আরব বসন্তের পর আরব সিনেমা
১৪ মে ২০১১এবং কান চলচ্চিত্র উৎসবেই ঘটছে সেই শুভসূচনা৷ নাগা এবং তাঁর ফরাসি ও লেবাননি সহযোগীরা আরব ফিল্মের জগতে অনেকটা ফরাসি ‘ওতোয়র', অর্থাৎ ‘রচিত' ফিল্মের কায়দায় যে সব চিন্তাশীল ছবি তৈরি হয়েছে, সেগুলিকে পরিবেশন করতে চান৷ যেমন মিশরের বিপ্লব নিয়ে তৈরি ছবি ‘আঠেরো দিন'; আলেক্সান্দ্রিয়া শহরের গোপন সঙ্গীত জগৎ নিয়ে তৈরি ছবি ‘মাইক্রোফোন'; কিংবা লেবাননে গৃহযুদ্ধ চলাকালীন এক মহিলার বিবাহ নিয়ে তৈরি ছবি ‘ছুটকো বুলেট'৷
তিন বছর আগে ‘টিম কায়রো' নাম দিয়ে মিশরের স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক এবং প্রযোজকদের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি হয়৷ সেখান থেকেই জন্ম নেয় নাগা'র বর্তমান কোম্পানি পাশা পিকচার্স৷ উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি কোম্পানি সৃষ্টি করা, যা আরব ফিল্মে আগ্রহীদের পক্ষে একটি পরিচিত ঠিকানা হয়ে উঠবে৷ বলতে কি, তথাকথিত আরব বসন্তের বিপ্লবের ঢেউ নাগা এবং তার সাথীদের প্রকল্পে প্রথমে আটকেই দেয়৷ কিন্তু পরে দেখা যায়, ঐ আরব বসন্তই সারা বিশ্বে আরব ফিল্ম সম্পর্কে আগ্রহের জোয়ার সৃষ্টি করেছে৷ নাগার ভাষায়: ‘‘মিশরের বিপ্লবের মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরেই যে আমরা প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করতে পারলাম, এবং কান'এ এখন তার শুভসূচনা করতে চলেছি – এটা যেন একটা স্বপ্নের মতো৷''
ষাটের দশকে মিশরি ফিল্মের রমরমা ছিল৷ এখনও মিশরে বছরে প্রায় ৮০টা ছবি তৈরি হয়ে থাকে৷ এ'সব ফিল্মের উপজীব্য হল মনোরঞ্জন, পারিবারিক নাটক এবং এ্যাকশন৷ এর অধিকাংশই হলিউডের নকলে৷ কিন্তু পাশা পিকচার্স চাইছে তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের নিজেদের ছবি, তাদের আধুনিক শিল্পকর্ম পেশ করতে৷ আরব জীবন নিয়ে ছবি খুঁজতে গেলে কোথায় যেতে হবে, আন্তর্জাতিক পরিবেশকরাও তার একটা ধারণা পাচ্ছেন৷ আরব বিপ্লব তৈরি করেছে আগ্রহ, সেই আগ্রহ পরিণত হবে চাহিদায়, সেই চাহিদা মোটানোর জন্য স্থায়ী কাঠামোর ব্যবস্থা করতে হবে৷ কান হল তার প্রথম পর্যায়৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন