সূত্রে'' ঐকমত্য অর্জিত হওয়া প্রয়োজন৷ আর প্রেসিডেন্ট ওবামা তাঁর ও ম্যার্কেলের সাক্ষাতের পর বলেছেন: ‘‘আমরা এ বিষয়ে পুরোপুরি একমত যে, একবিংশ শতাব্দী নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকতে পারে না, আমরা নিষ্ক্রিয় হয়ে দেখতে পারি না, ইউরোপের সীমান্তসমূহ কিভাবে বন্দুকের নল দিয়ে পাল্টে দেওয়া হচ্ছে৷''
এসি/ডিজি (ডিপিএ, এএফপি, এপি)