1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আরও জটিল ও শক্তিশালী হতে পারে করোনা

২৩ এপ্রিল ২০২০

শক্তি বাড়াতে পারে করোনা। এখনই তা নির্মুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে জার্মানি, যুক্তরাজ্য টিকা তৈরিতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।

https://p.dw.com/p/3bHJ0
ছবি: Getty Images/AFP

করোনা ভাইরাস নির্মুল হওয়ার আপাতত কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং তা চেহারা বদলে আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বুধবার জেনিভায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। তাঁর বক্তব্য, ইউরোপে করোনা সংকট আপাতত অনেকটা কাটলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়ছে আফ্রিকা, দক্ষিণ অ্যামেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। এই সমস্ত অঞ্চলে মহামারির প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। শুধু তাই নয়, যে দেশ গুলি করোনা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছে, সেখানে ফের নতুন শক্তি নিয়ে করোনা ফিরে আসতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে দেশের মানুষকে আশ্বাস বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, অ্যামেরিকা করোনার প্রাথমিক ধাক্কা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। তাঁর বক্তব্য, গত দুই সপ্তাহ যে ভয়াবহতা দেখেছে অ্যামেরিকা, ভবিষ্যতে তা আর দেখতে হবে না। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের বক্তব্য, আর কিছু দিনের মধ্যে অ্যামেরিকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। করোনাকে বিদায় জানানো যাবে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, শীতে দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে অ্যামেরিকায় ফিরে আসতে পারে করোনা। এখনই এই ভাইরাস বিদায় নেবে, এটা ভাবলে ভুল হবে। বস্তুত, চরিত্র বদলে যে ভাইরাস ফিরে আসছে, চীন তা এর মধ্যেই বলতে শুরু করেছে। বেশ কয়েকদিন সংক্রমণমুক্ত থাকার পরে চীনে ফের করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা কম হলেও, ভাইরাস যে ফিরে এসেছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছে চীন প্রশাসন। নতুন পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ভাবে রোগীর শরীরে কোনও উপসর্গও দেখা যাচ্ছে না। ফুসফুসে তা অনেকটা সংক্রমিত হওয়ার পরে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন রোগী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, নতুন চেহারায় করোনা ভাইরাস আরও জটিল এবং শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

তবে বহু খারাপের মধ্যেও আশার আলো দেখা গিয়েছে। জার্মানি করোনার টিকা বা প্রতিষেধক তৈরিতে অনেকটাই অগ্রসর হয়েছে। পশুর শরীরে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা সাফল্য পাওয়ার পরে এ বার মানব শরীরে তার পরীক্ষা হবে বলে জানানো হয়েছে। শুধু জার্মানি নয়, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও ভ্যাকসিন তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার সেখানে ভ্যাকসিন মানব শরীরে প্রয়োগ করার কথা। সুইজারল্যান্ডেও বিজ্ঞানীরা এ বার তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন মানব শরীরে প্রয়োগ করবেন। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যদি সব ঠিক থাকে, তা হলে এ বছরের শেষের দিকে বাজারে করোনার টিকা ছেড়ে দেওয়া যাবে। তবে একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাফল্য এসে গিয়েছে বলে এখনই আনন্দ করার কারণ নেই। মানব শরীরে একাধিকবার টিকার পরীক্ষা হবে। একটি ক্ষেত্রে বিফল হলেই নতুন করে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু করতে হবে। ফলে আপাতত ধৈর্ষ ধরে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।

এ দিকে এই পরিস্থিতির মধ্যেই অ্যামেরিকা সেখানকার ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞকে পদ থেকে রাতারাতি সরিয়ে দিয়েছে। অভিযোগ, করোনার চিকিৎসায় ট্রাম্পের সঙ্গে এক মত হতে পারেননি তিনি। ভারত থেকে ক্লোরোকুইন আমদানি করে অ্যামেরিকায় তা করোনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছেন ট্রাম্প। কিন্তু বায়ো মেডিক্যাল অ্যাডভান্সড রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ডিরেক্টর রিক ব্রাইট এই চিকিৎসার বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ক্লোরোকুইন যে করোনা প্রতিরোধে কাজ করছে, তার কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। অন্য দিকে এই ওষুধ শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও ঘটাচ্ছে। এই অপরাধে রাতারাতি তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গোটা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৬ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮৮। মৃত্যু হয়েছে, এক লাখ ৮৪ হাজার ২৩৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন সাত লাখ ১৭ হাজার। শুধু অ্যামেরিকাতেই আক্রান্ত সাড়ে আট লাখ। মৃত্যু হয়েছে ৪৭ হাজার ৫০০ জনের। ইটালিতে মৃত ২৫ হাজার। স্পেনে ২১ হাজার ৭০০। ফ্রান্সে ২১ হাজার ৩০০। তবে গত তিন দিনে সর্বত্রই মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমেছে।

এসজি/জিএইচ (এপি, রয়টার্স)