1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরব দুনিয়ার তেল কি বিশ্বকে বাঁচাবে?

৮ মার্চ ২০২২

ইউক্রেনে হামলার কারণে রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব৷ কিন্তু রাশিয়ার তেল, গ্যাসের উপর ইউরোপের অধিক নির্ভরতার কারণে এই খাতকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে' রাখা হয়েছে বলে জানান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷

https://p.dw.com/p/48AtZ
USA Washington Ukraine Demo
ছবি: Michael Brochstein/Zumapress/picture alliance

অক্সফোর্ড ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি স্টাডিজ গত সপ্তাহে জানিয়েছে, অশোধিত তেলের দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় উৎপাদক রাশিয়া৷ ২০২১ সালে বিশ্বের মোট তেল উৎপাদনের ১৪ শতাংশ করেছে রাশিয়া৷ রাশিয়ার মোট তেল রপ্তানির ৬০ ভাগ যায় ইউরোপে৷ ৩৫ শতাংশ যায় এশিয়ায়৷

তেল কিনতে ইউরোপ রাশিয়াকে প্রতিদিন তিন হাজার ২৭০ কোটি টাকা দিচ্ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা৷

জার্মানির প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ৩৮ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে৷ তাই সোমবার এক বিবৃতিতে জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞার পক্ষে বার্লিন৷ কিন্তু ইউরোপে প্রতিদিনের জীবনযাপনে এখনও রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ ‘প্রয়োজন' বলে জানান তিনি৷ ‘‘(রাশিয়ার জ্বালানি ছাড়া) ইউরোপে ঘর গরম রাখতে, পরিবহণ ও শিল্প খাতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি এই মুহূর্তে অন্য জায়গা থেকে পাওয়া সম্ভব নয়,'' বলেন ওলাফ শলৎস৷

রাশিয়া থেকে রাতারাতি তেল ও গ্যাস আমদানি বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও সোমবার মন্তব্য করেছেন৷ নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেন, রাশিয়ার জ্বালানির উপর ইউরোপের নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে ‘সময় লাগবে'৷

বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনে রাশিয়া থেকে ক্রমান্বয়ে তেল, গ্যাস আমদানি কমানোর ঘোষণা আসতে পারে৷

আপাতত কি আরব বিশ্বের তেল সহায়ক হবে?

করোনা মহামারির প্রভাব কমতে থাকায় তেলের চাহিদা বাড়ছে৷ সে কারণে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই তেলের দাম বাড়ছে৷ রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র তেল আমদানি বন্ধ করার কথা ভাবছে - এই খবরে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১৪০ ডলার ছুঁয়েছে৷ ২০০৮ সালে এই তেলের দাম রেকর্ড ১৪৭.৫ ডলার হয়েছিল৷

রাশিয়ার তেল রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর দাম মোটামুটি পর্যায়ে রাখতে চাইলে অন্যান্য দেশের তেল উৎপাদন বাড়াতে হবে৷ বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্বে অশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় উৎপাদক সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষে সহজে তেল উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব৷

কিন্তু তাদের পক্ষে দ্রুত রাশিয়ার তেলের স্থান নেয়া কঠিন বলে মনে করেন কারেন ইয়ং৷ তিনি ওয়াশিংটনের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রাম অন ইকোনমিক্স অ্যাণ্ড এনার্জির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘উৎপাদন বাড়ানোর মানে এই নয় যে, ইউরোপে সরাসরি রপ্তানি বাড়া৷'' তেলের বাজার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া এত সহজ নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বুধবার তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংস্থা ওপেক ও তার সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে একটি বৈঠক হয়৷ সেখানে এপ্রিল মাসে প্রতিদিন চার লাখ ব্যারেল তেল বেশি উৎপাদন করতে একমত হয় তারা৷ অর্থাৎ মার্চ মাসের বাকি সময়টা তেল উৎপাদন বাড়ানোর কোনো ঘোষণা এই মুহূর্তে নেই৷

লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মিডল ইস্ট পলিসির রিসার্ট ফেলো হাসান আলহাসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ভূরাজনৈতিক ঘটনার ভিত্তিতে ওপেক উৎপাদনে পরিবর্তন আনে না৷ তারা শুধুমাত্রা মার্কেট ফান্ডামেন্টাল বিবেচনা করে পরিবর্তন আনে৷

তবে কারেন ইয়ং মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যদি সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহামেদ বিন সালমানকে সরাসরি ফোন করেন তাহলে হয়ত সৌদি আরব উৎপাদন বাড়াতে সম্মত হতে পারেন৷

এছাড়া ন্যাটো ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে কিংবা রাশিয়ার তেল রপ্তানির উপর সবাই নিষেধাজ্ঞা দিলে সৌদি আরব তার মত পরিবর্তন করতে পারে বলে মনে করেন হাসান আলহাসান৷

ক্যাথরিন শায়ের/জেডএইচ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য