1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আয়কর কম হোক, চায় শিল্পমহল

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৩১ জানুয়ারি ২০২০

লোকের হাতে টাকা আসুক৷ তাই আয়করের হার কম করা হোক৷ কেন্দ্রীয় বাজেটে ভারতের শিল্পমহল ও বাজারের প্রত্যাশা এটাই৷

https://p.dw.com/p/3X54n
ছবি: Getty Images

সাধারণ চাকুরিজীবী তো বটেই, বিশেষজ্ঞ, শিল্পমহল সকলেই চাইছে, আয়করের হার কম করুক মোদী সরকার৷ তা হলে চাকুরিজীবীদের হাতে টাকা আসবে৷ তাঁরা তা খরচ করবেন৷ তার জেরে বাজার চাঙ্গা হবে৷ কারখানায় উৎপাদন বাড়বে৷ লোকের কর্মসংস্থান হবে৷ অর্থনীতির চাকা ঘুরবে৷ বণিকসভা ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান চেম্বারস অ্যান্ড কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ বা ফিকি সরকারের কাছে বাজেটের আগে যে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে, তাতে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ওপর কোনও আয়কর যেন না নেওয়া হয়৷ পাঁচ থেকে দশ লক্ষ পর্যন্ত বছরে ১০ শতাংশ হারে, ১০ থেকে ২০ লক্ষ পর্যন্ত  ২০ শতাংশ হারে ও তার বেশি আয় হলে ৩০ শতাংশ হারে আয়কর নেওয়া যেতে পারে৷ এখন বছরে আয় দশ লাখের ওপর হলেই ৩০ শতাংশ হারে আয়কর নেওয়া হয়৷

সিবিডিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুমিত দত্ত মজুমদারও মনে করেন, ''সরকারের উচিত আয়কর ছাড়ের পরিমাণ বাড়ানো৷'' ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''মধ্যবিত্তদের হাতে টাকা থাকতে হবে৷ তাই মধ্যবিত্তদের জিনিস কেনার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আয়করে অবশ্যই ছাড় দেওয়া উচিত৷ নিচের দিকে যে সব কর-হার আছে, সেগুলি বদল করা দরকার৷''

 অর্থনীতি বিশ্লেষক সুগত হাজরা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''ক্রেতাদের হাতে টাকা না থাকলে চাহিদা বাড়বে না৷ চাহিদা বাড়লে তবেই অর্থনীতি চাঙ্গা হবে এবং কর্মসংস্থান হবে৷ তাই ক্রেতাদের হাতে টাকা থাকতেই হবে৷ আয়করের হার কমানোর দাবি সে কারণেই এত জোরালোভাবে উঠছে৷  এছাড়া ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় কিছু সংস্কার করা জরুরি৷'' 

সরকার তা হলে আয় বাড়াবে কী করে? রাজস্বের হার বাড়বে কী করে? এ দিন সংসদে যে আর্থিক সমীক্ষা পেশ করা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, আগামী আর্থিক বছরে প্রবৃদ্ধির হার ছয় থেকে সাড়ে ছয় শতাংশ হতে পারে৷ বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে৷ সে জন্য আর্থিক ঘাটতি বেঁধে রাখা নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল হতে পারে৷

সুমিত দত্ত মজুমদারের মতে, ''সরকার বাজেটে জিএসটির হার কমাতে পারবে না৷ সেই অধিকার জিএসটি কাউন্সিলের হাতে দেওয়া আছে৷ তাদের সুপারিশ ছাড়া সরকার কিছু করতে পারবে না৷ পেট্রোলিয়াম সেক্টর জিএসটির বাইরে আছে৷ সেখানে এক্সাইজ বা আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারের আছে৷ তবে আশা করব, সরকার সেই পথে যাবে না৷ গেলে অর্থনীতির ওপর খুব খারাপ প্রভাব পড়বে৷ এমনিতেই লোকের হাতে টাকা নেই৷ পেট্রো পদার্থে শুল্ক বাড়ালে লোকের ক্রয়ক্ষমতায় আরও টান পড়বে৷ কাস্টমস শুল্ক বাড়ানোর সুযোগও খুব কম৷ সেখানে ডাব্লিউটিওর বাউন্ড রেট থাকে৷ মেক ইন ইন্ডিয়াকে রক্ষা করতে কাস্টমস বেশি বাড়ালে উল্টো বিপদ হতে পারে৷ তাই কর বহির্ভূত সম্পদ কী করে বাড়ানো যায় তা দেখতে হবে৷ সেক্ষেত্রে বিলগ্নীকরণ একটা পথ৷''

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বারের বাজেট সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ৷ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে, লোকের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে, দেশের শিল্পকে বাঁচাতে ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকারকে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিতেই হবে৷ শনিবার বোঝা যাবে, সরকার ঠিক কোন পথে গেল৷